Samakal:
2025-06-22@01:16:12 GMT

অযত্নে অচল ১৮ আইসিইউ শয্যা

Published: 21st, June 2025 GMT

অযত্নে অচল ১৮ আইসিইউ শয্যা

চট্টগ্রামে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস। ঈদুল আজহার পর হঠাৎ করে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। ইতোমধ্যে দু’জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু শহর-গ্রামে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি কম। অনেক হাসপাতালে কিটের অভাবে হচ্ছে না পরীক্ষা। এ নিয়ে প্রিয় চট্টগ্রামের বিশেষ আয়োজন


নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) কয়েকটি শয্যা নড়বড়ে হওয়ায় রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। মরিচা পড়ে যায় শয্যার লৌহদণ্ডে। কোনোটির স্ক্রু ছিল ভাঙা, অনেক শয্যার চাকা থেকে বেশির ভাগ যন্ত্রপাতিই ছিল নষ্ট। দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে ছিল আইসিইউর গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম বাইপ্যাপ মেশিন, হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা, ইনফিউশন পাম্প, কার্ডিয়াক মনিটর, সিরিঞ্জ পাম্প। এখনও শয্যার সঙ্গে নেই ভেন্টিলেটর।
অযত্ন-অবহেলায় করোনা চিকিৎসার জন্য ‘ডেডিকেটেড’ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ১৮ আইসিইউ শয্যার অবস্থা নাজুক। বর্তমানে করোনা চিকিৎসার জন্য শয্যা ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সচলের চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এটা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় করোনা পরীক্ষা ও যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। করোনা ইউনিটে ২২ জন চিকিৎসকের পদও এখন খালি।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবস্থাও তেমন ভালো নয়। প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর থেকে সরকারিভাবে হাসপাতালটিতে করোনা পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও সেটা হয়নি। এখন পরীক্ষা হলেও রয়েছে কিট ও জনবল সংকট।
আবার বন্দরনগর চট্টগ্রামে চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস (কভিড)। হঠাৎ করেই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এরই মধ্যে দু’জনের মৃত্যুতে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। তবে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি করোনা রোগীদের চিকিৎসা। চট্টগ্রামে আসেনি চাহিদামতো কিট। বর্তমানে প্রতিদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও করোনা ডেডিকেটেড জেনারেল হাসপাতালে অনেক রোগী করোনা পরীক্ষা করাতে এলেও কিট সংকটের কারণে তারা ফিরে যাচ্ছেন। জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত কিট না থাকায় কয়েকদিন আগে চমেক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৫০টি কিট এনে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালটি করোনা রোগীদের জন্য ‘ডেডিকেটেড’ বলা হলেও এটি এখনও করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। কয়েকদিন আগে চমেক হাসপাতাল থেকে একটি ভেন্টিলেটর ধার করে এনেছে হাসপাতালটি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক, কিটের চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে ছিল ১৮ আইসিইউ শয্যা। অনেক চিকিৎসা যন্ত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বেশির ভাগ যন্ত্রই সচল অবস্থায় নেই। করোনা ইউনিটের জন্য যে ২২ জন চিকিৎসককে এই হাসপাতালে সংযুক্তিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারাও অন্য জায়গায় বদলি হয়ে গেছেন। এখন ‘শূন্য’ চিকিৎসকদের সেই পদগুলো। তাই করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটি পুরোপুরি চালু করতে আইসিইউ বিভাগের জন্য বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নতুন প্রয়োজন হবে। নিয়োগ দিতে হবে চিকিৎসকও, যা সময়সাপেক্ষ।
এমন নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতালটি পুরোপুরি প্রস্তুত করা চ্যালেঞ্জের মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় নষ্ট যন্ত্রপাতি সচল করে আপাতত পাঁচ থেকে ছয়টি আইসিইউ শয্যা চালু করতে চায় স্বাস্থ্য প্রশাসন। এজন্য কয়েকদিন ধরে তোড়জোড়ও শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২০ সালের দিকে করোনা মহামারির শুরুতে চট্টগ্রামে আইসিইউ শয্যার অভাবে বেশির ভাগ রোগী জরুরি মুহূর্তে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় তখন জেনারেল হাসপাতালে বিশেষায়িত করোনা চিকিৎসার জন্য ১০টি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হয়। পরে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১৮ করা হয়। ২০২০ সালে করোনা ইউনিটের জন্য ২২ জন চিকিৎসক সংযুক্তিতে দেওয়া হলেও গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের একসঙ্গে বদলি করা হয়। এরপর থেকে সেখানে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
করোনা রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের একমাত্র সদর এই হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু ওয়ার্ডকে এখন করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। সাধারণ রোগীদের জন্য থাকা আইসিইউ শয্যায় চিকিৎসা পাবেন করোনা রোগীরাও।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালের যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক সংকটসহ নানা বিষয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আলাপ হচ্ছে। এগুলো পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসক ও নার্স এনে ঘাটতি পূরণ করা হবে।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘আপাতত ডেঙ্গু ওয়ার্ডকে করোনা রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। করোনা রোগীদের আইসিইউর প্রয়োজন হলে সেটিরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিটসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এরইমধ্যে কিছু এসেছে, আরও আসবে বলে জানানো হয়েছে।’ 
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকরাম হোসেন বলেন, ‘করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে কয়েকজনকে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে একটি টিম এসেছে। তারা আইসিইউ বিভাগের নষ্ট-অচল যন্ত্রপাতিগুলো মেরামত করে ঠিক করার চেষ্টা করছেন। এরইমধ্যে ৫ থেকে ৬টি অনেকটা সচল হয়েছে। সংযুক্তিতে পাঁচজন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, চিকিৎসকসহ যাবতীয় বিষয়ে আমি প্রতিনিয়ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। আশা করছি আগামীতে আরও কিছু যন্ত্রপাতি এসে পৌঁছাবে।’  
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ন জন চ ক ৎসক প রস ত ত পর ক ষ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে ইরান

কয়েক দিন ধরে ইরানের হামলার প্রভাব খুব সীমিত ছিল। এবার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে কয়েকটি স্থানে আঘাত হেনে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যাও কমে গেছে, যা থেকে ধারণা করা যায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধের কারণে দেওয়া কিছু বিধিনিষেধও শিথিল করেছে। তবে বৃহস্পতিবার সকালের হামলা প্রমাণ করেছে, ইরানের এখনও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলা চালানোর ক্ষমতা আছে।

বিবিসির জেরুজালেম সংবাদদাতা হুগো বুশেগার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের টার্গেটের মধ্যে পড়েছে দক্ষিণের বিরশেবা শহরের সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টার, তেল আবিবের কাছের হোলোন শহর, আর রামাতগন শহর।

ইরান বলেছে, বিরশেবায় তাদের আসল লক্ষ্য ছিল হাসপাতালের পাশে থাকা সামরিক স্থাপনা। তবে ইসরায়েলের উপ–পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারেন হাসকেল অভিযোগ করেছেন, ইরান ইচ্ছে করে সোরোকা হাসপাতালকে টার্গেট করেছে। অন্য যেসব শহরে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে, সেখানে কী টার্গেট ছিল তা পরিষ্কার নয়।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা, জ্বালানিকেন্দ্র, বিমানবন্দর, সরকারি ভবন এমনকি আবাসিক এলাকাতেও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। ইরান বলছে, এসব কিছু তাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন, সুতরাং তারা আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।

এদিকে বিবিসির আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে ইরানের সাম্প্রতিক হামলায় ৬৫ জন আহত হয়েছে। ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, তাদের চিকিৎসা চলছে।

এমডিএ’র তথ্য মতে, ৪২ জন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। বোমা হামলার আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ১৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছে ৮০ বছরের একজন পুরুষ। এছাড়া ৭০ বছরের দুই নারী রয়েছেন যাদের অবস্থা ‘গুরুতর’।

বৃহস্পতিবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দক্ষিণ ইসরায়েলের বেয়ারশেবার সোরোকা হাসপাতালের একটি ভবন থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  এমডিএ জানিয়েছে, হাসপাতালের চিকিৎসকরা এখনও সেখানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ইসরায়েলের বিরশেভা শহরের সোরোকা হাসপাতালের পাশে একটি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করেই ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ- এর মতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি ‘কমান্ড ও গোয়েন্দা সদরদপ্তর (আইডিএফ-সিফোরআই)’ এবং গাভ-ইয়াম টেকনোলজি পার্কে অবস্থিত একটি সেনা গোয়েন্দা ক্যাম্পের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। হাসপাতাল মূলত বিস্ফোরণের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। আসল লক্ষ্য ছিল সামরিক অবকাঠামো, আর সেটাই সরাসরি ও নির্ভুলভাবে আঘাত করা হয়েছে।

গাভ-ইয়াম নেগেভ টেকনোলজি পার্কের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এটি বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং আইডিএফ-সিফোরআই ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের পাশে অবস্থিত।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম আগে জানিয়েছিল, এখানে আইডিএফ-এর একটি ক্যাম্পাস নির্মাণাধীন রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমরা এখনও সভ্য হতে পারিনি!’
  • জাতীয় নাগরিক পার্টির গঠনতন্ত্র অনুমোদন
  • কম সংস্কার বেশি সংস্কারের ধোঁয়াশা কি কাটল?
  • যা আল্লাহ রিজিকে রাখছে তাই হবে: নাঈম
  • তেহরানে আছেন যারা, কেমন আছেন তারা
  • ‘পৃথিবীকে আগের চেয়ে স্বচ্ছভাবে দেখতে পাই’
  • ট্রুথ কমিশন গঠনের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি: আইন মন্ত্রণালয়
  • ইরানি হামলায় ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষতি
  • ইসরায়েলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে ইরান