ভারতের গুজরাট রাজ্যের বিভিন্ন বস্তি থেকে তুলে এনে বাংলাদেশে পুশইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ বাংলাদেশি নাগরিককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপরদিকে ভারতীয় হিসেবে পরিচয় দেওয়া তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানা চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মিথুন সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও কোস্টগার্ড ৭৮ জনকে অবৈধভাবে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকার এক চরে ছেড়ে যায়। পরে বনবিভাগের সহায়তায় কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা দেয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশের নাগরিক, আর বাকি তিনজন নিজেদের ভারতীয় বলে দাবি করেছেন, তাদের কাছে কোনো বৈধ ভারতীয় পরিচয়পত্র নেই।

সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়া এসব ‘বাংলাভাষী’দের ওপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, সর্বনিম্ন দুই মাস থেকে শুরু করে তিন যুগ তারা ভারতে বসবাস করেছেন। গত ২৬ এপ্রিল ভোরে কয়েকশ পুলিশ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্য গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাটের বস্তি ঘেরাও করে তাদের তুলে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পাশের পুলিশ স্টেশনে নেওয়া হয়। ৫ মে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে পিছমোড়া করে দু’হাত বেঁধে বিমানে তোলা হয়। পরদিন জাহাজে তুলেই মারধর করা হয়। রাত ১২টার দিকে বঙ্গোপসাগরের চরে ফেলে দেওয়া হয়।

তারা জানান, প্রতিদিন সকালে একটি বিস্কুট ও অর্ধেক গ্লাস পানি দেওয়া হতো। বিকেলে এক পিস নষ্ট পাউরুটি দিত। শৌচাগারে যাওয়ার কথা বললেই পেটাত।

এক প্রশ্নের জবাবে লে.

কমান্ডার আবরার হাসান জানান, তিন তরুণ নিজেদের ভারতে জম্ম হয়েছে দাবি করায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। যদিও তাদের বিষয়ে বিশদ তদন্তসহ পরিবারের অপরাপর সদস্যদের তথ্য যাচাইয়ের পর কারাগারে ওই তরুণদের বিষয়ে পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
 
এদিকে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আসা পুতুল আক্তার কবিতা নামের এক নারী দাবি করেন তার ছোট ভাই মো. অনীক হোসেনকে ৭৮ জনের সঙ্গে জাহাজে উঠানো হয়। কিন্তু তার ভাই ছাড়া সকলেই লোকালয়ে ফিরতে সক্ষম হলেও তার ভাইয়ের কোন হদিস মিলছে না। 

পুতুল জানায়, তার ভাই গত ২২ এপ্রিল গুজরাটে থাকা তার ভাবীকে আনতে সেখানে গিয়েছিল।

পুশইন হওয়া এসব ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনী খাতুন প্রত্যেককে পানি ও খাবার স্যালাইন উপহার দেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প শইন পর ব র পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

কেন হাসবেন?

হাসি একটি শারীরিক ব্যায়াম। এটি এমন একটি শারীরিক প্রক্রিয়া যার সরাসরি প্রভাব পড়ে শরীরে ও মনে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোসহ হাসি আমাদের শরীরে ও মনে কি কি পরিবর্তন আনে সেই বিষয়ে জেনে নিন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
হাসি কর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোন কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধক কোষ এবং সংক্রমণ-প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি বৃদ্ধি করতে পারে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং অসুস্থতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। অল্প কয়েক মিনিট হাসলেও দারুণ উপকার পাওয়া যায়। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।

কার্ডিওভাসকুলার ফাংশন উন্নত করে
হাসি রক্তনালীর কার্যকারিতা উন্নত করে এবং রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে। যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। হাসার সময় হৃদস্পন্দন অল্প সময়ের জন্য বৃদ্ধি পায়, তারপরে পেশী শিথিল হয় এবং রক্তচাপ হ্রাস পায়। এতে শরীরে  রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।

আরো পড়ুন:

নিয়মিত করলা খেলে যেসব উপকার পাবেন

স্বাস্থ্যের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

ব্যথা কমায়
হাসি এন্ডোরফিনের নিঃসরণ বাড়ায়।  ফলে শরীর প্রাকৃতিক ভাবেই ভালো অনুভব করে। এন্ডোরফিন কেবল আপনার মেজাজ উন্নত করে না বরং প্রাকৃতিক ভাবে শরীরের ব্যথাও কমায়। নিয়মিত হাসলে সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়। পেশীগুলোকে শিথিল করে। 

ফুসফুস ভালো রাখে
হাসলে ফুসফুস উদ্দীপিত হয়। সহজে অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। এবং এ সময় ফুসফুস থেকে পুরানো বাতাস বেরিয়ে যায়। সঙ্গে মানসিক চাপও কমে। একটি প্রাণবন্ত হাসি আপনাকে অক্সিজেন গ্রহণে সহায়তা করতে পারে এবং শ্বাসনালীকে আরও ভালো রাখতে পারে। 

হাসি একটি শারীরিক ব্যায়াম
হাসলে শারীরিক কার্যকলাপের সঙ্গে সংযুক্ত সিস্টেমগুলোর বেশিরভাগই উদ্দীপিত হয়। যেমন—পেটের পেশী, কাঁধ এবং ডায়াফ্রাম। এমনকি আপনার হৃদস্পন্দনও বাড়ে। সুতরাং হাসি  একটি কার্যকর ব্যায়াম হিসেবে কাজ করে। 

সুতরাং হাসুন, আর সুস্থ থাকার একটি কার্যকর উপায় পেয়ে যান।

সূত্র: হেলথলাইন

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ