নড়াইলে ভারী বৃষ্টিতে আঞ্চলিক সড়কে ধস
Published: 20th, June 2025 GMT
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জালালসী এলাকায় লোহাগড়া-নহাটা আঞ্চলিক সড়ক মাঝখান থেকে ধসে গেছে। ভারী বৃষ্টির কারণে শুক্রবার (২০ জুন) দুপুরে সড়কটি ধসে পড়ে। বর্তমানে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ।
জালালসী গ্রামের শাহীন বলেন, “কিছুদিন ধরেই জালালসী এলাকায় লোহাগড়া-নহাটা আঞ্চলিক সড়কের কিছু অংশের মাটি ধসে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। ভারী বৃষ্টির কারণে আজ দুপুরে সড়কটি মাঝখান থেকে ধসে পড়ে। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, তারা যেন দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা করেন।”
একই গ্রামের গৃহবধূ সালমা বেগম বলেন, “রোগী নিয়ে বের হতে পারছি না। সড়ক ধসে যাওয়ায় রিকশা-মোটরসাইকেল চলতে পারছে না।”
আরো পড়ুন:
যানজটমুক্ত ঢাকার স্বপ্ন: জুলাই থেকে নামছে ইলেকট্রিক বাস
কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতা নিহত
নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, “বৃষ্টির কারণে সড়কটি ধসে গেছে। আমরা অস্থায়ীভাবে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে রাতের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করব। পরবর্তীতে টেকসই সংস্কারের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে।”
ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দপ্তরের অধীন ২৯ কিমি সরু সড়কে চলাচলে ঝুঁকি
নওগাঁ সদর উপজেলার কাঁঠালতলী মোড় থেকে আত্রাই পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার সড়ক এক সময় ছিল নাটোর ও বগুড়ায় যাওয়ার প্রধান মাধ্যমে। আশির দশকের আগে এটি ছিল ইটের সলিং রাস্তা। পরবর্তী সময়ে পাকা করা হলেও আর প্রশস্ত হয়নি। বর্তমানে সড়কের বেশির ভাগ অংশের প্রস্থ মাত্র ১০ থেকে ১২ ফুট। ফলে দুই দিক থেকে আসা গাড়ির মুখোমুখি হলে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণহানিও হয়েছে অনেকে।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, ৪৫ বছর ধরে যাতায়াতে গুরুত্বপূর্ণ নওগাঁ-রাণীনগর-আত্রাই আঞ্চলিক সড়ক প্রশস্ত করা হয়নি। ফলে তিনটি উপজেলার লাখো মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা সড়কটি পরিণত হয়েছে ‘মরণফাঁদে’। সরু সড়ক, বিপজ্জনক বাঁক এবং যানবাহনের অতিরিক্ত চাপে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। সড়কটির দুই অংশ দুই সরকারি দপ্তরের অধীন হওয়ায় প্রশস্তকরণের উদ্যোগ আলোর মুখ দেখে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির আধুনিকায়ন ও প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলা দেশের প্রান্তিক এ জনপদের মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে সড়কটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। রাণীনগর মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন তিন উপজেলার লাখো মানুষ যাতায়াত করেন। সরু হওয়ায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। অথচ দীর্ঘদিনেও সড়কটি প্রশস্ত করা হয়নি।
বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে এ সড়কে ইঞ্জিনচালিত ভটভটি উল্টে একজন নিহত ও দু’জন আহত হন। ফেব্রুয়ারি মাসে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত যানের সংঘর্ষে প্রাণ হারান দু’জন। একজন আহত হন। গত এপ্রিল মাসে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গত বছরের আগস্টে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে একজন নিহত হন। আহত হন একজন। এর বাইরে ছোট অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সড়কের দু’পাশে গড়ে উঠেছে ঘন জনবসতি। রয়েছে হাটবাজার, ধানের চাতাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন পণ্যবাহী ট্রাক, অটোরিকশা, ভটভটি, সিএনজি, মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য ছোট-বড় যানবাহন এ সড়ক ব্যবহার করে। অথচ প্রশস্ত ও ডিভাইডার নেই। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সংস্কারও করা হয়নি।
সড়কটির প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশ রয়েছে নওগাঁ সড়ক বিভাগের অধীনে। আর বাকি ১৭ কিলোমিটার রাণীনগর থেকে আত্রাই পর্যন্ত অংশ ‘ছোট যমুনা নদীর বাঁধ’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়। এ মালিকানা জটিলতা সড়ক প্রশস্তকরণে অন্যতম বাধা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
‘রক্তদহ-লোহচূড়া বিল নিষ্কাশন স্কিম’ প্রকল্পের আওতায় ৩৫ কিলোমিটার বাঁধ আত্রাই-রাণীনগর অংশে সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানান নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ না থাকায় বাঁধ প্রশস্ত করা যাচ্ছে না। ২৮ কিলোমিটার অংশ পুনর্নির্মাণের জন্য ডিপিপি পাঠানো হয়েছে।
সড়কের কিছু অংশ ইতোমধ্যে সংস্কার করা হয়েছে জানিয়ে নওগাঁ সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দীক বলেন, সড়কটি দ্রুত প্রশস্ত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান বলেন, সড়কটি তিনটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত ও কৃষিপণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। পথ এতটাই সরু যে, বড় আকারের একটি যানবাহন চলাচল করাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। আধুনিকায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।