আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান আইনি কার্যক্রমে অর্থায়নে সহায়তা ও দেশে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বাড়াতে ওআইসি দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। 

রোববার বিকেলে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ওআইসির পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের ৫১তম সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। খবর বাসসের।

‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা’ বিষয়ে ওআইসি অ্যাডহক মিনিস্টারিয়াল কমিটির বিশেষ সেশনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে কক্সবাজার ও ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা ব্যাহত হচ্ছে। মানবিক সহায়তাও আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। ২০২৪ সালের জন্য জাতিসংঘের প্রাক্কলিত প্রয়োজনীয় তহবিলের মাত্র ৬৮ শতাংশ গত বছর পাওয়া গেছে।

উপদেষ্টা বলেন, তহবিল সংকটের কারণে গত ৩ জুন থেকে ইউনিসেফ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। তাছাড়া বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) রেশন কমিয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে তহবিল না পাওয়া গেলে তা আরও কমে যাবে। 
গাম্বিয়া আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে। এই মামলা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ওআইসি সদস্য দেশসমূহের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমাদের পূর্ণ সংহতি, সমর্থন ও সহযোগিতা গাম্বিয়ার প্রয়োজন। আইনি প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের আস্থা বাড়বে।

উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাস্তুচ্যুত ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অসাধারণ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার কারণে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত আরও ১ লাখ ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ এবং স্থানীয় জনগণের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

সম্মেলনের সাইডলাইনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বদর আব্দেল্লাত্তি, আজারবাইজানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জেইহুন বাইরামভ, আলজেরিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আহমেদ আতাফ ও আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী খালিফা বিন শাহিন আল মারারের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ওআইস পরর ষ ট র উপদ ষ ট ন পরর ষ ট র উপদ ষ ট র পরর ষ ট র মন ত র সহ য ত র জন য আহ ব ন তহব ল

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, আন্দোলনরত ‘তথ্য আপা’দের কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান

টানা ৭২ দিন রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় আন্দোলনের পর মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে একটি প্রতিনিধিদলের আলোচনা হয়। এ সময় উপদেষ্টা আন্দোলনরতদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।

ঝালকাঠি সদরের তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও আন্দোলন পরিচালনা কমিটির সভাপতি সংগীতা সরকার প্রথম আলোকে বলেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী সপ্তাহে তথ্য আপা প্রকল্প রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তাঁদের কাজে ফিরে যেতে বলেছেন উপদেষ্টা।

অবশ্য উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ‘এই সরকার কোনো প্রকল্প রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করছে না। তাই এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তাঁদের জন্য বিকল্প কী প্রস্তাব নেওয়া যায়, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। সেই বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে তাঁদের জানিয়েছি।’

২০১১ সালে পাইলট আকারে ১৩টি উপজেলায় তথ্য আপা প্রকল্প শুরু হয়। পরে ২০১৮ সালের শেষ দিকে ৪৯২টি উপজেলায় প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। পরে তা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন করা হয়। গত বছর আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ৩০ জুন করা হয়।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জাতীয় মহিলা সংস্থা’র বাস্তবায়ন করা এ প্রকল্পের পুরো নাম ছিল ‘তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন’। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘তথ্য আপা: তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প’।

সম্পর্কিত নিবন্ধ