নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ে কে এগিয়ে
Published: 24th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রার্থী বাছাই নির্বাচন আজ (২৪ জুন)। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থী বাছাই করা হবে। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে আটজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ৩৩ বছর বয়সী জোহরান মামদানি ও নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর মধ্যে। অপর দিকে রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কার্টিস সিলও।
মেয়র নির্বাচন নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাবের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আহনাফ আলম নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অ্যান্ড্রু কুমো প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ। তাঁর ৪০ বছরের পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। তিনি রাজ্যের গভর্নর ছিলেন, সেখান থেকে আরও নিচের অবস্থানে মেয়র নির্বাচন করছেন রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য।
আহনাফ আলম আরও বলেন, চার বছরের জন্য জীবনযাপন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন অ্যান্ড্রু কুমো। মানুষ তাঁর কথায় বিশ্বাস করছে। বিভিন্ন জনমত জরিপে তিনি এগিয়ে আছেন। ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতারা তাঁকে সমর্থন করছেন। তবে বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশির ভাগ মানুষ মামদানিকে ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে যুক্ত মৌমিতা আহমেদ। তিনি ২০২১ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মৌমিতা বলেন, নিউইয়র্কের তরুণ প্রজন্ম জোহরান মামদানির কথায় আস্থা পাচ্ছেন। তিনি সুলভ আবাসনব্যবস্থা, যাতায়াত, নিত্যপণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
জোহরান মামদানি অভিবাসী সমাজের উন্নয়নে কাজ করবেন, বিশেষ করে অভিবাসীদের ব্যাপক ধরপাকড় থেকে রক্ষা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। মুসলিম সম্প্রদায় তাঁর অন্যতম শক্তি। তিনি কতটা জনপ্রিয় তাঁর তহবিল সংগ্রহের পরিমাণ থেকেই বোঝা যায়। তিনি এ পর্যন্ত ৮ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছেন জনগণের মধ্য থেকে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক রানা আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এবারের প্রাথমিক নির্বাচনে আমেরিকান-বাংলাদেশি ভোটাররা একজন তরুণ ও উদ্যমী প্রার্থী হিসেবে মামদানিকে প্রায় একচেটিয়া ভোট দেবেন। কারণ, তাঁরা চাইবেন মামদানি মেয়র হলে অন্তত সহজে তাঁর কাছে যাওয়া যাবে, তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথাগুলো তুলে ধরতে পারবেন। তা ছাড়া মামদানির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে বার্ষিক বাড়িভাড়া কমানো ও বিনা মূল্যে বাসে যাতায়াতের সুবিধার কথা বলা হয়েছে।
অপর দিকে অ্যান্ড্রু কুমো বংশগত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা, বিশেষ করে করোনা মহারারিকালীন তাঁর ভূমিকা সারা যুক্তরাষ্ট্র সাড়া ফেলে দিয়েছিল। ভোটাররা সেই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক মূলত ডেমোক্র্যাটদের শহর। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলেছিলেন। তাতে রিপাবলিকান প্রার্থী হেরে গেলেও অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় তিনি বেশি ভোট পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুননিউইয়র্ক সিটি কি একজন মুসলিমকে মেয়র নির্বাচিত করবে২১ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয র ক ন ম মদ ন ন র জন র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা সিনেমার পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র উৎসব ‘নিউইয়র্ক বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’। বাংলা সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন। অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযোগিতায় থাকবে আমেরিকান বাংলাদেশি প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন (এবিপিএ)।
আয়োজকরা জানান, এই ফেস্টিভ্যালে অনুসরণ করা হবে আন্তর্জাতিক নিয়ম কানুন। স্থান পাবে স্বল্পদৈর্ঘ্য, তথ্যচিত্র এবং পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এই তিনটি ক্যাটাগরিতে বাংলা সিনেমা জমা, নির্বাচন, প্রদর্শন ও পুরস্কৃত করা হবে।
এই ফেস্টিভ্যাল প্রসঙ্গে ‘নিউইয়র্ক বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’-এর আহ্বায়ক নির্মাতা-প্রযোজক অলিভ আহমেদ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আমেরিকায় বাংলা চলচ্চিত্রের একটি আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম তৈরি করতে। উৎসবের নাম করে শুধুমাত্র নাচ, গান আর ভিসাপ্রাপ্তদের হাতে গণহারে ক্রেস্ট তুলে দিতে চাই না। আমরা সিনেমার মান উন্নয়ন, গ্লোবালাইজেশন এবং সঠিক বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে স্বীকৃতি দিতে চাই। আমাদের রয়েছে অভিজ্ঞ জুড়িবোর্ড।’
এদিকে ফেস্টিভ্যালের সদস্য সচিব প্রযোজক লিটু আনাম বলেন, ‘আমাদের এই আয়োজনের সাথে আছে আমেরিকান বাংলাদেশি প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন। তারা আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, উৎসব থেকে নির্বাচিত সেরা নির্মাতা, অভিনেতা ও সিনেমার ওপর তারা অর্থ, মেধা ও গ্লোবাল নেটওয়ার্ক বিনিয়োগ করবেন। সুতরাং নাচে-গানে ভরপুর নয় বরং ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের প্রকৃত তাৎপর্য নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।’
আয়োজকরা বাংলাদেশের সকল নির্মাতা এবং প্রযোজককে এই উৎসবে তাদের সিনেমা জমা দেওয়ার অনুরোধ জানান। ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে নির্মিত স্বল্প, পূর্ণ ও তথ্যচিত্র জমা দেওয়া যাবে। mov কিংবা mp4 ফর্মেটে সকল দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র জমা দেওয়া যাবে। অথবা nybanglaff@gmail.com ইমেইল করা যাবে কিংবা ড্রাইভ লিংক হোয়াটসঅ্যাপেও পাঠানো যাবে। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর +1 (347) 545-7039 অথবা +1 (646) 248- 4759। জমা দেওয়ার শেষ তারিক ৩০ আগস্ট।
অন্যতম আয়োজক অলিভ আহমেদ জানান, উৎসবটি অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের অক্টোবরে, নিউইয়র্ক-এ। দ্রুতই তারিখ ও ভেন্যু জানানো হবে ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল হ্যান্ডেলের মাধ্যমে।
‘নিউইয়র্ক বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’-এর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে বাংলাদেশের আরটিভি ও ৫২ টিভি এবং আমেরিকার চ্যানেল ১৪ ও দ্য নিউইয়র্ক এডিটোরিয়াল।