৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর, ৩ জন কারাগারে
Published: 13th, May 2025 GMT
ভারতের গুজরাট রাজ্যের বিভিন্ন বস্তি থেকে তুলে এনে বাংলাদেশে পুশইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ বাংলাদেশি নাগরিককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপরদিকে ভারতীয় হিসেবে পরিচয় দেওয়া তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানা চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মিথুন সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও কোস্টগার্ড ৭৮ জনকে অবৈধভাবে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকার এক চরে ছেড়ে যায়। পরে বনবিভাগের সহায়তায় কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা দেয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশের নাগরিক, আর বাকি তিনজন নিজেদের ভারতীয় বলে দাবি করেছেন, তাদের কাছে কোনো বৈধ ভারতীয় পরিচয়পত্র নেই।
সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়া এসব ‘বাংলাভাষী’দের ওপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরা হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, সর্বনিম্ন দুই মাস থেকে শুরু করে তিন যুগ তারা ভারতে বসবাস করেছেন। গত ২৬ এপ্রিল ভোরে কয়েকশ পুলিশ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্য গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাটের বস্তি ঘেরাও করে তাদের তুলে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পাশের পুলিশ স্টেশনে নেওয়া হয়। ৫ মে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে পিছমোড়া করে দু’হাত বেঁধে বিমানে তোলা হয়। পরদিন জাহাজে তুলেই মারধর করা হয়। রাত ১২টার দিকে বঙ্গোপসাগরের চরে ফেলে দেওয়া হয়।
তারা জানান, প্রতিদিন সকালে একটি বিস্কুট ও অর্ধেক গ্লাস পানি দেওয়া হতো। বিকেলে এক পিস নষ্ট পাউরুটি দিত। শৌচাগারে যাওয়ার কথা বললেই পেটাত।
এক প্রশ্নের জবাবে লে.
এদিকে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আসা পুতুল আক্তার কবিতা নামের এক নারী দাবি করেন তার ছোট ভাই মো. অনীক হোসেনকে ৭৮ জনের সঙ্গে জাহাজে উঠানো হয়। কিন্তু তার ভাই ছাড়া সকলেই লোকালয়ে ফিরতে সক্ষম হলেও তার ভাইয়ের কোন হদিস মিলছে না।
পুতুল জানায়, তার ভাই গত ২২ এপ্রিল গুজরাটে থাকা তার ভাবীকে আনতে সেখানে গিয়েছিল।
পুশইন হওয়া এসব ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনী খাতুন প্রত্যেককে পানি ও খাবার স্যালাইন উপহার দেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প শইন পর ব র পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
রায় ঘোষণার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার: রিজওয়ানা হাসান
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার সকালে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ‘দ্য সোল অব জুট’ নামে এক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
দেশের নাশকতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বিদেশ থেকে কারা ইনফ্লুয়েন্স করেছে, দেশ থেকে কারা ওই বাসটাকে আগুন দেওয়ার জন্য ইনফ্লুয়েন্স করেছে, নামগুলো আপনারা জানেন। তদন্ত করে সরকার যে নামগুলো পাচ্ছে, সে নামগুলোই দিচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। এরপর কারও যদি মনে হয় তাঁর কাছে আরও তথ্য আছে, তাহলে সরকারকে জানান।’
সহিংসতা নিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকার বিষয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, সহিংসতা, ককটেল মারা এসব ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও আরও একটু দায়িত্বশীল হওয়ার সুযোগ আছে। গণমাধ্যম চাইলে আতঙ্কটা ছড়াতে পারে; আবার যারা এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত, তাদের নিন্দা করে সহিংসতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারে।
গতকাল রোববার রাতে রিজওয়ানা হাসানের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘আপনার বাসায় ককটেল মারবে আর আপনি নিশ্চিন্ত থাকবেন, তা তো হতে পারে না। তবে আতঙ্কিত হওয়া এক জিনিস, আর নিশ্চিন্ত না থাকা আরেক জিনিস। এবং সতর্ক হওয়া আরেক ব্যাপার। কথা হচ্ছে যে এ রকম একটা শান্ত পরিবেশে যে এ রকম অস্থিতিশীলতা গড়ে তোলা হচ্ছে, এটার ব্যাপারে জনমত গড়ে তুলতে হবে। আপনারা এগিয়ে আসুন। সরকারের যা করার সরকার তা করবে।’
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘যাতে সহিংসতা বৃদ্ধি না পায়, সে জন্য গণমাধ্যম এগিয়ে আসুক। যাতে সহিংসতা বৃদ্ধি না পায় সে বার্তাটা যেন গণমাধ্যম প্রচার করে।’
গতকাল রাত ৯টার দিকে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোড এলাকায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।