জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০২২ সালের ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষার সাময়িক সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট বিতরণ শুরু হয়েছে ৩ জুলাই, চলবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল করিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

নিচে উল্লিখিত আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট কলেজের প্রাধিকার পাওয়া প্রতিনিধির মাধ্যমে সাময়িক সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট গ্রহণ করতে হবে।

নির্ধারিত বিভাগ ও জেলার নাম—

১.

রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্র—রাজশাহী, পাবনা, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা, নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ভেড়ামারা সরকারি কলেজ এবং কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর কলেজ।

বিতরণের স্থান ও ঠিকানা: রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্র, বাড়ি নম্বর ৩৫৪, বালিয়া পুকুর বড় বটতলা, ঘোড়ামারা, রাজশাহী। ফোন: ০৭২১-৭৬২১৪১।

২. বগুড়া আঞ্চলিক কেন্দ্র—সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলা।

বিতরণের স্থান ও ঠিকানা: বগুড়া আঞ্চলিক কেন্দ্র, মাটিঢালীমোড় বারপুর (ডায়াবেটিক) হাসপাতালসংলগ্ন, বগুড়া। ফোন: ০১৯১২-৪০৮৫৭০।

৩. সিলেট আঞ্চলিক কেন্দ্র—সিলেট জেলা, সুনামগঞ্জ জেলা, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, রাজানগর, জুরি ও কুলাউড়া উপজেলা।

বিতরণের স্থান ও ঠিকানা: সিলেট আঞ্চলিক কেন্দ্র, আহাদ ভিলা, পাঠানটোলা পয়েন্ট, সিলেট। ফোন: ০৮২১-৭২৯১০২।

৪. হবিগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্র—হবিগঞ্জ জেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলা, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা; নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা।

বিতরণের স্থান ও ঠিকানা: হবিগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্র, হোল্ডিং নম্বর ৩৩, ওয়ার্ড নম্বর ২, দাউদনগর বাজার, শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ। ফোন ০১৭১৬–৫৬৩০৩৭,০১৭৭৭–৭৮৯০৪৯।

৫. ঢাকা বিভাগ—ঢাকা মহানগর, ময়মনসিংহ বিভাগ, কুমিল্লা জেলা, চাঁদপুর জেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা।

বিতরণের স্থান ও ঠিকানা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, গাজীপুর। ফোন: ০২-৯৯৬৬৯১৫৬৭।

দরকারি তথ্য—

১। প্রাধিকার পাওয়া প্রতিনিধিকে সংশ্লিষ্ট কলেজের পক্ষে সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট গুণে বুঝে নিতে হবে।

২। সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট কম/বেশি/ডাবল প্রিন্ট হলে, এক কলেজের সনদ–ট্রান্সক্রিপ্ট ভুলবশত অন্য কলেজে চলে গেলে, এ ছাড়া বিতরণ করা সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট–সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের সমস্যা পরিলক্ষিত হলে তা উল্লেখিত বিতরণের তারিখ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর পত্র বা প্রতিনিধি মারফত অবগত করে সমাধান করতে হবে। উক্ত সময়ের পর কোনো ধরনের অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না। এ–সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

* বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব তরণ র স থ ন ও ঠ ক ন পর ক ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘হেনী কলেজের টেঁয়া লই চুদুরবুদুর চইলত নঅ’ স্লোগানটি কেন আবার প্রাসঙ্গিক

ফেনী কলেজের ফটক দিয়ে ঢুকতেই লম্বা মাঠ। মাঠের একদিকে অনার্স ভবনের পাশে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। সম্প্রতি কলেজটির শিক্ষার্থীদের ফি বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-অসন্তোষের বিষয়টি জানতেই কলেজে আসা। আড্ডারত শিক্ষার্থীদের কাছে ফি বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করলে একজন বললেন, ‘আমাদের কলেজের একটি স্লোগান নিয়ে সবাই হাসাহাসি করে। কিন্তু এখন এটাই আমাদের বাস্তবতা। দীর্ঘ দিনের লুটপাটের কারণে কলেজের ফান্ডের(তহবিল) অবস্থা খারাপ। তাই বাড়তি ফি চাপানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর।’

‘হেনী কলেজের টেঁয়া লই চুদুরবুদুর চইলতো নঅ’— জনপ্রিয় এই স্লোগানটি কথা শেষে যোগ করে কিছুক্ষণ হাসলেন মুহাইমিন তাজিম নামের ওই তরুণ। কলেজের গণিত বিভাগের এই শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কও। তাঁর কথার সঙ্গে একমত হলেন সেখানে বসে থাকা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের কথা, ফেনী কলেজের নানা অনিয়ম দুর্নীতি সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় স্লোগানটি আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর ফেনী কলেজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ হয়। তাঁরা জানালেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা খাতে দুর্নীতির কারণে বর্তমান শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি ফি এর বোঝা চেপেছে। লুটপাটের কারণে কলেজের তহবিল সংকট পূরণ করতে বর্তমান অধ্যক্ষ শিক্ষার্থী প্রতি নতুন করে ১০০ টাকা ফি বাড়িয়েছেন।

কলেজটিতে চলতি বছর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার্থীর শাখায় ছাত্রদের ২ হাজার ৬৮০ টাকা, ছাত্রীদের ২ হাজার ৫৬০ টাকা এবং বিজ্ঞান শাখার ছাত্রদের ২ হাজার ৭৮০ ও ছাত্রীদের ২ হাজার ৬৬০ টাকা হারে ফি দিয়ে ভর্তি হতে হয়েছে। বিগত বছরের এই ফি ১০০ টাকা বেশি।

ফি বৃদ্ধির যে কারণ দেখাল কর্তৃপক্ষ

চলতি বছরের ১০ এপ্রিল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ফি বৃদ্ধি করা হয়। সভায় ‘অত্যাবশ্যকীয় নিরাপত্তা ফান্ড’ ৬৫০ টাকা স্থলে ৭৫০ টাকা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, কলেজের কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেতন ও বোনাস মিলিয়ে কর্মচারীদের পেছনে বছরে ব্যয় হয় ৭১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এই খাতে নতুন আরও আটজন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ায় বছর শেষে খরচ দাঁড়াচ্ছে ৭৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন-বোনাস ছাড়াও এই খাত থেকে টাকা ব্যয় করা হয় ভূমিসংক্রান্ত মামলার উকিলের ফি, কলেজ আঙিনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়। গড়ে বছরে ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু এই খাতে শিক্ষার্থীদের থেকে বছরে আদায় হচ্ছে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

ফেনী কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবু হেনা আবদুল আউয়ালের সঙ্গে কলেজের নানা অনিয়ম নিয়ে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ফেনী কলেজ নিয়ে জনপ্রিয় হওয়া স্লোগানের একটা ইতিহাস আছে। ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় স্থানান্তরিত হয়। সেখানকার স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সঙ্গে কলেজের অর্থ নিয়ে বিবাদ তৈরি হলে ছাত্ররা এমন স্লোগান দেয়। আর্থিক অনিয়মের প্রতিবাদ থেকেই এই স্লোগানের জন্ম। এই পরিস্থিতিতে স্লোগানটি ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

উৎসব-অনুষ্ঠানের অতিরিক্ত ব্যয়

কলেজের বিবিধ খাতের টাকা থেকে উৎসব ও অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিধান থাকলেও নিরাপত্তা খাত থেকে টাকা নিয়ে উৎসবে খরচ করা হয়েছে। কলেজের নথিপত্র বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ব্যয় করা হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৮ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ লাখ ২০ হাজার ৩০৪ টাকা। তবে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ব্যয় কমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় হয় ৪৮ হাজার ১৫৪ টাকা।

২০২৪ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ব্যয় হয় ৪৮ হাজার ১৫৪ টাকা। তার আগের দুই বছর ২০২৩ সালে হয় ১ লাখ ২৯ হাজার ৯০৬ টাকা। ২০২২ সালে হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৮১১ টাকা।

বিগত কয়েক বছরে সরকারি দিবস কিংবা উৎসবে অস্বাভাবিক এমন খরচের পেছনে দুর্নীতিই মূল কারণ বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন। কলেজের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস কিংবা শহীদ দিবস দিবসগুলো সরকারি ছুটি হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তেমন থাকত না। রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীসহ সব মিলিয়ে গড়ে উপস্থিতি থাকত দুই শতাধিক। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য খরচ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক বলে মনে করেন তাঁরা।

শতবর্ষ পুরোনো এই কলেজে বিভিন্ন বিভাগে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। ফি বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়মনসিংহ বোর্ডে চার বছরে সর্বনিম্ন পাস, ১৫ কলেজে শতভাগ ফেল
  • দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কম, ইংরেজিতে অকৃতকার্য বেশি
  • ওডেসার মেয়রের ইউক্রেনীয় নাগরিকত্ব বাতিল করলেন জেলেনস্কি
  • ‘হেনী কলেজের টেঁয়া লই চুদুরবুদুর চইলত নঅ’ স্লোগানটি কেন আবার প্রাসঙ্গিক
  • বক্স অফিসে ‘কানতারা টু’ ঝড়: কে কত টাকা পারিশ্রমিক নিলেন?