উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার দিন থেকে নিখোঁজ, ডিএনএ পরীক্ষায় খোঁজ মিলল নির্মাতার
Published: 21st, June 2025 GMT
১২ জুন থেকে নিখোঁজ ছিলেন গুজরাটি চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ জিরাওয়ালা। সেদিন থেকেই তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ওই দিনই আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। মহেশ জিরাওয়ালা এর যাত্রী না হলেও, তাঁর মোবাইলের শেষ অবস্থান দুর্ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৭০০ মিটার দূরে শনাক্ত হয়। এ কারণে তাঁর মৃত্যুর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। অবশেষে অজ্ঞাতনামা এক মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষায় তাঁর পরিবারের নমুনার সঙ্গে মিল পাওয়ার পর মহেশ জিরাওয়ালার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
ঘটনাস্থলের কাছাকাছি মহেশ জিরাওয়ালার মুঠোফোনের শেষ অবস্থানের তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পুলিশ। পরীক্ষায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হলেও শুরুতে পরিবার মরদেহ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। শেষ পর্যন্ত তারা আশা করেছিল, হয়তো তিনি বেঁচে আছেন। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে মহেশ জিরাওয়ালার পোড়া অবস্থার একটি অ্যাকটিভা স্কুটার উদ্ধার হয়, যা ইঙ্গিত দেয় যে বিধ্বস্ত বিমানটির আঘাতেই তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। পরে স্কুটারের চেসিস নম্বর এবং ডিএনএ রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ যথেষ্ট প্রমাণ হাজির করলে পরিবার ভেঙে পড়ে এবং মৃত্যুর বাস্তবতা মেনে নেয়।
আহমেদাবাদের নারোদার বাসিন্দা মহেশ জিরাওয়ালা গুজরাটি মিউজিক ভিডিও এবং এইডস সচেতনতাবিষয়ক প্রকল্প পরিচালনার জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি মহেশ জিরাওয়ালা প্রোডাকশনসের প্রধান নির্বাহী ছিলেন এবং ২০১৯ সালে একটি গুজরাটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন। স্ত্রী হেতাল এবং তাঁদের এক কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রেখে গেছেন তিনি।
ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, আহমেদাবাদ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৩১ জনের ডিএনএ শনাক্ত করা হয়েছে এবং ২১০টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ১৫৫ জন ভারতীয়, ৩৬ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ, ১ জন কানাডীয় এবং ৯ জন স্থানীয় বাসিন্দা।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
উল্লেখ্য, আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার এই ফ্লাইট ১২ জুন শাহিবাগের বিআই মেডিকেল হোস্টেলে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় ২৭৯ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহম দ ব দ পর ব র ড এনএ
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানি শিল্পকলাকে প্রভাবিত করেছে আণবিক বোমা
আজ ৬ আগস্ট হিরোশিমা দিবস। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে এই দিনে জাপানের হিরোশিমা নগরে বিশ্বে প্রথমবারের মতো ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র আণবিক বোমা হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা শহরে আণবিক বোমা হামলার ঘটনা দেশটির শিল্পকলাকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে। দেশটির চলচ্চিত্র, অ্যানিমেশন সিরিজে আণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর বিকিরণ অসুস্থতার মর্মান্তিক চিত্রায়ণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে গত ৮০ বছরে ধ্বংস ও রূপান্তরের গল্পগুলো জাপানের মানুষের ভয়ের সঙ্গে মিশে গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সাম্প্রতিক ফুকুশিমা সংকটের বিষয়গুলো। এমনই চিত্র দেখানো হয়েছে গডজিলা চলচ্চিত্রে।
ধ্রুপদি মাঙ্গা ও অ্যানিমে সিরিজ অ্যাস্ট্রো বয়তে দেখানো হয়েছে পারমাণবিক ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য। জাপানি ভাষায় এ সিরিজ ‘মাইটি অ্যাটম’ নামে পরিচিত। অন্যদিকে আকিরা, নিওন জেনেসিস ইভ্যাঞ্জেলিয়ন এবং অ্যাটাক অন টাইটান-এর মতো সিরিজে শহর ধ্বংসকারী বিস্ফোরণের চিত্রায়ণ করা হয়েছে।
অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক উইলিয়াম তসুতসুই বলেন, ‘মারাত্মক যন্ত্রণার মধ্যে বেঁচে থাকা’ এবং ‘আঘাত কাটিয়ে ওঠা’ এই থিমটি জাপানের সাংস্কৃতিক মনোভাব প্রকাশে বারবার ফিরে আসতে দেখা যায়, যা বিশ্বব্যাপী দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে।
হিরোশিমায় আণবিক বোমা ফেললে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়। কয়েক দিন পর ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে আরেকটি বোমা হামলায় প্রায় ৭৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। লেখক ইয়োকো তাওয়াদা বলেছেন, কিছু কবিতায় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের মুহূর্তের নিখাদ ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছে। তবে অনেক উপন্যাস ও শিল্পকর্মে এ বিষয়টি পরোক্ষভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।