প্রথম আলো:

বিদ্যুৎ–সাশ্রয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব ফ্রিজ কতটা সুবিধাজনক?

সোহেল কিবরিয়া: পরিবেশবান্ধব ফ্রিজে সাধারণত ইনভার্টার কম্প্রেসর প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, যা ফ্রিজের তাপমাত্রা অনুযায়ী নিজে থেকে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে; অর্থাৎ যখন তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকে, তখন কম্প্রেসর কম বিদ্যুৎ খরচ করে ধীরে চলে। আর যখন প্রয়োজন পড়ে, তখনই পূর্ণগতিতে কাজ করে। এতে বিদ্যুৎ অপচয় রোধ হয়। এ ধরনের ফ্রিজে আরও থাকে উন্নত থার্মোস্ট্যাট সেন্সর এবং ইকো মোড ফিচার, যা ফ্রিজের অবস্থা অনুযায়ী শক্তি সাশ্রয় করে।

প্রথম আলো:

ফ্রিজের ব্যবহারে কার্বন নিঃসরণ কমানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে সেটি নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করেন?

সোহেল কিবরিয়া: ফ্রিজের ব্যবহারে কার্বন নিঃসরণ কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা আমাদের সামনে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গৃহস্থালি যন্ত্রপাতির মধ্যে ফ্রিজ এমন একটি যন্ত্র, যা প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে এবং এর শক্তি ব্যবহার ও রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস উভয়ই পরিবেশে কার্বন নিঃসরণে ভূমিকা রাখে।

প্রথম আলো:

বাংলাদেশের বাজারে পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেটরের প্রাপ্যতা কেমন?

সোহেল কিবরিয়া: প্রাপ্যতা গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সচেতন ভোক্তা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলে এই ধারা ভবিষ্যতে আরও বেগবান হবে বলে আশা করা যায়। পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেটর এখন কেবল প্রিমিয়াম সেগমেন্টের পণ্য নয়। দেশীয় উৎপাদনের ফলে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারাও এ ধরনের ফ্রিজ কিনতে পারছেন। ফলে এটি এখন অনেকটাই গণপ্রাপ্যতায় পৌঁছেছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

প্রথম আলো:

ভবিষ্যতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি নিয়ে রেফ্রিজারেটরের ক্ষেত্রে কী ধরনের উন্নয়ন আশা করা যায়?

সোহেল কিবরিয়া: বর্তমানে ব্যবহৃত আর-৬০০এ-এর চেয়ে কম গ্লোবাল ওয়ার্মিং পটেনশিয়ালযুক্ত গ্যাস বা বিকল্প প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের দিকে যাবে এই ইন্ডাস্ট্রি, যা ওজোন স্তরের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ হবে। সোলার পাওয়ার্ড ফ্রিজ বা বিকল্প নবায়নযোগ্য শক্তিচালিত ফ্রিজ সাধারণ হয়ে উঠবে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল বা অফ-গ্রিড এলাকায়। এতে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সম্ভব হবে।

প্রথম আলো:

আপনাদের প্রতিষ্ঠানের রেফ্রিজারেটর নিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

সোহেল কিবরিয়া: মিনিস্টার রেফ্রিজারেটর উৎপাদিত হয় দেশীয় কারখানায়, যেখানে আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ জনবল কাজে লাগানো হয়। ফলে দাম তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী হলেও মানের ক্ষেত্রে কোনো আপস করা হয় না। ক্রেতারা চান এমন একটি ফ্রিজ, যা বিদ্যুৎ কম খরচ করে, দ্রুত ঠান্ডা হয়, দীর্ঘদিন ভালো সার্ভিস দেয় এবং দামে সাশ্রয়ী হয়। মিনিস্টার সব সময়ই সেই চাহিদা পূরণ করে আসছে।

পণ্যের পাশাপাশি মিনিস্টারের বিক্রয়োত্তর সেবা ও সার্ভিস নেটওয়ার্কও ক্রেতাদের সন্তুষ্টির বড় কারণ। দেশের শহর থেকে শুরু করে মফস্‌সল অঞ্চলেও আমাদের সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। কোনো ধরনের সমস্যা হলে দ্রুত সহযোগিতা পাওয়া যায়, এটি গ্রাহকের আস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

প্রথম আলো:

প্রথম আলো ডটকম আয়োজিত রেফ্রিজারেটর মেলায় আপনারা অংশ নিয়েছেন। পাঠক এবং আপনাদের গ্রাহকদের উদ্দেশে কী বলার আছে?

সোহেল কিবরিয়া: রেফ্রিজারেটর মেলায় অংশ নিতে পেরে আমরা আনন্দিত। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী ফ্রিজগুলো পাঠক ও ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি। প্রতিটি পরিবার বা প্রতিষ্ঠান যদি সচেতনভাবে পরিবেশবান্ধব ফ্রিজ বেছে নেয়, তবে এটি জলবায়ুকে স্থিতিশীল করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। এ জন্যই আমরা পাশে আছি সেরা প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব ফ্রিজ নিয়ে।

প্রথম আলো:

ধন্যবাদ আপনাকে।

সোহেল কিবরিয়া: আপনাকেও ধন্যবাদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স হ ল ক বর য় প রথম আল ব যবহ র পর ব শ ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা।  

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। তাদের মধ্যে অন্যতম জুহি চাওলা। ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’, ‘রামজানে’, ‘ডর’, ‘ইয়েস বস’, ‘ডুপ্লিকেট’সহ আরো কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই জুটি। একসঙ্গে অভিনয় ছাড়াও, এই দুই তারকা বাস্তব জীবনে খুবই ভালো বন্ধু। কেবল তাই নয়, ব্যবসায়ীক অংশীদারও তারা। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

বন্ধু শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জুহি। এ আলাপচারিতায় স্মৃতিচারণ তো করেছেনই, পাশাপাশি শাহরুখের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

শাহরুখের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হই, তখন সহপ্রযোজক বিবেক ভাসওয়ানি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার নায়ক দেখতে আমির খানের মতো।’ আমি শাহরুখকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। দেখি, শাহরুখের চুল চোখের ওপরে নেমে এসেছে। আর সে একেবারেই আমার কল্পনার সেই ‘চকলেট বয়’ নয়! যখন কাজ শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, সে একদম নতুন অভিনেতাদের মতো নয়, সে পরিশ্রমী, দিনে তিন শিফটে কাজ করছে।” 

একটি ঘটনা বর্ণনা করে জুহি চাওলা বলেন, “আমার মনে আছে, ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়, কোনো দৃশ্য ঠিকমতো লেখা না থাকলে পরিচালক আজিজজি (আজিজ মির্জা) বলতেন, ‘শাহরুখ আসুক, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ রোমান্স আর মজার মিশেলে থাকা দৃশ্যগুলো আমাদের সবচেয়ে ভালো ছিল। সেই সূত্রেই আমরা অনেকগুলো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি।” 

শাহরুখের পাশে অবস্থান করলে সাবধান থাকার কথার কথা বলেছেন জুহি। হাসতে হাসতে এ অভিনেত্রী বলেন, “শাহরুখের আশেপাশে থাকলে সাবধানে থাকবেন। কারণ সে কথা দিয়ে আপনাকে যেকোনো কিছু করাতে রাজি করিয়ে ফেলতে পারে। ওর কথাবলার ভঙ্গি এমন যে, আপনি ‘না’ বলতেই পারবে না। আমি ‘ডুপ্লিকেট’ সিনেমা করতে চাইছিলাম না, কারণ সেখানে আমার তেমন কিছু করার ছিল না। আমরা তখন আরেকটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, আর শাহরুখ আমাকে সিঁড়িতে বসিয়ে দুই ঘণ্টা বোঝায় এবং আমি সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই। সে আপনাকে যেকোনো কিছু করতে রাজি করাতে পারে, তাই সাবধানে থাকবেন।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “অফস্ক্রিনে আমাদের সম্পর্কেও উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের যুক্ত রেখেছেন, এমনকি আইপিএলের মাধ্যমেও। আমাদের বন্ধন কোনো পরিকল্পনার ফল নয়, এটা একেবারেই ভাগ্যের ব্যাপার।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সহ-মালিক জুহি ও তার স্বামী জয় মেহতা। এই দলের পেছনে জুহি বিনিয়োগ করেছেন ৬২৯ কোটি রুপি। বর্তমানে এই দলটির মূল্য আছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি রুপি। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রেড চিলিস গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন জুহি। 

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা। 

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী। 

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। 

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা। 

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন মোট পাঁচবার। তবে শাহরুখ খানের ৩৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অধরা ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলতি বছর ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ