বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে বাঁধন বললেন, সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল না
Published: 1st, July 2025 GMT
শুরু থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার পক্ষে ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। আন্দোলনের সঙ্গে একত্বতা প্রকাশ করে শুরুতে সামাজিক মাধ্যমে, এরপর সশরীরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজপথেও সরব ছিলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে সেই সময় ও এই সময় নিয়ে কথা জানালেন এই অভিনেত্রী।
সামাজিক মাধ্যমে বাঁধন লিখেছেন, ‘জুলাই আন্দোলন ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই আন্দোলন আমাকে আশা দিয়েছিল। দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাহস জুগিয়েছিল। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তটা কোনো সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না। তবুও আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমরা এক হয়েছিলাম এমন একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে রাষ্ট্র নিজের জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র তাক করেছিল তার জনগণের দিকে। কোনো কারণ ছাড়া মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছিল। নির্দোষ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছিল। রিয়া মণির মতো ছোট ছোট শিশুরা জীবন দিয়েছিল। কিন্তু তারা বুঝেই উঠতে পারেনি কেন জীবন দিচ্ছে!’
অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আন্দোলনের সময় আমরা এক হয়েছিলাম আমাদের অধিকার আর দেশকে ভালোবেসে। সেটা ছিল স্মরণীয় মুহূর্ত। আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম ভালো কিছুর। আমি সেই আশা সব সময় বুকে ধারণ করেই চলব।’
এর আগে বেশ কয়েকবার নিজের বক্তব্য পরিস্কার করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়েন নি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।