আওয়ামী লীগের দোসরদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি বিএনপির একাংশের
Published: 26th, May 2025 GMT
রাজশাহী মহানগর বিএনপির একাংশ বড় জমায়েত করে মানববন্ধন করেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এই কর্মসূচি পালিত হয় ‘মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, রাজশাহী’র ব্যানারে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নেতারা মহানগরের সাবেক কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগের দোসরদের বাদ দিয়ে পরীক্ষিত, ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দিয়ে নতুন করে রাজশাহী মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দাবি জানান তাঁরা।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধনটি দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলে। এতে বক্তব্য দেন নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদ রবিউল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, শাহ মখদুম থানার সাবেক সভাপতি মো.
নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা যদি মনে করি, ঢাকা থেকে কোনো নেতা রাজশাহীতে আসবে না, কারও বাবার ক্ষমতা নেই যে রাজশাহীতে আসে। আমরা যদি মনে করি, এই অযোগ্য কমিটি রাজশাহীতে কোনো কর্মসূচি পালন করবে না, অবশ্যই তাদের ক্ষমতা নেই করার। আমরা এত দিন কেন্দ্রের দিকে, পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে আছি। এখনো তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা আছি। যারা ১৯৯৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে কালো পতাকা প্রদর্শন করেছিল, আজ তারা বিএনপির নেতা।’
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ‘যাদের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তারা রাজশাহীতে বিএনপির নেতৃত্ব দিতে পারবে না। যারা দিনের বেলায় বিএনপি, রাতের বেলাতে আওয়ামী লীগ করে, তারা বিএনপির নেতৃত্ব দিতে পারে না। এদের যোগ্যতা নেই। আজ এখান থেকে বলছি, অবিলম্বে কেন্দ্র থেকে এই আওয়ামী লীগের দোসরদের কমিটি বাদ দিতে হবে। ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে।’
নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘আজ এখানে রাজশাহী নগরের সব ত্যাগী নেতা-কর্মী অবস্থান করছেন। সাড়ে তিন বছর হয়ে গেল, একটি আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। কতিপয় কেন্দ্রের নেতা প্রভাবিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভুল বুঝিয়ে কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটি আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, উনারা বিতর্কিত। কারণ, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলনে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোথাও কোনো আন্দোলন–সংগ্রামে দেখিনি। তাঁরা ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে ৩০টি ওয়ার্ডের বিভিন্নভাবে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি দেওয়া শুরু করেছেন। ওই কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের দোসরদের রাখা হয়েছে। রাজশাহীর আপামর জনতা জানে বিএনপি মানে মিজানুর রহমান (মিনু), শফিকুল হক (মিলন), মোসাদ্দেক হোসেন (বুলবুল)।’
২০২১ সালের শেষ দিকে রাজশাহী মহানগর বিএনপি কমিটি বিলুপ্ত করে বিএনপি। ওই বছরের ডিসেম্বরে এরশাদ আলীকে আহ্বায়ক এবং মামুন-অর-রশিদকে সদস্যসচিব করা হয়। এতে রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন এবং কেন্দ্রের ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হক বাদ পড়েন। তাঁরা এই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কমিটি হওয়ার কয়েক বছর পর গত বছরের শেষ দিকে বিভিন্ন থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে এই কমিটি। পরে চলতি বছর কর্মী সম্মেলন করে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি দিচ্ছে এই কমিটি।
এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী বলেন, ‘আমাদের আগে তাঁরা বিএনপির মহানগরের দায়িত্বে ছিলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি মনে করেছে, আমাদের দিয়ে কাজ হবে, তাই আমাদের কমিটিতে রেখেছে। আমরা মহানগর বিএনপিকে একত্রিত করে কাজ করেছি। কিন্তু কিছু মানুষ কমিটি হওয়ার পর থেকে অসহযোগিতা ও ষড়যন্ত্র করে আসছে।’
এরশাদ আলী আরও বলেন, ‘আমরা থানা কমিটি করছি। সেখানে যদি আওয়ামী লীগের কেউ থাকে, তাঁরা ধরিয়ে দিক। কমিটি প্রকাশ্যে করা হয়েছে। আমরা তাঁদেরও কমিটিতে রাখতে চাই। কিন্তু তাঁরা না এসে নানা রকম কর্মসূচি করছেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ব ক স ল গ র দ সরদ র র ব এনপ কম ট র ই কম ট গঠন ক রহম ন নগর র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি ইবি শিক্ষার্থীদের
পবিত্র ঈদুল আযহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে ২৩ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এ দীর্ঘ ছুটিতে আগামী ৪ জুন থেকে ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে ভাবছে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। তবে ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় ‘ছুটির নামে হল বন্ধের প্রহসন মানি না’, ‘শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা আর না’, ‘ঢাবি, রাবি, জাবি পারলে ইবি কেন নয়?’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যা-কার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
আরো পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-এ পা
লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতি বছর ঈদে ইবির সব হল দীর্ঘদিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যা শিক্ষার্থীদের জন্য চরম ভোগান্তির। ছুটিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কেনো বন্ধ করা হবে? বহু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যারা ঈদুল আজহা উদযাপন করেন না। ছুটির সময় হলে বন্ধ থাকলে তাঁদের নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
তারা বলেন, ছুটির পরপরই ৪৭তম বিসিএসসহ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী হলে থেকে এসব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হল বন্ধ হলে তাদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। এছাড়া স্নাতকোত্তর ও গবেষণামূলক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চলমান থিসিস, গবেষণা প্রকল্প এবং ল্যাবরেটরি কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। হল বন্ধ হলে এসব কাজ অনিশ্চয়তায় পড়বে।
তারা আরও বলেন, ঈদের পরপরই বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল, মধ্যবর্তী মূল্যায়ন ও প্রেজেন্টেশন থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসেই সেগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের পড়াশোনায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য হল খোলা রাখা প্রয়োজন। দূরবর্তী অনেক শিক্ষার্থী বন্ধে ক্যাম্পাসে থাকেন। কিন্তু হল বন্ধ করে দিলে তাদের থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর আগে বিভিন্ন সময়ে হল খোলা রাখার বিষয়ে আমাদের বলেছেন। কিন্তু এখন তারাই হল বন্ধ করে দিচ্ছেন। আমরা বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল খোলা রাখার দাবি জানাই।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে স্মারকলিপি নিয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের দাবি তুলে ধরেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কোষাধ্যক্ষ বলেন, “তোমরা যারা হলে থাকতে চাও, তারা তোমাদের হলের প্রধ্যক্ষকে চাহিদার কথা জানাও। তারা প্রাধ্যক্ষ পরিষদকে জানাবে এবং প্রাধ্যক্ষ পরিষদ আমাদের সঙ্গে বসবে। হল খোলা রাখার বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ ইতিবাচক হলে আমরাও ইতিবাচক।”
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল গফুর গাজী বলেন, “হল খোলা রাখার বিষয়ে আমরা পজিটিভ। ছুটিতে যারা হলে থাকতে চায়, তাদের লিখিতভাবে স্ব-স্ব হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন দিতে বলেছি। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষার্থী যদি থাকতে চায়, তাহলে আমরা হল খোলা রাখব।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী