খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রির (ওএমএস) ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে কুমিল্লার লালমাই উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা। এরপর দুই দিন ধরে বন্ধ ছিল ওই কর্মকর্তার কার্যালয়।

সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে আলোচনায় বসে নেতারা চাবি ফিরিয়ে দিলে আজ বুধবার সকাল ১০টায় ওই কার্যালয়ের তালা খোলা হয়। উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুল আউয়াল ইউএনওর কাছ থেকে চাবি নিয়ে নিজেদের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

গত সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমাই উপজেলা শাখার আহ্বায়ক নোমান হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ওই নেতার ভাষ্য, উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রাজীব কুমার দে নীতিমালা না মেনে ও আর্থিক সুবিধা নিয়ে পূর্বপরিচিত ব্যক্তিদের ডিলার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ জন্য তাঁরা কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন।

তবে শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রাজীব কুমার দে। তিনি বলেন, ডিলার নিয়োগে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। এই নিয়োগ কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন ইউএনও হিমাদ্রী খীসা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সোমবার উপজেলার মোট তিনটি ইউনিয়নে ওএমএসের ডিলার নিয়োগ করা হয়। উপজেলার বাগমারা (দক্ষিণ) ও ভুলইন (দক্ষিণ) ইউনিয়নে বিকল্প বৈধ প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুজনকে চূড়ান্ত করা হয়। আর পেরুল (উত্তর) ইউনিয়নে বৈধ চার প্রার্থীর মধ্যে প্রকাশ্যে লটারির মাধ্যমে একজনকে চূড়ান্ত করা হয়। এ ঘটনার পর ওই দিন বেলা তিনটার দিকে বৈষম্যবিরোধী নেতা নোমান হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি ও যাঁরা আবেদন করে ডিলারের নিয়োগ পাননি, তাঁরা উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে দেন। একই দিন ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি ও নিয়োগ বাতিল চেয়ে নোমান হোসেনসহ কয়েকজন জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুনওএমএস ডিলার হতে না পেরে খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতার তালা০১ জুলাই ২০২৫

গতকাল বিকেলে ইউএনও কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় কয়েকজন নেতা আসেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলার সদস্যসচিব সাদ্দাম হোসেন ও কুমিল্লা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক কবির হোসেন। পরে আলোচনা শেষে ওই দিন সন্ধ্যার আগে ইউএনওর কাছে তালার চাবি বুঝিয়ে দেন। তবে আলোচনায় যিনি তালা ঝুলিয়েছেন, সেই নোমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন না।

নোমান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাগমারা (দক্ষিণ) ইউনিয়নে ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পেতে তিনি ও জামায়াতে ইসলামীর লোকসহ ছয় থেকে সাতজন আবেদন করেন। কিন্তু তাঁদের কাউকে না জানিয়ে এককভাবে একজন ওষুধের দোকানদারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এভাবে প্রতিটি ইউনিয়নে অনিয়ম হয়েছে। তাঁরা সব ঘটনার তদন্ত চান।

এ বিষয়ে ডিলার নিয়োগ কমিটির সভাপতি ইউএনও হিমাদ্রী খীসা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির প্রাথমিক সমাধান করা হয়েছে। কারণ, একটি সরকারি দপ্তর তালাবদ্ধ করে রাখার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া তাঁরা অনিয়মের যে অভিযোগ করেছেন, সেটি তদন্ত করে দেখা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছর পর সাবেক এসপি, ইউএনও ও ওসির নামে মামলা

মাগুরায় ছাত্রদলের সাবেক এক নেতাকে মিথ্যা মামলায় আটক করে নির্যাতন এবং বিনা বিচারে ১৬৮ দিন কারাবন্দি রাখার অভিযোগে সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি), ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার প্রায় সাত বছর পর সোমবার মাগুরা সদর আমলি আদালতে অভিযোগটি করেন ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল রুমন। 

আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে মঙ্গলবার ঘটনার তদন্তে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী কাজী মিনহাজ উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন। আসামিরা হলেন– মাগুরার তৎকালীন এসপি খান মো. রেজোয়ান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান, সদর থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম, এসআই আল এমরান ও বিশ্বজিত, কনস্টেবল পার্থ রায় এবং মাগুরা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি মীর মেহেদী হাসান রুবেল এবং মুরাদুজ্জামান মুরাদ নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী।

বাদী ফয়সাল রুমনের অভিযোগ, ২০১৮ সালের ৫ ও ১৩ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার অভিযোগে ১৮ আগস্ট তৎকালীন ইউএনও আবু সুফিয়ান তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ আটকের পর নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায়। এতে রুমনের স্পাইনাল কর্ড এবং মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। ঘটনার পরদিন তাঁর নামে সদর থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলার আসামি হিসেবে রুমনকে ১৬৮ দিন বিনা বিচারে কারাবন্দি রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া মিথ্যা মামলার কারণে তাঁর ৫০ কোটি টাকার মানহানির ঘটনা ঘটেছে। বাদী মামলাটিকে মিথ্যা ও সাজানো দাবি করে বিচার চেয়েছেন।

আইনজীবী কাজী মিনহাজ উদ্দিন বলেন, একটি মিথ্যা মামলা সাজিয়ে নির্যাতন করায় বাদী সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন। তিনি সরকারি দায়িত্বে নিয়োজিত ছয় কর্মকর্তাকে আসামি করেছেন। তাই ৩০ জুন মামলাটি করলেও আদালতের বিচারক সব দিক বিবেচনা শেষে মঙ্গলবার তা আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুরাদনগরের সেই নারীকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস উপদেষ্টার
  • সাত বছর পর সাবেক এসপি, ইউএনও ও ওসির নামে মামলা
  • জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়া করলেন দুই ছেলে
  • জমি ও পুকুর লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়ি ছাড়া করলেন দুই ছেলে
  • জমি ও পুকুর লিখে নিয়ে তাড়াশে বাবা-মাকে নির্যাতন, বাড়ি ছাড়া করলেন দুই ছেলে
  • মাগুরায় সাবেক এসপি, ইউএনও ও ওসির বিরুদ্ধে মামলা
  • ওএমএস ডিলার হতে না পেরে খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতার তালা
  • কুমিল্লায় খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে তালা দিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা
  • নোয়াখালীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে