‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়।’ আর যাঁরা বেঁচে যান? তাঁদের কাছে যুদ্ধ মানে আতঙ্ক, মৃত্যু, ধ্বংস, আহাজারি, পঙ্গুত্ব, খাদ্যসংকট, বিভীষিকা—মানুষের তৈরি সবচেয়ে ভয়াল সম্মেলন। এ সবকিছুর সঙ্গে সামলে নিতে তাঁদের প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির সঙ্গে, নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলতে হয়। তার মানে রাজায় রাজায় যুদ্ধের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও একধরনের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কোনো সাইরেন বাজানো হয় না।

ঠিক তেমনি ইসরায়েল আগ্রাসন চালানোর পর থেকে ইরানে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষদের জীবনে নেমে এসেছে ভয় ও অনিশ্চয়তা। সংঘাত শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সাধারণ ইরানিদের বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট ও মুঠোফোন নেটওয়ার্ক বারবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে, বাজার প্রায় বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে তেহরান ছাড়ছেন অনেকে। এ ছাড়া প্রতিদিন আরও নানা ধরনের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে ইরানিদের।

আরও পড়ুনতেহরান ছেড়ে যাচ্ছে ওরা, কোথায় তা জানা নেই১৯ জুন ২০২৫

ধ্বংস ও হতাশা

প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে বলা হয়েছিল ‘আ ওয়ার টু এন্ড অল ওয়ারস’। কিন্তু সব যুদ্ধ শেষ করার জন্য এই যুদ্ধ হলেও ২০ বছর পেরোতে না পেরোতেই আবার যুদ্ধ দেখেছে বিশ্ববাসী। তার মানে, যুদ্ধ চলতেই থাকবে। যাঁরা যুদ্ধে গেলেন, যাঁরা ঘরে অপেক্ষা করলেন—সবাই যুদ্ধের ভেতর আরেক ভয়ংকর যুদ্ধ করে চলেছেন। নেটফ্লিক্সে ‘পিকি ব্লাইন্ডার্স’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ আছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় তৈরি এই সিরিজে বার্মিংহাম শহরকে দেখানো হয়েছে। এই গল্পের নায়ক যুদ্ধ শেষের একজন সৈনিক। তিনি প্রতি রাতে ভয়ংকর স্বপ্ন দেখেন, যেন এখনো বাংকারে শুয়ে আছেন। তাঁর বন্ধুও যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বেঁচে ফিরে এসেছেন। মাঝে মাঝেই এই বন্ধু হিংসাত্মক হয়ে যান। সে সময় সামনে যাকে পান, তাঁকেই মেরে ফেলতে চান।

বৃহস্পতিবার সিএনএনকে ঠিক একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ইরানের ২৭ বছর বয়সী এক সেনাসদস্য। সামরিক শৃঙ্খলার কারণে তেহরানে তিনি ফোন বা অন্য কোনো ডিভাইস ব্যবহার করতে পারেন না। তিনি বলেছেন, ‘মনে হয় যেন একটা ক্ষেপণাস্ত্র আমার পিছু নিয়েছে। আমি কারাজ যাই, ওরা সেখানে বোমা মারে। তেহরানে ফিরি, ওরা এখানেও আঘাত হানে।’

উত্তর-পূর্ব তুরস্কের রাজি-কাপিকোয় সীমান্ত পেরিয়ে অসংখ্য ইরানি তুরস্কে পৌঁছেছেন। ১৯ জুন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে আজ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এ বছর প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছয় রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা ঢাকা থেকে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দেন।

এছাড়া জামায়াত নেতা নকিবুর রহমান তারেক যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিনিধি দলে যুক্ত হন।

এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৪০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেয়।

সূচি অনুযায়ী অধ্যাপক ইউনূস আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ