হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে দুই ইনিংসে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন ভারতের উইকেটরক্ষক ব্যাটার ঋষভ পান্ত। টস হেরে ব্যাট করা ভারত প্রথম ইনিংসে তিন সেঞ্চুরিতে ৪৭১ রান করে। এর মধ্যে পান্ত ১৭৮ বলে ১৩৪ রানের ইনিংস খেলেন। ১২টি চারের সঙ্গে ছয়টি ছক্কা মারেন তিনি।

দ্বিতীয় ইনিংসে পান্ত ১৪০ বলে ১১৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন। তার ব্যাট থেকে ১৫টি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কা এসেছে। এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে বেশ কিছু রেকর্ড গড়েছেন পান্ত।

এর মধ্যে উইকেটরক্ষক হিসেবে ২৪ বছর পর এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন তিনি। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের ব্যাটার অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ইনিংসে দাপুটে দুই সেঞ্চুরি করেছিলেন। এর মধ্যে প্রথম ইনিংসে তিনি ১৪২ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে হার না মানা ১৯৯ রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে। এবার ভারতের উইকেটরক্ষক পান্ত দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি দেখালেন।

অ্যাওয়ে টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ভারতের পঞ্চম ব্যাটার ঋষভ পান্ত। বিজয় হাজারে ১৯৪৮ সালে অ্যাডিলেডে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন। সুনীল গাভাস্কার ১৯৭১ সালে পোর্ট অব স্পেনে প্রথম ইনিংসে ১২৪ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২২০ রান করেছিলেন। করাচিতে ১৯৭৮ সালে তিনি যথাক্রমে ১১১ ও ১৩৭ রান করেছিলেন।

দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডে রাহুল দ্রাবিড় প্রথম ইনিংসে ১৯০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেছিলেন। এরপর ২০১৪ সালে বিরাট কোহলি অ্যাডিলেডে দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১১৫ ও ১৪১ রান করেছিলেন। ১১ বছর পর এবার পান্ত ঘরের বাইরের সিরিজে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেন। প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইংল্যান্ডে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ব্যাটার তিনি।

ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে সেঞ্চুরির হিসেবে পান্ত ছুঁয়েছেন দিলিপ বলবন্ত বেঙ্গসরকার ও শচীন টেন্ডুলকারকে। তারা দু’জন ইংল্যান্ডের মাটিতে ৪টি করে সেঞ্চুরি করেছেন। পান্তও ইংল্যান্ড সফরে চারটি টেস্ট সেঞ্চুরি করলেন। তাদের ওপরে আছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়। তিনি ছয়টি সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের মাটিতে।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত টেস্টে ৯ ছক্কা মারার রেকর্ডও গড়েছেন ঋষভ পান্ত। এর আগে ২০২৩ সালে নয়টি ছক্কা মেরেছিলেন ইংল্যান্ডের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকস। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এন্ড্রু ফ্লিনটপ সমান সংখ্যক ছক্কা মেরেছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঋষভ প ন ত র ন কর ছ ল ন দ ব ত য় ইন প রথম ইন দ ই ইন

এছাড়াও পড়ুন:

গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলও কি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে

১৫ বছর ধরে অনেক ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল আর সংগঠন মিলে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন।

এর ফলে হাসিনা সরকারের পতন হয় ও তিনি এবং তাঁর দলের কর্মীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ পরিবর্তন শুধু একটা সরকারের পরিবর্তন নয়, বরং দীর্ঘ সময়ের ভয় ও দমনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাহস, আশা ও গণতান্ত্রিক চেতনার একটি বড় জয় ছিল।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, কিছু গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনের সফলতাকে শুধু নিজের নামে দাবি করতে শুরু করে। কেউ কেউ বলতে থাকে, তাদের কারণেই সরকার পতন ঘটেছে। তাই তারাই ভবিষ্যতে ক্ষমতার একমাত্র ভাগীদার।

আবার কিছু ধর্মীয় বা আদর্শিক গোষ্ঠী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যারা আগে প্রকাশ্যে তেমন সক্রিয় ছিল না। এ ছাড়া কিছু নতুন দল, যারা আগে রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত ছিল না, তারাও হঠাৎ করে সামনে চলে এসেছে। তারা নিজেদের ‘নতুন শক্তি’, ‘ভিন্নধারার দল’ হিসেবে উপস্থাপন করে, কিন্তু তাদের আচরণে কখনো কখনো পুরোনো রাজনীতির কৌশলই দেখা যায়।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনা স্বৈরশাসকদের টিকে থাকার দুটি মূলমন্ত্রেই ব্যর্থ২২ আগস্ট ২০২৪

এই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী একসঙ্গে থাকলেও আন্দোলনের পর তারা নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ করছে। এতে আন্দোলনের মূল চেতনা—জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন ধীরে ধীরে পেছনের দিকে চলে গেছে।

এ বাস্তবতায় প্রশ্ন ওঠে, যাঁরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁরাই কি আবার ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গিয়ে নতুন একধরনের স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেবেন?

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ৫ আগস্ট, ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ