পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নিজের মাসিক বেতন দ্বিগুণ বাড়িয়ে প্রায় ১০ হাজার ডলার (প্রায় ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকা) করায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এই অর্থ দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করাই ছিল অধিক যুক্তিযুক্ত।

স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে পেরুর অর্থমন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের নতুন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬৮ সোলেস (প্রায় ১০ হাজার ৬৭ ডলার), যা দেশটির ন্যূনতম মজুরির প্রায় ৩০ গুণ।

প্রেসিডেন্টের আগের বেতন ছিল ১৫ হাজার ৬০০ সোলেস (প্রায় ৪ হাজার ৪০০ ডলার), যা ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গার্সিয়া নির্ধারণ করেছিলেন। এর আগে প্রেসিডেন্টের বেতন ছিল ৪২ হাজার সোলেস।

সরকার বলেছে, লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের আগের বেতন ছিল ১১তম স্থানে, যা শুধু বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি। রয়টার্স সরকারের এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে গত বছর রিও টাইমসের এক প্রতিবেদনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রেসিডেন্টদের বেতন ৩ হাজার ডলার থেকে শুরু করে ২২ হাজার ডলার বলে উল্লেখ করা হয়।

এই সিদ্ধান্তকে ‘একেবারে রসিকতা’ বলে মন্তব্য করেন রাজধানী লিমায় একটি পত্রিকার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পেনশনভোগী বাসিন্দা রোলান্দো ফনসেকা। তিনি বলেন, ‘পেরুজুড়ে চরম দারিদ্র্য বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের উচিত সবার সামনে ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’

বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা বর্তমানে তলানিতে নেমে এসেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, তাঁর সমর্থন মাত্র ২ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তাঁর পূর্বসূরি পেদ্রো কাস্তিয়ো কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করায় তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বলুয়ার্তে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে শুরু করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তবে ৬৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পেরুর দারিদ্র্যের হার এখনো প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি, যা করোনা মহামারির সময় বেড়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও জীবনমানে পরিবর্তন আসেনি বলেই মনে করছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, পেরু ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে, যাঁদের মধ্যে তিনজনই এখন কারাগারে। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল য় র ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের সমস্যার সমাধান করাই আমাদের রাজনীতি: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘মানুষের সমস্যার সমাধান করাই আমাদের রাজনীতি। জনগণের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের মূল কাজ। আমরা মনে করি, জনগণই আমাদের বৈধতা।’

গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর শহরের গাইবান্ধা মোড়ে ‘জুলাই পদযাত্রা’ উপলক্ষে আয়োজিত পথসভায় এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিপির ঘোড়াঘাট উপজেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী আবদুল মান্নান সরকার।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যে স্বপ্ন নিয়ে তরুণেরা রাজপথে নেমে এসেছিল, যে স্বপ্ন নিয়ে আপনার ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নেমে এসেছিল, আন্দোলন করেছিল, স্বৈরাচার হটিয়েছিল, সেই স্বপ্ন অবশ্যই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে থাকব। আপনাদের এখানে যাঁরা সংগঠক আছেন, তাঁরা ঘোড়াঘাটবাসী মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব, সংগঠনের বিস্তার ঘটাব জেলা, উপজেলা, গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে।’

চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস—এগুলোকে ভয় পাবেন না। প্রতিবাদ করতে যখন আমরা শিখেছি, এটা আমাদের জারি রাখতে হবে। এটা যদি জারি না রাখি, তাহলে নতুন করে স্বৈরাচার তৈরি হবে। আমরা স্বৈরাচারকে হটাইছি, নতুন করে স্বৈরাচার আসতে দেব না।’

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আগামী ৩ আগস্ট ঢাকার শহীদ মিনারে আমরা বড় একটি কর্মসূচি করব। সেদিন আমরা আমাদের জুলাই ইশতেহার, ঘোষণাপত্র এবং উত্তরবঙ্গের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সনদ জাতির সামনে উপস্থাপন করব। আমরা যে রকম গণ-অভ্যুত্থানে বিজয় লাভ করেছি, আগামী দিনগুলোতে, আগামী সংসদে জাতীয় নাগরিক পার্টি বিজয় লাভ করবে।’

পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্যসচিব আকতার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক মেহেরাজ শাহরিয়ার, ঘোড়াঘাট উপজেলা শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী মোজাম্মেল হক, সদস্য আইয়ুব আলী, সাহাবুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ