২ ভারতীয়কে বাংলাদেশি সাজিয়ে জমি বিক্রি
Published: 13th, May 2025 GMT
বাগেরহাটে জালিয়াতির মাধ্যমে ভারতে দুই নাগিরককে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার তিনজনের বিরুদ্ধে দুদক বাগেরহাট কার্যালয়ে মামলা করেছেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান।
আসামিরা হলেন– বাগেরহাট সদর উপজেলার তৎকালীন নির্বাচন কর্মকর্তা ও বর্তমান বরিশালের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার হাওলাদার, চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন ও চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্নি গ্রামের বাসিন্দা সাবেক সেনা সদস্য মোশাররফ হোসেন মোল্লা।
এজাহারে বলা হয়, বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস না করা সত্ত্বেও শ্রী ফনিভূষণ ওরফে মনি মণ্ডল এবং প্রতুল চন্দ্র মণ্ডল নামে দুই ভাইকে চিতলমারী থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়। যা ব্যবহার করে একজনকে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দেওয়া হয়। তারা ভারতীয় নাগরিক হলেও আড়ুয়াবর্নি গ্রামে থাকা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রির জন্য স্থানীয় মোশাররফ হোসেন মোল্লা তাদের দেশে নিয়ে আসেন এবং ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করান।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওই আবেদনের নির্ধারিত ফরমে ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি ফনিভূষণ মণ্ডল এবং ১৯৫৩ সালের ৪ এপ্রিল প্রতুল মণ্ডলের জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়। আবেদনের ৪ দিন পর তাদের জন্মনিবন্ধন সনদ দেন চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন। এরপর ওই জন্মনিবন্ধন দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন তারা। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে তার নামে জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করা হয়।
ফনিভূষণ ওরফে মনি মণ্ডলের জাতীয় পরিচয়পত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ফনিভূষণ মণ্ডলের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি। কিন্তু তার জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয় ২০১৭ সালে। যা তার জন্মের ৬৯ বছর পর। ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার কারণ হিসেবে নিবন্ধন ফরমের ৩২ নম্বর ঘরে উল্লেখ করা হয়েছে, চিকিৎসার জন্য এলাকার বাইরে ছিলেন তিনি। তার বাবার নাম মৃত শশধর মণ্ডল দেওয়া হলেও তৈরি করা জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে মৃত রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল। ভোটার নিবন্ধন ফরমের ৭ নম্বর ঘরে বলা হয়েছে, তার বাবার মৃত্যু হয়েছে ১৯৪৪ সালে। সে অনুযায়ী বাবার মৃত্যুর ৪ বছর পরে ফনিভূষণের জন্ম। ফরমে সুষেণ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার করে এবং তার স্বাক্ষর জাল করে শনাক্তকারী হিসেবে দেখানো হয়। আর ফনিভূষণ মণ্ডলের বর্তমান ঠিকানা দেওয়া হয় বাগেরহাট পৌরসভার সোনাতলা গ্রাম। তবে তদন্তকালে দুদক ওই এলাকায় সেই ব্যক্তির অস্তিত্ব পায়নি। এমন আরও অনেক জালিয়াতি হয়েছে এবং ওই জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ফনিভূষণকে দাতা দেখিয়ে সম্পত্তি বিক্রি করা হয়েছে।
বাগেরহাট দুদক কার্যালয়ের উপপরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, পারস্পরিক যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগ দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব গ রহ ট এনআইড ব যবহ র কর র জন য র জন ম
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুর নির্বাচন অফিসে রোহিঙ্গা আটক
শেরপুর ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে গিয়ে এক রোহিঙ্গা আটক হয়েছেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আটকের পর তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।
আটক ব্যক্তির নাম মো. আমিন। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তার বাবার নাম জাহিদ হোসেন।
আরো পড়ুন:
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থায়ী প্রত্যাবাসনে ‘বাস্তব পদক্ষেপ’ চায় ওআইসি
৪০ দেশের প্রতিনিধিদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আলম মিয়া নাম ব্যবহার করে উখিয়ার টাংহালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক ব্যক্তি এনআইডি করতে শেরপুর জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেন। সেখানে তিনি বাবার নাম আলী হোসেন উল্লেখ করেন এবং শেরপুর পৌরসভার কসবা মোল্লাপাড়া ও শিবুত্তর এলাকার বাসিন্দা হিসেবে দাবি করেন। কথাবার্তা ও নথিপত্র যাচাইয়ের সময় সন্দেহ হলে কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় ওই ব্যক্তি নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন।
শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “তার কাগজপত্র দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। তার ভাষাগত বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন।”
আটক মো. আমিন বলেন, “আমি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি ক্যাম্পে থাকি। এ দেশের নাগরিক হওয়ার আশায় ভোটার আইডি কার্ড করতে শেরপুরে এসেছিলাম। কাজের জন্য পরিচয়পত্র পেলে সুবিধা হবে ভেবেই আলম নামে আবেদন করেছি।”
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, “রোহিঙ্গা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে স্থানীয় কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা চলমান।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ