হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন
Published: 23rd, May 2025 GMT
তহবিল কাটছাঁটের পর যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আরও কঠোর হলো ট্রাম্প প্রশাসন। প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে আর বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে পারবে না দেশটির সবচেয়ে পুরোনো এই বিশ্ববিদ্যালয়। এতে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে চলমান টানাপোড়েন আরও তীব্র হলো।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, হার্ভার্ড আর কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। আর বর্তমানে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের অবশ্যই স্থানান্তর করতে হবে। না হলে তাঁরা আইনগত বৈধতা হারাবেন।
মার্কিন সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েমও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে দেওয়া হবে না। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সতর্কবার্তা।
আরও পড়ুনঅনুমোদনহীন চিঠি পাঠানোর পর আরও কঠোর অবস্থান নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়২০ এপ্রিল ২০২৫হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৭ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন। এটি হার্ভার্ডের মোট শিক্ষার্থীর ২৭ দশমিক ২ শতাংশ।
আরও পড়ুনতহবিল স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা২২ এপ্রিল ২০২৫সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে হার্ভার্ড বলেছে, এটি ‘বেআইনি’ পদক্ষেপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেসন নিউটন বলেন, ‘আমরা আমাদের সদস্যদের দিকনির্দেশনা ও সহায়তা দেওয়ার জন্য দ্রুত কাজ করছি। প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হার্ভার্ডের সদস্য এবং আমাদের দেশের জন্য গুরুতর ক্ষতির হুমকি তৈরি করেছে।’
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিলে কাটছাঁট শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্ববিদ্যালয়টি বৈষম্যমূলক ‘গভীর সমস্যায়’ জর্জরিত উল্লেখ করে এরই মধ্যে তাদের ২৬৫ কোটি ডলারের তহবিল কমিয়েছে তাঁর প্রশাসন। বিষয়টি আদালতে তুলেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনবিদেশি ছাত্র ভর্তির অনুমতি হারাতে পারে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়: ট্রাম্প প্রশাসনের হুমকি১৭ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনতহবিল স্থগিতের পর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কর-ছাড় সুবিধা বাতিলের হুমকি দিলেন ট্রাম্প১৫ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।