বৈষম্যবিরোধীরা চাবি ফিরিয়ে দেওয়ায় দুই দিন পর খুলল খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়
Published: 2nd, July 2025 GMT
খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রির (ওএমএস) ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে কুমিল্লার লালমাই উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা। এরপর দুই দিন ধরে বন্ধ ছিল ওই কর্মকর্তার কার্যালয়।
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে আলোচনায় বসে নেতারা চাবি ফিরিয়ে দিলে আজ বুধবার সকাল ১০টায় ওই কার্যালয়ের তালা খোলা হয়। উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুল আউয়াল ইউএনওর কাছ থেকে চাবি নিয়ে নিজেদের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
গত সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমাই উপজেলা শাখার আহ্বায়ক নোমান হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ওই নেতার ভাষ্য, উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রাজীব কুমার দে নীতিমালা না মেনে ও আর্থিক সুবিধা নিয়ে পূর্বপরিচিত ব্যক্তিদের ডিলার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ জন্য তাঁরা কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন।
তবে শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রাজীব কুমার দে। তিনি বলেন, ডিলার নিয়োগে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। এই নিয়োগ কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন ইউএনও হিমাদ্রী খীসা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সোমবার উপজেলার মোট তিনটি ইউনিয়নে ওএমএসের ডিলার নিয়োগ করা হয়। উপজেলার বাগমারা (দক্ষিণ) ও ভুলইন (দক্ষিণ) ইউনিয়নে বিকল্প বৈধ প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুজনকে চূড়ান্ত করা হয়। আর পেরুল (উত্তর) ইউনিয়নে বৈধ চার প্রার্থীর মধ্যে প্রকাশ্যে লটারির মাধ্যমে একজনকে চূড়ান্ত করা হয়। এ ঘটনার পর ওই দিন বেলা তিনটার দিকে বৈষম্যবিরোধী নেতা নোমান হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি ও যাঁরা আবেদন করে ডিলারের নিয়োগ পাননি, তাঁরা উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে দেন। একই দিন ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি ও নিয়োগ বাতিল চেয়ে নোমান হোসেনসহ কয়েকজন জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুনওএমএস ডিলার হতে না পেরে খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতার তালা০১ জুলাই ২০২৫গতকাল বিকেলে ইউএনও কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় কয়েকজন নেতা আসেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলার সদস্যসচিব সাদ্দাম হোসেন ও কুমিল্লা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক কবির হোসেন। পরে আলোচনা শেষে ওই দিন সন্ধ্যার আগে ইউএনওর কাছে তালার চাবি বুঝিয়ে দেন। তবে আলোচনায় যিনি তালা ঝুলিয়েছেন, সেই নোমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন না।
নোমান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাগমারা (দক্ষিণ) ইউনিয়নে ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পেতে তিনি ও জামায়াতে ইসলামীর লোকসহ ছয় থেকে সাতজন আবেদন করেন। কিন্তু তাঁদের কাউকে না জানিয়ে এককভাবে একজন ওষুধের দোকানদারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এভাবে প্রতিটি ইউনিয়নে অনিয়ম হয়েছে। তাঁরা সব ঘটনার তদন্ত চান।
এ বিষয়ে ডিলার নিয়োগ কমিটির সভাপতি ইউএনও হিমাদ্রী খীসা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির প্রাথমিক সমাধান করা হয়েছে। কারণ, একটি সরকারি দপ্তর তালাবদ্ধ করে রাখার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া তাঁরা অনিয়মের যে অভিযোগ করেছেন, সেটি তদন্ত করে দেখা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে পূজার নিরাপত্তায় ৩১ মন্ডপে রাতভর নির্ঘুম পরিদর্শন ইউএনও’র
আড়াইহাজারে উপজেলাজুড়ে ৩১ টি পূজা মন্ডপে রাতভর ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন, নিরাপত্তা তদারকি ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মোঃ মামুনুর রশীদ।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত সারারাত নির্ঘুম থেকে উপজেলার ৩১ টি মন্ডপে তিনি এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার দায়িত্বশীল কার্যক্রমে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে উপজেলাবাসী খুশী হয়েছেন। তাকে উপজেলার এমন অভিভাবক হিসেবে অনেকে অভিহিত করেছেন যেমন অভিভাবক একটি পরিবারের সম্পূর্ণ ভরসাস্থল।
প্রায় প্রতিটি মন্ডপে সার্বিক খোঁজ খবর নেন তিনি। সেখানে কোথায় কি প্রয়োজন, কোথাও নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে কিনা, কারো কোন দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা তা নিজেই দেখেছেন তিনি। এতে তার প্রতি উপজেলাবাসীর আস্থা বিশ্বাস বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে তার প্রতি মানুষের প্রত্যাশাও বেড়েছে অনেক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) নঈম উদ্দিন, উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আতাউর রহমান, আনসার বিডিপি কর্মকর্তা আল মামুনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
আড়াইহাজার চৌধুরী পাড়া পূজা মন্ডপসহ উপজেলার ৩১ টি মন্ডপ এবার পূজার রয়েছে। সবগুলো মন্ডপেই নিয়মিত যোগাযোগ রেখে কোন ধরনের প্রয়োজন হলেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন ইউএনও।