রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে ঢাকার আদালতের আদেশ
Published: 22nd, September 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনে (আরসিবিসি) থাকা ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্ত করে ফেরত আনার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত এ আদেশ দেন।
গতকাল রোববার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো.
ছিবগাত উল্লাহ বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনার মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে দুই কোটি ডলার ফেরত আসে। আর আরসিবিসির মাধ্যমে ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৬৮ হাজার ডলার ফেরত পায় বাংলাদেশ। প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার অন্য উদ্যোগে ফেরত আসে। এখন আরসিবিসির কাছে পুরো ৮১ মিলিয়ন ডলারই ফেরত চাওয়া হচ্ছে, যেটা আদালত বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন।
আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে করা মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান বলেন, এর সঙ্গে সিআইডির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সিআইডির কাছে যে মামলা আছে, সে ব্যাপারে কাজ চলছে। সমাপ্তির পথে, খুব দ্রুতই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
আদালতের আদেশে বলা হয়, তদন্তে সংগৃহীত তথ্যপ্রমাণ এবং ফিলিপাইন সরকারের পাঠানো মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পর্যালোচনা করে প্রমাণিত হয়েছে যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে হ্যাকাররা অবৈধভাবে ৮১ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করেছিল।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রসিকিউটর এহসানুল হক সমাজী বলেন, আদালতের আদেশ কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশের কপি (অনুলিপি) পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে টাকা দেশে ফেরত আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির তথ্য ১ দিন পর জানতে পারলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তা ২৪ দিন গোপন রাখে। ৩৩তম দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি তৎকালীন অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়।
সিআইডির ভাষ্য, জাতিসংঘের কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইম (ইউএনটিওসি), ফিলিপাইনের আইন এবং ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) নির্দেশনার আলোকে এবং সর্বশেষ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার এখন ফিলিপাইনের সরকারের কাছ থেকে এই অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করবে।
সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা (মেসেজ) পাঠিয়ে ফেডে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়। বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে।
অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়, ফিলরেম মানি রেমিট্যান্স কোম্পানির মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে সেই অর্থ চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হলেও বাকি অর্থ উদ্ধারে তেমন কোনো অগ্রগতি হচ্ছিল না। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তারও কোনো হদিস মিলছিল না।
২০২০ সালের ২৭ মে ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করা ওই মামলায় অর্থ রূপান্তর, চুরি, আত্মসাতের অভিযোগে রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওই মামলা চালিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেন নিউইয়র্কের আদালত। তবে ব্যক্তিগত এখতিয়ার না থাকায় চারজন বিবাদীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এদিকে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা পাচার ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় ১ কোটি ৯১ লাখ ডলার জরিমানা করে আরসিবিসিকে। ওই সময় করা এক মামলায় ফিলিপাইনের আদালত ২০১৯ সালে আরসিবিসির শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগিতোকে মুদ্রা পাচারের আট দফা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের করা মামলায়ও তাঁকে আসামি করা হয়।
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশেও একটি মামলা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা ওই মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত কমিটির সময় গত ৮ জুলাই আরও তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী চলতি সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশ দেওয়ার কথা।
এর আগে গত ১১ মার্চ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে প্রধান করে ছয় সদস্যের পর্যালোচনা কমিটি করে সরকার। এ কমিটিকে রিজার্ভ চুরির ঘটনার তদন্তকাজের অগ্রগতি, এ-সংক্রান্ত সরকারি অন্যান্য পদক্ষেপের পর্যালোচনা, এ ঘটনার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ জন্য ওই কমিটিকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় পরে আরও তিন মাস সময় বাড়ানো হয়।
পর্যালোচনা কমিটির সদস্যরা হলেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইনসের পরিচালক আলী আশফাক ও রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল হুদা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জ র ভ চ র র ঘটন ফ ল প ইন র আরস ব স র স আইড র ৮১ ম ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তুর্কি ধনকুবেরের প্রমোদতরিতে ট্রাম্পকন্যার অবকাসযাপন, শ্বশুর তখন জ্বালানিচুক্তি নিয়ে ব্যস্ত লিবিয়ায়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে টিফানি ট্রাম্প ও তাঁর বর মাইকেল বুলোস চলতি বছরের গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপন করেছেন বিলাসবহুল এক প্রমোদতরিতে। এটির মালিক তুরস্কের এক ধনকুবের, যিনি লিবিয়ার জ্বালানি তেল ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
স্বামীর সঙ্গে টিফানি যখন কোনো সমুদ্র উপকূলে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন, এ সময়েতে টিফানির শ্বশুর ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত মাসাদ বুলোস লিবিয়ায় জ্বালানিচুক্তির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এমনটি নিশ্চিত করেছে।
উত্তর আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত তেলসমৃদ্ধ দেশ লিবিয়ার সঙ্গে বুলোস পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা গল্প দীর্ঘদিন ধরে সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। ব্যক্তিগত স্বার্থ কূটনীতিকে কীভাবে প্রভাবিত করে, এটি তার নতুন উদাহরণ হয়ে উঠেছে। সম্পর্কটি বহুস্তরীয় ও জটিল।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, টিফানি ট্রাম্প ও মাইকেল বুলোস এবারের গ্রীষ্মে দক্ষিণ ফ্রান্সের সমুদ্রতীরবর্তী বিলাসবহুল এলাকা ফরাসি রিভিয়েরায় ফিনিক্স-২ নামের একটি প্রমোদতরিতে অবকাশ যাপন করেছেন। প্রমোদতরিটির মালিক তুর্কি ধনকুবের এরকুমেন্ট বায়েগান ও তাঁর স্ত্রী রুইয়া বায়েগান।
বুলোস পরিবার প্রমোদতরিটি ভাড়া নিয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে সর্বশেষ দর অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ভাড়া ছিল ১৪ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
টিফানি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চতুর্থ সন্তান। সম্প্রতি ব্রিটিশ রাজপরিবার আয়োজিত এক রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় তাঁকে বাবার পাশে দেখা গেছে। সঙ্গে ছিলেন মাইকেল বুলোসও।
টিফানির শ্বশুর মাসাদ বুলোস লেবানিজ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আরব জনগোষ্ঠীকে ট্রাম্পকে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ট্রাম্প মাসাদকে মধ্যপ্রাচ্য–বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও আফ্রিকার বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব দেন।
তবে মাসাদ প্রথাগত কূটনৈতিক ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। পেশাদার মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ তৈরি হয়। মাসাদ প্রথমে লেবাননে, পরে আফ্রিকার বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। ব্যক্তিগত ব্যবসা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে মিশিয়ে চলার কারণে ট্রাম্প প্রশাসনও হতাশ হয়েছিল বলে মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে একটি সূত্র।
মিডল ইস্ট আই প্রথম প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, কাতারের রাজধানী দোহায় মাসাদ লিবিয়ার প্রভাবশালী কর্মকর্তা ইব্রাহিম দবিবেহর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছিলেন। আলোচনার বিষয় ছিল, লিবিয়ার জব্দ করা কোটি কোটি ডলারের তহবিল উন্মুক্ত করা এবং এর একটি অংশ মার্কিন কোম্পানির কাছে যাওয়া। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত গণ-অভ্যুত্থানে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হন। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র দেশটির উল্লিখিত তহবিল জব্দ করে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তাই জব্দ অর্থ লিবিয়ার জন্য উন্মুক্ত করা হলে সেটি সংস্থার নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করতে পারে।
লিবিয়া২০১১ সালের অক্টোবরে গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর থেকে লিবিয়া গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। দেশটি বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। ত্রিপোলিতে রয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার। অন্যদিকে পূর্ব লিবিয়ায় রয়েছে সাবেক জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে।
২০১৯ সালে দুই পক্ষের মধ্যে ত্রিপোলি দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়। পরে এটি আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ছায়াযুদ্ধে রূপ নেয়। তুরস্ক জাতিসংঘ–স্বীকৃত সরকারের পক্ষে অবস্থান নেয়। রাশিয়া, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) হাফতারকে সমর্থন দেয়। উভয় পক্ষই লিবিয়ার তেলসম্পদ নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে।
মাসাদ বুলোস লিবিয়ায় ইব্রাহিম দবিবেহরের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। ইব্রাহিম ত্রিপোলির সরকার প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দবিবেহরের আত্মীয়। গত জুলাইয়ে তাঁরা সমুদ্রতীরবর্তী ভিলায় একান্ত নৈশভোজে মিলিত হন। তবে এর আগে মাসাদ দেশটির জ্বালানিচুক্তি নিয়ে প্রকাশ্যভাবে কথা বলেছিলেন।
গত আগস্টে মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গাজা থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় ইব্রাহিমও যুক্ত ছিলেন। মাসাদের দাবি, তিনি এ আলোচনায় অংশ নেননি।
ফিনিক্স-২ প্রমোদতরিতে টিফানি ও মাইকেলের অবকাশযাপন এই পরিবারের বিলাসি জীবনধারার প্রথম নজরকাড়া ঘটনা নয়; আগেও তাদের ব্যয়বহুল প্রমোদতরিতে অবকাশযাপনের খবর সংবাদ শিরোনামে এসেছে।
গত আগস্টে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ট্রাম্পের অন্য জামাতা ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারকে বিলাসবহুল প্রমোদতরির জন্য অতিরিক্ত ২৫ লাখ ডলার (২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা) দিতে হয়েছিল। আন্তর্জাতিক ব্রোকারেজ ফার্মের মাধ্যমে কুশনার প্রমোদতরিটি ভাড়া করেছিলেন। মাইকেল বুলোস ওই ফার্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মাসাদ লেবানিজ বংশোদ্ভূত হলেও আরব নেতাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন। লিবিয়ায় তাঁর কর্মকাণ্ড মিসরের কর্মকর্তাদের ক্ষুব্ধ করেছে। জুলাইয়ে তিনি তিউনিসিয়ায় প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি শিশুদের ছবি দেখিয়ে সাইদ বলেন, ‘পুরো মানবজাতির জেগে ওঠার এটাই সময়।’
চলতি গ্রীষ্মে মাসাদ বুলোস মরক্কোর বাদশাহ কিং মোহাম্মদ ষষ্ঠর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছিলেন। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা মরোক্কান অংশীদারদের তাঁর সঙ্গে না বসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ফলে বৈঠক হয়নি।