অশ্লীল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের অভিযোগে জনপ্রিয় অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মাম
Published: 7th, August 2025 GMT
অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের অভিযোগে মালায়ালাম সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্বেতা মেননের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। মার্টিন মেনাচেরির অভিযোগের ভিত্তিতে কেরালার এরনাকুলাম সেন্ট্রাল থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেন।
ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশে মামলাটি ‘অশ্লীল বাণিজ্য (প্রতিরোধ) আইন, ১৯৫৬’-এর ধারা ৫, ৩ এবং ‘তথ্য প্রযুক্তি আইন, ২০০০’-এর ধারা ৬৭(এ)-এর অধীনে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
হেমা কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে অ্যাসোসিয়েশন অব মালায়ালাম মুভি আর্টিস্টের (এএমএমএ) প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন বরেণ্য অভিনেতা মোহনলাল। এক বছর পর আগামী ১৫ আগস্ট সংগঠনটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
বাবা-মায়ের উপর বিরক্ত, ডিম খান না, পাখিতে ভয় কিয়ারার
চৌত্রিশে থেমে গেল নায়কের জীবন
এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শ্বেতা মেনন। এ অভিনেত্রীর সমর্থন সময়ের সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধরেই নেওয়া হয়েছে, প্রথমবারের মতো সংগঠনটি নারী সভাপতি পেতে যাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের কয়েক দিন আগে এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অভিযোগকারী দাবি করেছেন, শ্বেতা অভিনীত সিনেমা ও বিজ্ঞাপনগুলো সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে জনপ্রিয়তা ও আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটির প্রাথমিক তদন্ত চলছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তারা মামলাটি রুজু করেছে। পুলিশ এই বিষয়ে তদন্ত করে দেখবে অভিযোগগুলি আদৌ প্রমাণিত হয় কি না।
শ্বেতা মেনন দুইবার কেরালা স্টেট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন। মূলত, মালায়ালাম ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন শ্বেতা। ১৯৯৪ সালে ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া এশিয়া প্যাসিফিক’ খেতাবও অর্জন করেন এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় উচ্চ ঝুঁকিতে ৫ জেলা: সম্প্রীতি যাত্রা
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঝুঁকিতে আছে ২৯টি জেলা। এর মধ্যে ৫টি জেলা আছে উচ্চ ঝুঁকিতে। সেগুলো হলো—ঢাকা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুর ও যশোর। মাঝারি ঝুঁকিতে আছে ২৪ জেলা।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘সম্প্রীতি যাত্রা’ আয়োজিত ‘মসজিদ, মন্দির, মাজার, আখড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সম্প্রীতি যাত্রার ডাক এবং আসন্ন দুর্গাপূজায় ঝুঁকি পর্যালোচনা ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানিয়েছেন লেখক ও গবেষক মীর হুযাইফা আল-মামদূহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ফেরদৌস আরা রুমী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মির্জা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, সংগীতশিল্পী অরূপ রাহী এবং সাংস্কৃতিক কর্মী বীথি ঘোষ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দশ বছর (২০১৪ থেকে ২০২৫) ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পূজামণ্ডপ, শোভাযাত্রার রুট এবং সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘরে যেসব হামলা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে ২৯টি জেলাকে ঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি জেলা উচ্চ ঝুঁকিতে। ২৪টি জেলা মাঝারি ঝুঁকিতে আছে।
লিখিত বক্তব্যে সম্প্রীতি যাত্রার পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাস ও রাষ্ট্রচেতনার ভিত্তি গড়ে উঠেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সহাবস্থান এবং আধ্যাত্মিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর। আখড়া, বাউল আসর, দরগাহ ও সুফি মাজার যুগে যুগে মানুষের মন ও সমাজকে আলোকিত করেছে। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে, এই ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রগুলো ক্রমাগত সহিংসতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এসব হামলা কোনো একক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়, বরং বাংলাদেশের সামাজিক সংহতি ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলার ওপর সরাসরি আঘাত।
সম্প্রীতি যাত্রা জানায়, পূজার প্রস্তুতির মধ্যেই মণিপুরে প্রতিমা ভাঙচুর এবং কুমিল্লায় চারটি মাজারে হামলা হয়েছে। রাজবাড়ীতে এক ব্যক্তির লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে ফেলার মতো পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছে।
একটি জাতীয় পত্রিকার বরাত দিয়ে জানানো হয়, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসেই ৮০টি মাজার ও দরগায় হামলা হয়েছে। সংখ্যালঘু, সুফি, বাউল এবং আদিবাসীসহ সব ধরনের প্রান্তিক গোষ্ঠী আজ ঝুঁকির মুখে।
সংগঠনটি জানায়, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ৬ হাজার ৬০০টি সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। এর কোনোটির বিচার হয়নি। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও তাদের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো খুবই উদাসীন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়তি শঙ্কার কথা তুলে ধরে সংগঠনটি জানায়, নির্বাচনের আগমুহূর্তে সহিংসতার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ভোটের আগে-পরে সংখ্যালঘুদের আবাসিক এলাকা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় ও দরবারগুলো সহজে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
সম্প্রীতি রক্ষায় সংগঠনটি বেশকিছু পদক্ষেপ নেবে বলে জানায়। সেগুলোর মধ্যে স্থানীয় সম্প্রীতি কমিটি গঠন, মনিটরিং ও নথিভুক্তি, গুজব প্রতিরোধে তথ্য প্রবাহ, দ্রুত সহায়তা কাঠামো, প্রতিবেদন ও নীতি প্রস্তাব।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রীতি রক্ষায় সবচেয়ে বড় শক্তি হলো জনগণ। তাই, আপনার এলাকায় কোনো হুমকি, উসকানি বা গুজব বা আক্রমনের আশঙ্কা দেখা দিলে অবিলম্বে নির্ধারিত চ্যানেলে রিপোর্ট করুন, প্রমাণ সংরক্ষণ করুন, কমিটিতে সক্রিয় হোন, গুজব প্রতিরোধ করুন।
নাগরিকদের জীবন, সম্পদ, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সম্প্রীতি যাত্রা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক