‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা না দিলে তোর জন্য ছয়টি বুলেট বরাদ্দ’
Published: 23rd, May 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা কাঠের ব্যবসায়ীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাঁদার টাকা না দিলে তাঁকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে মুঠোফোনে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি হুমকি দেন।
এ ঘটনায় গতকাল রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম (৩৮)। তিনি উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও চর এতমামপুর গ্রামের আবদুল লতিফ বিশ্বাসের ছেলে।
পুলিশ ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৮টা ২০ মিনিটে আশরাফুল আলমের মুঠোফোনে একটি নম্বর থেকে এক ব্যক্তি কল দেন। ফোনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাকে ৫ লাখ টাকা দিবি, যদি না দিস তোর জন্য ৬টি বুলেট বরাদ্দ আছে।’ এর আগে ২০ মে মঙ্গলবার একই নম্বর থেকে আশরাফুলকে প্রথমে কল দেওয়া হয়েছিল। সেদিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বলেছিলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিবি। যদি না দিস, তাহলে তোর লাশ যেকোনো জায়গায় পড়ে থাকবে।’
আশরাফুল আলম শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে বলেন, ‘ফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তি বারবার পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। টাকা না দিলে গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। পরিবার নিয়ে খুবই আতঙ্কে আছি। থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’ তাঁর ভাষ্য, আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হওয়ায় দুর্বৃত্তরা ফোনে চাঁদা চেয়ে হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে চাঁদা দাবি করা সেই নম্বরে কল করে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
লিখিত অভিযোগের কথা স্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোলায়মান শেখ বলেন, লিখিত অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীকে শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আশর ফ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অভয়নগরে কৃষক দল নেতাকে হত্যার ঘটনায় ২০ বাড়িতে আগুন
যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নে কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম (৪৮) সরদারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন একদল লোক।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
নিহত তরিকুল ইসলাম পৌর কৃষক দলের সভাপতি ও পৌরসভার ধোপাদি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের পিল্টু বিশ্বাসের বাড়িতে তাকে হত্যা করা হয়।
আরো পড়ুন:
দৌলতপুরে পরীক্ষা দিতে এসে হামলার শিকার ২ শিক্ষার্থী
ডিআরইউয়ে সন্ত্রাসী জাকির গংয়ের হামলার শিকার সভাপতিসহ অনেক সাংবাদিক
শুক্রবার (২৩ মে) ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে গেলে দেখা যায়, বাড়িগুলো আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। কয়েকটি বাড়ির ভেতরে ঢুকে দেখা গেছে, আগুনে ঘরের আসবাবপত্র, জামা-কাপড় ও লেপ-তোশক-বিছানা কয়লা হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, হত্যাকাণ্ডের পর একদল লোক ডহর মশিয়াহাটীতে এসে ঘরে থাকা টাকা, স্বর্ণ লুট করার পর একের পর এক বাড়িতে আগুন দেয়। অনেককে মারধর করা হয়। আগুনে ধানের গোলা, বসত ঘর ও গোয়ল ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অন্তত পাঁচটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর রাত ৯টার দিকে সুন্দলী ইউনিয়নের সুন্দলী বাজারে চারটি দোকান লুট করা হয় ও পাঁচটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। বাজার থেকে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সুব্রত মন্ডলের মোটরসাইকেল নিয়ে গেছেন নাম না জানা লোকজন।
ভুক্তভোগী এক নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, বাড়ির কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব আগুনে পুড়ে গেছে। পাসপোর্ট ও ওষুধ ছিল, তার সব পুড়ে গেছে।
কী কী হারিয়েছেন এর তালিকা করতে বললে তিনি জানান, তালিকা করে কোনো লাভ নেই। কোনো কিছুই আর ফিরে পাব না। বাড়ির ছয়টি মানুষ বেঁচে আছি এটাই অনেক।
এদিকে, ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে হামলার শিকার বাড়িগুলো পরদর্শন করেছেন বাংলাদেশ বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন।
অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলীম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘ঘের নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। এর প্রতিবাদে কয়েকজনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।”
ঢাকা/রিটন/মাসুদ