জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেগম রওশন এরশাদের ময়মনসিংহ নগরীর বাসভবন ‘সুন্দর মহল’-এ হামলা চালিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর গঙ্গাদাস গুহ রোডে অবস্থিত এই বাসভবনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা রওশন এরশাদের বাড়িটিকে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবিতে স্লোগান দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রওশন এরশাদের ‘সুন্দর মহল’ একটি ‘কুটুমবাড়ী’ নামের রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়। এরপর থেকে রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ বাড়িটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে রেস্টুরেন্ট নির্মাণের কাজ শুরু করে।

মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল আউয়াল সেলিম বলেন, সুন্দর মহলের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে রওশন এরশাদের মায়ের স্মৃতি বিজড়িত কবরটি রয়েছে। অনেকে এখন কারণে-অকারণে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। দলের অবস্থা এখন ভালো না। রওশন এরশাদের নির্দেশে বাড়িতে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পরিবারের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি রেস্টুরেন্টের কাছে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ১২ বছরের জন্য তারা এখানে থাকতে পারবেন। মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ টাকা।

আজ দুপুর ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা একটি মিছিল নিয়ে ‘সুন্দর মহল’-এ যায় এবং রেস্টুরেন্টের নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। এ সময় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা নির্মাণাধীন রেস্টুরেন্টের দেয়াল এবং বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে বেশ কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।

এই ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ফুয়াদ খান, ওয়ালিউল্লাহ ওলি, ছাত্রনেতা জি.

কে ওমর, আব্দুল আলীমসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২৩ এপ্রিল দুপুর ১২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে ‘সুন্দর মহল’কে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবি করেছে তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও সাধারণ জনগণের ব্যানারে এক মানববন্ধনে বক্তারা ঘোষণা দেন, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ফ্যাসিস্টদের সহচর রওশন এরশাদের সুন্দর মহলকে বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তারা এ ভবনটিকে রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দিয়ে অন্যায় কাজ করেছে।

‘সুন্দর মহল’-এ নির্মাণাধীন রেস্টুরেন্ট ভাঙচুরের বিষয়ে ‘কুটুমবাড়ী’ রেস্টুরেন্টের পরিচালক বজলুর রহমান মিন্টুর বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়মনস হ রওশন এরশ দ রওশন এরশ দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুগলি ইউনিয়নের নয়াপাগা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মিলন মিয়া (২১)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় অটোরিকশাচালক। এর আগে গতকাল রাতেই মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার (২৫) ও তাঁর সহযোগী মিলন মিয়াকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। তবে মামলার প্রধান আসামিকে আজ সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।

আরও পড়ুনহালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগে

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত সোমবার দুপুরে মিলন মিয়ার (২১) সঙ্গে সে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীটিকে বাশারের অটোরিকশায় তুলে দেন মিলন। এ সময় বাশার হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে স্কুলছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।

খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল রাতেই আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

হালুয়াঘাট থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা চলছে। তাঁর সহযোগী মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিলন জানিয়াছেন, মেয়েটি তাঁর বন্ধু।’

এদিকে হালুয়াঘাটে গারো ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলো। আজ বেলা তিনটায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।

আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ওই ঘটনার নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মেয়েটির মা বিএনপি পরিবারের সদস্য ও গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলেও অন্য গারো নারীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই এই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়মনসিংহে তিন দশকের পঞ্চদুর্গাপূজা
  • ময়মনসিংহে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ২
  • এ বছর ডেঙ্গুতে ২০০ জনের মৃত্যু
  • ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার
  • ‘আল্লাহ তুই দেহিস’: জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় এক আসামি গ্রেপ্তার
  • ৩৫ বছর আগে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচনে যা ঘটেছিল