কুমিল্লার দেবীদ্বারে এলজিইডির একটি সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় বন্ধ করে দিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। সোমবার বিকেল ৫টায় হাসনাত আব্দুল্লাহ তার নিজ এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে তিনি সড়কটি পরিদর্শনে গিয়ে কাজটি বন্ধ করে দেন।

জানা যায়, সড়কটি উপজেলা সদরের সুবিল, ফতেহাবাদ, রসুলপর ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক। দীর্ঘদিন কাজটি সম্পন্ন না করায় জনদুর্ভোগ ছিল সীমাহীন।

স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে হাসনাত দেখেন- মাত্র তিন-চার দিন আগে করা কার্পেটিং টান দিলেই উঠে আসছে। কোথাও কোথাও বিটুমিন নেই, খোয়া নেই, লাল মাটির ওপরেই ঢালাই করা হয়েছে। পরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থলে ডেকে এনে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধের জন্য বলেন।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় দুই কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণকাজ পায় ‘মেসার্স আরতার অ্যান্ড ইয়েস্টেড ইন্টারন্যাশনাল’ লিমিটেড। চার বছর আগে মেকাডামের কাজ হলেও নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে তখন কার্পেটিং স্থগিত রাখা হয়। সম্প্রতি নতুন করে কাজ শুরু হলে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

এই প্রকল্পের ঠিকাদার সুবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মো.

আবু তাহের। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।

আব্দুল্লাহপুরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম ও অলিউল্লাহ খান বলেন, ‘আবু তাহের সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের ঘনিষ্ঠ এবং সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীমের মামা। তাই এলাকাবাসী দীর্ঘদিন নিস্নমানের কাজ মুখ বুজে সহ্য করেছে।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার আবু তাহের বলেন, ‘আমি কাজ করছি, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বুঝে নেবে। সমস্যা থাকলে ঠিক করে দেওয়া হবে।’ 

একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন কাজ নিম্নমানের হয়েছে এবং দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরি, আমি ঠিক করে দেব।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সরকার যে টাকা দেয়, তা জনগণের রক্ত-ঘামের টাকা। এসব টাকায় তৈরি রাস্তা জনসাধারণের জন্য, কারও পকেট ভারী করার জন্য নয়। এভাবে কাজ হলে জনসাধারণ চলাচলে কষ্ট পাবে। জনগণের স্বার্থে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।’

দেবিদ্বার উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘সড়কটি আমি নিজে পরিদর্শন করেছি। সত্যিই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রক শ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর

দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সেনাসদরে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

আরো পড়ুন:

‘নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা

তিনি বলেন, “দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আারো স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।”

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান আরো বলেন, “সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে তার মধ্যে নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয় সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।”

তিনি আরো বলেন, “প্রশিক্ষণের সঙ্গে একটি বিষয় সম্পর্কিত তা হলো শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলে থাকি ‘উই ট্রেইন এজ উই ফাইট'।”

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বাইরে আছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, “নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয় তাহলে আরো কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে।”

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, “এর পাশাপাশি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত ১৫ মাস যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী, এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এজন্য আমরাও চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি।”

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহয়তায় নিয়জিত আছে এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এই ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে,” বলেও উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনে অবিস্মরণীয় দিন: ফখরুল
  • সংবিধান সংস্কার জনগণের মতামতের ভিত্তিতে হওয়া উচিত: ড. কামাল হোসেন
  • উপদেষ্টারা পক্ষপাতদুষ্ট  হয়ে কাজ করছেন: ফখরুল
  • সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হতে দেওয়া হবে না: ফখরুল
  • মামদানি দেখালেন কীভাবে নির্বাচিত হতে হয়
  • এনসিপির প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
  • প্রয়োজনে প্রথম আলোর সম্পাদককে মনোনয়ন দেবে এনসিপি: নাসীরুদ্দীন
  • নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর
  • নির্বাচন দেরি হলে বিভিন্ন ধরনের আশঙ্কা–বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা আছে: জামায়াতের আমির
  • কক্সবাজারে পুরনোদের ওপর আস্থা রাখল বিএনপি