রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রসমাবেশ, ঢাকার বাইরেও বিক্ষোভ
Published: 1st, July 2025 GMT
১ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সংগঠিতভাবে আন্দোলন শুরু হয়। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলের পর রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ হয়। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কলাভবন ও মল চত্বর হয়ে মাস্টারদা সূর্য সেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বসুনিয়া তোরণ হয়ে আবার টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে ফিরে আসেন। পরে সেখানে সমাবেশ হয়। সেই সমাবেশ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম (বর্তমানে এনসিপির আহ্বায়ক) বলেন, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে। আমাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যাতে কোটাব্যবস্থার চূড়ান্ত ফয়সালা করা হয়।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে গ্রন্থাগার খোলা থাকতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের হলসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো হল বন্ধ করা যাবে না, গ্রন্থাগারও বন্ধ করা যাবে না। প্রত্যয় স্কিমের (সরকারের সর্বজনিন পেনশন কর্মসূচি) বিরুদ্ধে শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করি; কিন্তু আমাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো (গ্রন্থাগার, হল ও মেডিকেল) যেন বন্ধ না হয়।’
সমাবেশে পরের তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম। সেই ঘোষণার পর ২, ৩ ও ৪ জুলাই মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়।
১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা–আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরাও।
কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে ছিল পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া।
এর আগে ২০২৪ সালের ৫ জুন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। এ অবস্থায় আদালতের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ ছিল। যদিও ৪ জুলাই সেই শুনানি সেদিন হয়নি।
১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে মাঠপর্যায়ে সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক এখন নতুন ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। আন্দোলনের শুরুর দিনের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ১ জুলাই দেশের ১১টি স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একই সঙ্গে আন্দোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া আরও ছয়-সাতটি জায়গায় ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একই উদ্দেশ্যে আন্দোলন হয়। ১ জুলাইয়ের এটা একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল। সংগঠিত আন্দোলন জুলাই থেকে শুরু হলেও এর নেপথ্যে জুন মাসও ছিল অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ।
বাকের প্রথম আলোকে বলেন, ৫ জুন আদালতের রায়ে কোটা পুনর্বহাল হয়। এর প্রতিবাদে ৫ থেকে ৯ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন হয়। এরপর ৩০ জুন পর্যন্ত দাবি মেনে নেওয়ার সময়সীমা (আলটিমেটাম) দেওয়া হয়েছিল। ১ জুলাই থেকে সারা দেশে যাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সংগঠিতভাবে আন্দোলন করা যায়, সেটি তাঁদের পরিকল্পনায় ছিল। সেই লক্ষ্যে ৯ থেকে ৩০ জুন সারা দেশে শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করা হয়। এরই ফল দেখা যায় ১ জুলাই থেকে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ রন থ গ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
উইম্বলডনে জয়ে ছিল কোটিপতি হওয়ার সুযোগ, ছাত্র হওয়ায় লাখপতি হতে হচ্ছে
উইম্বলডনে ছেলেদের এককে র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ খেলোয়াড় কে, তা হয়তো আপনার জানা। তিনটি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী ইতালিয়ান ইয়ানিক সিনার। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয় এবার উইম্বলডনের একক ইভেন্টের ড্রয়ে র্যাঙ্কিংয়ে সবার নিচে থাকা খেলোয়াড়টি কে?
আসলে শেষের খবর কেউ রাখেন না। তাই নামও হয়তো অনেকের জানা নেই। তিনি ৭৩৩তম র্যাঙ্কিংধারী ব্রিটিশ খেলোয়াড় অলিভার টারভেট। গতকাল উইম্বলডনে খেলতে নেমেছিলেন তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ম্যাচ। সুইস কোয়ালিফায়ার লেয়ান্দ্রো রেইদিকে ৬-৪, ৬-৪, ৬-৪ গেমে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডেও উঠেছেন টারভেট। সেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষায় র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় স্প্যানিশ তারকা কার্লোস আলকারাজ।
আরও পড়ুনউইম্বলডন এখন ‘ডিজিটাল’, ১৪৮ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম যা নেই১৫ ঘণ্টা আগেটারভেটকে হয়তো দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হবে। তবে দুঃখ যা পাওয়ার তা হয়তো প্রথম রাউন্ডের জয়েই পেয়েছেন! প্রাইজমানি হিসেবে যে ৯৯ হাজার পাউন্ড পাওয়ার কথা ছিল, টারভেট যে তা পাচ্ছেন না! বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রাইজমানির অঙ্কটি ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকার কিছু বেশি।
মা–বাবা ও প্রেমিকা হেলায়েনা স্ট্যাবলারকে গ্যালারিতে সাক্ষী রেখে এই জয়ের পর টারভেটকে আসলে কিছুটা হতাশই হতে হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, ২১ বছর বয়সী এ খেলোয়াড় একে তো অপেশাদার খেলোয়াড়, এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে পড়ার নিয়মের কারণে প্রাইজমানির পুরো অর্থ তিনি পাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগের ওপর পড়াশোনা করছেন টারভেট।
উইম্বলডনে অভিষেক ম্যাচেই জিতেছেন টারভেট