দারিদ্র্য বিমোচনে মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে আগামী অর্থবছরে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি ক্ষুদ্র ঋণ (ঘূর্ণায়মান) তহবিল গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইনাফি বাংলাদেশের উদ্যোগে ’জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬: মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের পরামর্শ সভা’য় এই আহ্বান জানানো হয়। ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে সম্প্রতি এই সভা হয়।

পরামর্শ সভায় ২০২৪ সালের অর্থবিলে প্রস্তাবিত জটিল কর বিধানগুলো সরলীকরণেরও আহ্বান জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

ঋণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটি 

ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় গৃহবধূকে আটকে রাখার অভিযোগ

সভায় দেশের মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের নেতৃবৃন্দ আসন্ন জাতীয় বাজেট নিয়ে তাদের প্রত্যাশা তুলে ধরেন। পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)-এর নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান (ইভিসি) অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্, আশার প্রেসিডেন্ট মো.

আরিফুল হক চৌধুরী এবং শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ড. হুমায়রা ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইনাফি বাংলাদেশ ও সোনালী ব্যাংক পিএলসি-এর চেয়ারম্যান এবং সাবেক অর্থ সচিব ও বাংলাদেশের ১২তম কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনাফি বাংলাদেশ-এর ভাইস চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী। মূল প্রবন্ধে মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের প্রধান নীতিগত ও আর্থিক প্রত্যাশাগুলো তুলে ধরে বলা হয়, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও দারিদ্র্য বিমোচনে মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের ভূমিকা অপরিসীম। এই খাতের কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল জরুরি। পাশাপাশি করনীতিকে সরলীকরণ করা হলে আমরা আরও বেশি মানুষের কাছে সহজে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

পরামর্শ সভায় মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের পক্ষ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি ক্ষুদ্র ঋণ (রিভলভিং) তহবিল গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া ২০২৪ সালের অর্থবিলে প্রস্তাবিত জটিল কর বিধানগুলো সরলীকরণের আহ্বান জানানো হয়। দাতাদের সহায়তা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে উল্লেখ করে অনুদান-নির্ভর সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সরকারি অনুদান বরাদ্দের আহ্বান জানানো হয়। মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের নেতৃবৃন্দ অর্থ মন্ত্রণালয় ও মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিয়মিত প্রাক-বাজেট পরামর্শ সভাগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন যাতে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগেুলোতে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা ও চাহিদার প্রতিফলন দেখা যায়।

অধ্যাাপক হেলাল উদ্দিন বলেন, “মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হলে নীতিনির্ধারক ও উন্নয়ন সহযোগীদের সমর্থন আদায় আরো সহজ হবে।”

তিনি আরো বলেন, “প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থায়নের সুযোগ বাড়াতে হবে। বড় মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ব্যাংকের মতো সঞ্চয় সংগ্রহ করতে পারে এবং সেটি ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়নে ব্যবহার করতে পারে, তাহলে এই খাতের অর্থনৈতিক সংকট অনেকটাই দূর হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, “অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা স্থিতিশীলতার দিকে এগুলেও সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা ভুলে গেলে চলবে না। বর্তমানে দেশ নানা সংকটের মুখোমুখি। কোভিডের সময়ের মতো এই প্রেক্ষাপটেও মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে জলবায়ু অভিযোজন ও নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে বেকারত্ব মোকাবিলার মতো বিষয়গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।

“এ ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক খাতগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাজেটে বরাদ্দ রাখা হলে আমরা এই ভারসাম্য বজায় রাখতে পারব,” বলেন তিনি। 

ইনাফি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ২০০৩ সাল থেকে প্রধানত গবেষণা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, কারিগরি সহায়তা, উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঋণ ১০ হ জ র ক ট র অর থ তহব ল

এছাড়াও পড়ুন:

হিলি কাস্টমসে রাজস্ব আদায় ৭১৯ কোটি টাকা 

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বেঁধে দেওয়া রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি দিনাজপুরের হিলি কাস্টমস। ৭৪০ কোটি ৯ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ঘাটতি ২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। পণ্য আমদানি কমে যাওয়ার লক্ষ্য পূরণ হয়নি বলে জানিয়েছে হিলি কাস্টমস।

হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৪৫ কোটি ৯ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগস্ট মাসে ৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে ৫৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৫৫ কোটি ৭ লাখ টাকা, অক্টোবর মাসে ৬২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এসেছে ৬১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, নভেম্বর মাসে ৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৪৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ডিসেম্বর মাসে ৬৯ কোটি ২১ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৫৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, জানুয়ারি মাসে ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এসেছে ৪৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৫১ কোটি ৬১ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৭০ কোটি ২ লাখ টাকা, মার্চ মাসে ৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৯৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, এপ্রিল মাসে ৬৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, মে মাসে ৪৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১০১ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং জুন মাসে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। 

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেছেন, রাজস্ব আহরণে লক্ষ্য অর্জিত না হওয়ার কারণ বন্দরে বিগত বছরগুলোর তুলনায় আমদানি অনেক কম। আগে যেখানে দৈনিক ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো, বর্তমানে সেখানে আমদানি হয় মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পণ্য। এ কারণে রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়েছে। আমদানি বাড়লে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।

ঢাকা/মোসলেম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমার চোখে জুলাই বিপ্লব’ আইডিয়া আহ্বান
  • দেশের ক্রেডিট কার্ডে বেশি লেনদেন যুক্তরাষ্ট্রে, ডেবিট কার্ডে চীন ও প্রি-পেইডে যুক্তরাজ্যে
  • ২৬ মাসে কাটা হয়েছে ১৩ লাখ গাছ, সবচে বেশি কোথায়, ঢাকায় কত
  • চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে তামাশা!
  • সিভাসু’র ১৯ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, দু’জনের ছাত্রত্ব বাতিল
  • রবিবার থেকে নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা করবে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান
  • পাঁচ বছরে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে ২২৮ শতাংশ
  • প্রথম প্রান্তিকে ১২৯ কোটি টাকার বিমা দাবি দিয়েছে গার্ডিয়ান লাইফ
  • হিলি কাস্টমসে রাজস্ব আদায় ৭১৯ কোটি টাকা 
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় : র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে একটি ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত, তদন্ত কমিটি গঠন