বিএনপি নেতা কামরুলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে আলটিমেটাম
Published: 27th, May 2025 GMT
রাজধানীর বাড্ডায় বিএনপি নেতা কামরুল আহসান হত্যার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার গুলশানে মানববন্ধন করেছেন দলটির নেতা–কর্মীরা। এই মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে তিন দিনের সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতারা। এই সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা না হলে সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষর্শীরা জানান, গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান হত্যার বিচার চেয়ে আজ বেলা তিনটা থেকে পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত গুলশান ২ নম্বর গোল চত্বর থেকে ডিআইটি মার্কেট পর্যন্ত মানববন্ধন করেন দলের নেতা–কর্মীরা। দলের গুলশান থানা ও এই থানার ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মী অংশ নেন।
মানববন্ধনে নেতারা কামরুল আহসানের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন। মানববন্ধনের পর গুলশান থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শরিফউদ্দিন আহম্মেদ মামুন প্রথম আলোকে বলেন, কামরুল আহসান হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে তাঁরা তিন দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে মানবন্ধনে। এই সময়ের মধ্যে হত্যাকারীরা আইনের আওতায় না এলে গুলশান ১ ও ২ নম্বর, নতুনবাজার ও বাড্ডা এলাকায় সড়ক অবরোধ করবে বিএনপি।
শরিফউদ্দিন আহম্মেদ মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন গুলশান থানা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান কবির। এই মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা কামাল জামান মোল্লা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব এ জি এম শামসুল হক, উত্তর বিএনপির বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান, বাড্ডা থানা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল কাদের, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
রাজধানীর বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় গত রোববার রাতে কামরুল আহসানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় কামরুলের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, কামরুল আহসান হত্যার সঙ্গে জড়িত দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেটে দোকান বরাদ্দ, বাড্ডা এলাকায় কেব্ল টিভি সংযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবসা ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় দুটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরে কামরুল আহসানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হত য ক র দ র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
আইনজীবীর বিরুদ্ধে বৃদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ, প্রতিবাদে মানববন্ধন
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৬৫ বছরের বৃদ্ধা পারুল বেগম। স্বামী হাফিজুর রহমান মুন্সী মারা যান প্রায় সাড়ে ৪ বছর আগে। স্বামী মারা যাবার আগে মেয়ের বিয়ে হলেও এখন তার সংসারে রয়েছে দুই ছেলে, দুই পুত্রবধূ ও ৪ নাতী-নাতনী।
কিন্তু স্বামী মারা যাওয়াই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃদ্ধা পারুল বেগমের। সদর উপজেলার গোবরা মৌজার ৫০ শতাংশ জমির দখল নিতে ২০০৩ সালে তারই সৎ ভাবি জেসমিন আরা তাকে আসামি করে গোপালগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপরই শুরু হয় আদালতে দৌঁড়ঝাঁপ। সংসার সামলাবেন নাকি মামলা চালাবেন- এমন দ্বিমুখী সংকটে পড়েন তিনি।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় চবিতে মানববন্ধন
গাজীপুরে শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন
দীর্ঘ ১৬ বছর পর আদালত তারপক্ষে রায় দিলেও তার আইনজীবী প্রতারণার মাধ্যমে সেই জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি ওই জমি এখন হারাতে বসেছেন।
এ জমি ফেরতসহ প্রতারক অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলমের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় তারা জমি ফেরতসহ প্রতারক অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলমের বিচারের দাবি করে। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগমসহ তার পরিবারের ১১ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগম বলেন, “সদর উপজেলার ১১৬ নম্বর গোবরা মৌজার ২৮৮৯ খতিয়ানের ৩০৮৯ খতিয়ানের ৮৩৭ নম্বর দলিলের ৫০ শতাংশ জমির মালিক আমি। পরে এ জমির মালিকানা নিয়ে সৎ ভাবি জেসমিন আরা আমার নামে মামলা দায়ের করেন। এ মামলা চালাতে আমি আমার আপন ছোট ভাইয়ের শ্যালক অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলমের কাছে যাই। মামলায় আদালত আমার নামে রায় দেন।”
তিনি বলেন, “কিন্তু মামলা চলাকালে অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম প্রতারণা করে মামলার বাদী জেসমিন আরার নামে ২২ শতাংশ, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করে নিজের নামে ৩২ শতাংশ এবং তার স্ত্রী তানিয়া আক্তারের নামে ২৬ শতাংশ জমি লিখে নেন। এছাড়া আমার ছেলের কাছে ভুয়া দলিল দিয়ে ৪ শতাংশ জমি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।”
তিনি আরো বলেন, “এ নিয়ে তার কাছে জানতে গেলে উকিলবারের ভিতর আমাকে ও আমার ছেলেকে মারধর করে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে কোনো প্রতিকার তো পাইনি, উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও জীবননাশের হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় আমি আমার জমি ফেরতসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”
ভুক্তভোগীর ছেলে মো. মানিক মুন্সী বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আমার গর্ভবতী স্ত্রীকেও মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিলে ভয়ে আমি স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরালয়ে অবস্থান নেই। এ সময় আমার স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করে।”
তিনি বলেন, “ওই আইনজীবী আমার কাছে ভুয়া দলিল দিয়ে ৪ শতাংশ জমি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি আমি সাড়ে ১৫ লাখ টাকার একটি চেকের মামলা দিলেও ওই আইনজীবী আমাকে না জানিয়ে আসামিদের সঙ্গে রফাদফা করেন। আমি এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।”
ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগমের জামাতা বলেন, “আমার শ্বাশুড়ী আদালত থেকে রায় পেলেও অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম প্রতারণা করে জমি লিখে নিয়েছে। আমরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও কোনো বিচার পাচ্ছি না। জেলা প্রশাসক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দাবি জানাই, আমরা যেন সুষ্ঠু বিচার পাই।”
এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম বলেন, “এ জমি নিয়ে তারই সৎ ভাবি জেসমিন আরা মামলা দায়ের করেন। এরপর তিনি আমাকে প্রথমে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেয়। পরে আমার কাছে জমি বিক্রি করেন। তার জমি আমি প্রতারণা করে নিয়েছি- এটা পুরোপুরি মিথ্যা।”
তিনি বলেন, “তিনি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছিলো। কিন্তু কাগজপত্রে আমি এসব জমি পাই। পারুল বেগম আমার কাছে জমি বিক্রি করে বিভিন্ন সময় দামবাবদ টাকা নিয়েছেন।”
ঢাকা/বাদল/মেহেদী