ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ১৪ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। 

মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১০টার দিকে মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন হলেন—মাগুরার শালিখা উপজেলার চতিয়া গ্রামের বিধান মন্ডলের ছেলে বিপ্র মন্ডল (৩২), একই এলাকার বিকাশ বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস (২৪) ও ঝিনাইদহ সদর পন্ডিতপুর এলাকার সুশান্ত কুমার বিশ্বাসের ছেলে সৌরভ বিশ্বাস (২৭)। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিয়মিত টহলের সময় বাঘাডাংগা বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৬০/৪১-আর থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার ভিতরে বাঘাডাঙ্গা গ্রামের বটতলা মোড় থেকে তিনজনকে আটক করা হয়।

অন্যদিকে, কুমিল্লাপাড়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৬০/৪৫-আর থেকে আনুমানিক ২৫০ গজ ভিতরে কুমিল্লাপাড়া গ্রামের মাঠের মধ্যে নিয়মিত টহল চালিয়ে একজন পুরুষ, আটজন নারী ও দুজন শিশুকে আটক করা হয়েছে।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, আটক করা ১৪ জনই বাংলাদেশি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/সোহাগ/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশজুড়ে বৈরী আবহাওয়া, চার জেলায় বন্যার শঙ্কা

থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি এবং সীমান্ত নদীতে পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল, দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। এমন পরিস্থিতিতে শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার শঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ মাসের শেষ দিকে একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

জ্যৈষ্ঠের শুরুতে দু-তিন দিন ধরে ঢাকায় দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানেও কমবেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে আজ বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে গতকাল দিনভর বৃষ্টিতে বোরো ধান, আম ও লিচুর ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসবে; রোদের দেখা মিলবে। এর পর ২৭ বা ২৮ মে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে সিলেটে, ১৯২ মিলিমিটার। সিলেট ছাড়াও অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে রংপুর ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে; এর মধ্যে রংপুরে ১৪৬ মিলিমিটার, রাজারহাটে ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৬৪ মিলিমিটার এবং ঢাকায় ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বেসরকারি আবহাওয়াবিষয়ক ওয়েবসাইট আবহাওয়া ডটকমের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে পাহাড়ি ঢল শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ২৭ মে লঘুচাপ, ২৮ মে নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ এবং ২৯ মে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

গতকাল ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারী বর্ষণের কারণে সিলেটের সীমান্তবর্তী নদীগুলোতে ঢল নেমেছে। বিশেষ করে সীমান্তের গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়াইন ও ডাউকি নদীতে পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পিয়াইনের পানি উপচে প্রবেশ করছে লোকালয়ে। সুরমা নদীর কানাইঘাট সীমান্ত এলাকার অবস্থাও একই।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, গতকাল সকাল ৬ থেকে ৯টা পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। ৯ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬৮ ও ১২ থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

গোয়াইনঘাট ইউএনও রতন কুমার অধিকারী জানান, নিম্নাঞ্চলের মানুষের আগেই সতর্ক করা হচ্ছে। জানমাল রক্ষায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দু’দিনের প্রবল বর্ষণ এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়ছে। পাহাড়ি নদী চেল্লাখালীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। মহারশির নদীর দিঘিরপাড় বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাউবোর আশঙ্কা, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জেলার সব পাহাড়ি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। 

কুড়িগ্রামেও গত তিন দিনের টানা ভারী বর্ষণ এবং উজানের ঢলে তিস্তা, জিঞ্জিরাম, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বেড়েছে। ইতোমধ্যে তিস্তার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাদাম, পাট, বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফসলি জমি ডুবে গেছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাপারের পাঁচগাছি, গাবেরতল, দলদলিয়া, থেতরাই, বেগমগঞ্জ, মোল্লারহাট, সরিষাবাড়ী ও বিদ্যানন্দ এলাকায়। 

ভারী বর্ষণে রংপুর নগরীর শ্যামাসুন্দরী খাল উপচে আশপাশের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গত সোমবার রাতভর বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নগরীর অন্তত ২০টি মহল্লা এক থেকে দেড় ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, জেলা সদর, গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় ৮৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষেত জলমগ্ন হয়েছে। 

দুই ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে গতকাল ময়মনসিংহ শহরের বেশির ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল সকালে ময়মনসিংহে ৩৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

সমকালের কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের পর আবার মাত্র চার মাসের ব্যবধানে ভেঙে গেল আত্রেয়ী নদীর বাঁধ। মঙ্গলবার সকালে পানিতে তোড়ে ভেঙে যায় আত্রাই ড্যামের ভারতীয় অংশ। উত্তরের আত্রেয়ী নদী বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে আবার বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যুরো ও প্রতিনিধি)


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ