সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলা এবং সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ২০ মে ধার্য করেছেন আদালতের বিচারক।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে মামলা দুটির পৃথক সাক্ষ্য গ্রহণ করেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার। এর আগে ৭ মে দুই মামলায় চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রণবীর রায় ও পরীক্ষিত বৈষ্ণব। কিবরিয়া হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আরজদ আলী, ফরিদ মিয়া, মর্তুজ আলী, খায়ের আলী ও আবুল হোসেন।

সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো.

আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় দুজন এবং শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় পাঁচজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওই হামলায় তাঁর ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত এবং আহত হন অন্তত ৭০ জন।

ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এর বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলা পুনঃতদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ থেকে বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় কিবরিয়ার পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

এ মামলায় আরিফুল হক ও হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র জি কে গৌছ, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৩ জন জামিনে রয়েছেন। অন্যদের মধ্যে সাতজন পলাতক। মামলায় ১৭১ জন সাক্ষী। এর মধ্যে ৭১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাইবাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গ্রেনেড বিস্ফোরণে যুবলীগের এক কর্মী ঘটনাস্থলে নিহত ও ২৯ জন আহত হন। অল্পের জন্য রক্ষা পান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই ঘটনায় দিরাই থানার এসআই হেলাল উদ্দিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১২৩ জন সাক্ষী রয়েছেন। এর মধ্যে ৫৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন স ক ষ য দ য় ছ ন হত য চ ষ ট ক বর য়

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুর ওপর প্রবল শক্তি দিয়ে আঘাত হানব: ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

গাজা সিটি দখলে ইসরায়েলের পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে। কিন্তু একে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না দেশটি। বরং নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানিয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার।

গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বনেতাদের সমালোচনা জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ‘যেসব দেশ আমাদের নিন্দা করছে এবং নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে, তারা ইসরায়েলের সংকল্প “দুর্বল” করতে পারবে না।’

কাৎজ আরও বলেন, ‘শত্রুরা আমাদের শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ মুষ্টি নিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসতে দেখতে পাবে, যা তাদের ওপর প্রবল শক্তি দিয়ে আঘাত হানবে।’

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনাকে পুরো গাজা উপত্যকা দখলের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে উপত্যকাটির প্রায় ৭৫ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েল। গাজা সিটি দখলে নেওয়া হলে উপত্যকাটির প্রায় ৮৫ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে চলে যাবে। তবে ইসরায়েল এবারই যে প্রথমবারের মতো গাজা দখল করতে যাচ্ছে, তা কিন্তু নয়।

এর আগে ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের আরব-ইসরায়েলে যুদ্ধের মাধ্যমে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম, সিরিয়ার গোলান মালভূমি এবং মিসরের সিনাই উপত্যকার সঙ্গে গাজাও দখল করেছিল ইসরায়েল। অন্যান্য অধিকৃত অঞ্চলের মতো গাজায় বসতি স্থাপন করা হয়েছিল। ৩৮ বছর পর ২০০৫ সালে গাজা থেকে বসতি ও সেনা প্রত্যাহার করে ইসরায়েল।

তবে ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজের ফেলো ফিলিস বেনিসের মতে, ২০০৫ সালে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও দখলদারি কখনো শেষ হয়নি; বরং দখলের ধরন বদলেছে মাত্র।

‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং প্যালেস্টাইন অ্যান্ড ইসরায়েল’ বইয়ের লেখক ফিলিস বেনিস বলেন, ২০০৫ সালে ইসরায়েলি সেনাদের গাজার রাস্তায় থাকার বদলে উপত্যকাটির চারপাশে মোতায়েন করা হয়। যেখানে একটি সশস্ত্র প্রাচীরও তৈরি করা হয়েছে।

ফিলিস আরও বলেন, সবকিছু আগের মতোই রয়ে গেছে। এখন যা নতুন তা হলো, বিপর্যস্ত ও অনাহারগ্রস্ত বেসামরিক জনগোষ্ঠীর ওপর সামরিক হামলা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই গাজা দখল নয়, পুনর্দখল করা হচ্ছে বলে মনে করেন ফিলিস বেনিস।

ইসরায়েলের গাজা সিটি দখলের প্রতিবাদে শনিবার জার্মানি, নরওয়ে, স্টকহোম, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, আর্জেন্টিনা এবং মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার জরুরি বৈঠক ডেকেছে আরব লীগ।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি হামলায় শনিবার গাজায় আরও অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১ জন নিহত হয়েছেন ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে। ১১ জন অনাহারে। গাজায় এ নিয়ে অনাহারে মোট ২১২ জন মারা গেছে, যাদের মধ্যে শিশু ৯৮টি। উপত্যকাটিতে শনিবার পর্যন্ত মোট নিহত দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৩৬৯।

আরও পড়ুনতীব্র অপুষ্টিতে ১২ হাজার শিশু২১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনগাজা সিটি ‘ছেড়ে যাব না’, ইসরায়েলি হুমকির মুখে বলছেন বাসিন্দারা৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শত্রুর ওপর প্রবল শক্তি দিয়ে আঘাত হানব: ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী