যুক্তরাষ্ট্রে ‘ভালো’ শুল্কছাড়ের আশায় বাংলাদেশ
Published: 5th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে পাল্টা শুল্ক ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। কোনো কোনো দেশের সঙ্গে যুক্তির কাছাকাছি চলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। কোনো কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তির আলোচনায় নতুন জটিলতাও তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন পাল্টা শুল্কের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের আলোচনা হয়েছে। পরবর্তী বৈঠক হতে পারে ৯ জুলাই। বাংলাদেশের বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বৈঠকটিতে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউএসটিআরের (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি) সঙ্গে গতকাল (৩ জুলাই) একটা বৈঠক করেছি। আমরা এখনো আশা করছি, ভালো একটা শুল্কছাড় পাব। আমাদের দিক থেকে কাঠামোগত ও শুল্কগতভাবে যত কিছু ছাড় দেওয়া সম্ভব, অর্থনীতির সক্ষমতা বিবেচনায় তার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করেছি।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘৯ জুলাই আরেকটি বৈঠক আছে। ভালো ফল পাব আশা করছি। ৩ জুলাইয়ের বৈঠকে ইউএসটিআর আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, ছাড় পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা প্রতিযোগীদের চেয়ে পিছিয়ে থাকব না।’
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে। গত ৩ এপ্রিল হঠাৎ ট্রাম্প প্রশাসন পাল্টা অর্থাৎ বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। এতে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫২ শতাংশ। শুল্ক আরোপের কার্যকরের তারিখ ছিল গত ৯ এপ্রিল। তবে ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা নতুন শুল্কহারের ঘোষণাও তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখে। স্থগিতের মেয়াদ শেষ হবে ৯ জুলাই।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজার গুরুত্বপূর্ণ। ফলে তারা জোর আলোচনা চালাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ছাড়ও দিচ্ছে, যাতে চুক্তি হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গত মাসেই বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দেয়। ৮ মে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে একে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। বিবিসির খবর অনুযায়ী, গত ২৭ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্য চুক্তিতে সই করেছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ অবসানের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই চুক্তি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও চীন ‘জেনেভা চুক্তি’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অতিরিক্ত সমঝোতায় পৌঁছেছে। মে মাসে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় বাণিজ্যযুদ্ধের বিরতি নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা হয়, তিনি মূলত সেই প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন। সেখানে দুই দেশ সাময়িক বাণিজ্যযুদ্ধ-বিরতিতে সম্মত হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মূলত চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ রপ্তানি দ্রুত পুনরায় চালু করার প্রক্রিয়া নিয়ে এই সমঝোতা। চুক্তিটি জেনেভা চুক্তির ধারাবাহিকতা। জেনেভায় উভয় পক্ষই একমত হয়েছিল, পরস্পরের পণ্যে আরোপিত শুল্ক ও পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হবে। লক্ষ্য ছিল, দ্রুতই বৃহৎ বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানো। পরে লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় চূড়ান্ত চুক্তির কাঠামো নির্ধারিত হয় এবং ট্রাম্প যে চুক্তির কথা বলেছেন, সেটি সম্ভবত সেই কাঠামোর আনুষ্ঠানিক রূপ। পূর্ণাঙ্গ চুক্তির সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগস্ট মাস।
এদিকে গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। তিনি বলেন, এখন থেকে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি হওয়া পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এর আগে গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্প ঘোষিত পাল্টা শুল্কনীতির আওতায় এসব পণ্যে ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, যদি অন্য কোনো দেশ তাদের পণ্য ভিয়েতনামের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়, তাহলে সেসব পণ্যে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে। তবে নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করবে না। তবে চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে কি না বা ভিয়েতনাম এই শর্তে রাজি হয়েছে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ভিয়েতনাম নিউজ জানিয়েছে, দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক তো লাম বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। যদিও তিনি এই বিষয়কে ‘কাঠামোগত চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইউরোপীয় কমিশনার মারোস সেফচোভিচ ১ জুলাই আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে গেছেন। মার্কিন খসড়া প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে নিয়েছে ইইউ। তবে তারা স্পষ্ট করেছে, সামাজিক মাধ্যম ও প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের ওপর ইউরোপের কঠোর নিয়ন্ত্রণের নীতি এই আলোচনার আওতায় আসবে না।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ইউরোপ ১০ শতাংশ হারে অভিন্ন শুল্ক চায়। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ওষুধ, মদ, সেমিকন্ডাক্টর ও বিমান খাতে শুল্ক কমানোর প্রতিশ্রুতি দিক, সেটাও তারা চায়। তারা গাড়ি, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক ছাড় চায়।
ইকোনমিক টাইমস-এর এক খবর অনুযায়ী, শুরুতে আশাবাদ থাকলেও অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় অচলাবস্থ তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে অভিযোগ, ভারত এখনো কৃষিপণ্য, ইস্পাত ও গাড়ির যন্ত্রাংশে শুল্ক ছাড় দিচ্ছে না। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে আরও আলোচনায় রাজি। মূল বিরোধ দুধ, বাদাম, সয়াবিনসহ কৃষিপণ্যে ভারত কতটা ছাড় দিতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় ইস্পাত ও গাড়ির যন্ত্রাংশে শুল্ক কমাবে কি না, তা নিয়ে। ভারতের আশা ছিল, ৯ জুলাইয়ের মধ্যে প্রাথমিক চুক্তি হয়ে যাবে; কিন্তু এখন তা নিয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ কী করছে
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক চুক্তির সম্ভাবনা আছে বলে এর আগে জানিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চুক্তির খসড়াও তৈরি হয়েছে, যা নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়োজাহাজ, তুলা ও গম কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে।
ইউএসটিআরের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের আলোচনার বিষয়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, আলোচনা ইতিবাচকভাবেই এগোচ্ছে। চুক্তি এখনই করা সম্ভব নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওপর শুল্ক আরোপ স্থগিত থাকার মেয়াদ বাড়তে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ব শ শ ল ক আর প র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি নিয়ে তৎপর ঢাকা
ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রচলিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চর্চা ও দ্বিপক্ষীয় সুবিধার মধ্যে সামঞ্জস্য রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ঢাকা। চুক্তির খসড়ায় ইতোমধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছালেও এখনও মতপার্থক্য রয়েছে। দেশের স্বার্থ রক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মতপার্থক্য কাটিয়ে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করতে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ।
এর অংশ হিসেবে আলোচনায় অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা ছেড়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। চুক্তি হলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার বা কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে সরকার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি করার আগ্রহের কথা জানিয়ে একটি খসড়া পাঠায় ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এতে এমন কিছু শর্ত রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্য নয় বলে মনে করছে বাংলাদেশ। তাই খসড়া সংশোধন করে ইতোমধ্যে তিন দফা মতামত পাঠিয়েছে ঢাকা। এ মতামতের ওপর গত ২৬ জুন ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে শর্তের বিষয়ে কিছু ক্ষেত্রে নমনীয় হলেও উভয়পক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।
খসড়ায় আবার সংশোধন এনে গত মঙ্গলবার নিরাপত্তা উপদেষ্টার কাছে পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সংশোধিত এ খসড়ার বিষয়ে দরকষাকষি করতে আজ আবারও ইউএসটিআরের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন খলিলুর রহমান। সভায় বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান অনলাইনে যুক্ত হবেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের উপস্থিতিতে ইউএসটিআরের সঙ্গে আগামী ৮ জুলাই আরও একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে অংশ নিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।
এ বিষয়ে গতকাল বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, শুল্ক চুক্তির খসড়ার বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যেসব সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তার ছোট কিছু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সম্মত হয়েছে। এতে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষা হয় না। এসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ একটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করার সময় অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়েও ভাবতে হয়। তবে চুক্তির ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে তিনি বিস্তারিত বলতে রাজি হননি।
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক স্থগিতের মেয়াদ ৮ জুলাই শেষ হয়ে যাবে। এর মধ্যে চুক্তি করা সম্ভব না হলে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে– এমন প্রশ্নে বাণিজ্য সচিব বলেন, কোনো দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এখনও চুক্তি হয়নি। বাংলাদেশ দরকষাকষির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিন দফা খসড়া বিনিময় হয়েছে। খসড়ার ওপর ইতোমধ্যে তিনটি বৈঠক হয়েছে। আরও দুটি হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া গত ২ এপ্রিলের পর এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২৮ দফা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে। অন্য কোনো দেশ এত যোগাযোগ করেছে বলে তাঁর জানা নেই।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত চুক্তিতে এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে, যা অন্যান্য দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে বাংলাদেশকেও তা অনুসরণ করতে হবে– এমন শর্ত রয়েছে। ঢাকা ওয়াশিংটনকে জানিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট দেশের নিজস্ব আইন বাংলাদেশের পক্ষে অনুসরণ করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শর্তারোপ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্য আমদানিতে ছাড় দেবে, একই পণ্যের ক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশকে ছাড় দেওয়া যাবে না। তবে এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মোস্ট-ফেভার্ড ন্যাশন (এমএফএন) নীতির বিরোধী হওয়ায় মানতে নারাজ বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এসব কঠিন শর্তের কারণেই এখন পর্যন্ত কোনো দেশই চুক্তি করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ইন্দোনেশিয়া চুক্তির বিষয়ে এগিয়ে থাকলেও কঠিন শর্তের কারণে দুই সপ্তাহ আগে তারা জানিয়ে দিয়েছে, এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা কোনো চুক্তি করবে না।
গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। এর মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৮ জুলাই। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে।