৭০-৮০ আসনে ভোট চুরি হয়েছে, নইলে প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না মোদি: দাবি রাহুলের
Published: 7th, August 2025 GMT
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দুই দিন আগেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ এনে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর কথা বলেছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কংগ্রেস সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মধ্য দিয়ে সেই ‘বোমা’ ফাটিয়ে তিনি বললেন, বিজেপিকে জেতানোর জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। দেদার ভোট চুরি করে চলেছে।
মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের ভোট দৃষ্টান্ত তুলে ধরে রাহুল বলেন, ইসি যদি ভোট চুরি না করত, ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। ৭০-৮০ আসনে ভোট চুরি হয়েছে। ১০-১৫টি আসনেও যদি ভোট চুরি না হতো, তাহলে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না।
দুই দিন আগে রাহুল যে অভিযোগ মৌখিকভাবে করেছিলেন, আজ বৃহস্পতিবার তা অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনের মধ্য দিয়ে ‘তথ্যসহকারে’ তিনি দেখিয়ে দিলেন। তিনি দাবি করলেন, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড় বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল। কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রের ভোটের সময় তা দৃঢ় হয়।
ওই দুই রাজ্যের উদাহরণ টেনে রাহুল বলেন, কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভায় ভোট চুরির ঘটনা ভয়ংকর। সেখানে এক লাখের বেশি ভোট চুরি হয়েছে।
রাহুলের দাবি, ওই একটি বিধানসভা কেন্দ্রের বদৌলতে কংগ্রেস লোকসভা আসনটি মাত্র ৩২ হাজারের ব্যবধানে হেরে যায়। অথচ মহাদেবপুরা ছাড়া বাকি সব কটি বিধানসভা কেন্দ্রেই কংগ্রেস জিতেছিল। মহাদেবপুরায় বিজেপির সঙ্গে ব্যবধান ছিল লক্ষাধিক।
কংগ্রেসের অন্তঃ তদন্তের প্রতিবেদন পেশ করে রাহুল দেখান, ৪০ হাজার ভোটারের ঠিকানা ভুয়া। ডুপ্লিকেট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। বহু ভোটারের নাম একাধিক বুথে নথিবদ্ধ। সাড়ে ১০ হাজার ভোটারের ঠিকানা এক। ছবিহীন ভোটার কার্ডের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি। সাড়ে ৩৩ হাজার ক্ষেত্রে ফর্ম ৬-এর অপব্যবহার দেখা গেছে।
রাহুল গান্ধী দাবি করেন, কর্ণাটকে ভোট চুরি না হলে লোকসভা ভোটে তাঁরা ১৬টি আসন জিততেন। সে জায়গায় জেতেন মাত্র ৯টি।
একইভাবে মহারাষ্ট্র প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, সেখানে লোকসভা ভোটে ৪৮ আসনের মধ্যে ইন্ডিয়া জোট ৩০টিতে জিতেছিল। অথচ পাঁচ মাস পর বিধানসভা ভোটে দেখা গেল, বিরোধীরা ৫০ আসনের গণ্ডি ডিঙাতে পারল না! এর প্রধান কারণ মাত্র পাঁচ মাসে ৪০ লাখ ভোটারের নাম তালিকায় তুলে দেওয়া হয়।
বিজেপি-ইসি যোগসাজশের অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, এ কারণেই বিজেপিকে ক্ষমতায় থাকার কুফল ভুগতে হয় না। জনমত এক কথা বলে, অথচ ভোটের ফল অন্য কিছু দেখায়। হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র একের পর এক উদাহরণ। কারচুপি করে যে জয় তা লুকাতে একেকটা ‘সাফল্য’ কারণ হিসেবে হাজির করা হয়। কোথাও লাডলি বহিন, কখনো পুলওয়ামা, কখনোবা ‘অপারেশন সিঁদুর’।
ইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, চাওয়া সত্ত্বেও ইসি তাঁদের তথ্য দিতে অস্বীকার করে। বহু ক্ষেত্রে তথ্য নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে ডিজিটাল ভোটার তালিকা দিতেও তারা অস্বীকার করছে। ওই তালিকা পেয়ে কারচুপি ধরা সহজ হয়ে যায়।
ইসির পদাধিকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে রাহুল বলেন, ‘আপনারা যে পদেই থাকুন কাউকে, রেয়াত করা হবে না।’
কর্ণাটকের ভোট চুরির অভিযোগ উড়িয়ে নির্বাচন কমিশন রাহুলকে বলেছে শপথ নিয়ে হলফনামা দিয়ে তাঁর অভিযোগ পেশ করতে।
জবাবে রাহুল বলেন, জনতাকে যা বলেছেন, তা থেকে তিনি সরে আসবেন না। সেটাই তাঁর শপথ। রাহুল বলেন, যা তিনি জনতাকে দেখিয়েছেন, প্রমাণ হিসেবে যা হাজির করেছেন, সব নির্বাচন কমিশনেরই তথ্য।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র হ ল বল ন ব ধ নসভ ল কসভ
এছাড়াও পড়ুন:
বাসে নারী আসন
রাজধানী ঢাকায় নারীদের নিরাপদ যাতায়াত এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। প্রতিদিন অসংখ্য নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান কিংবা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাসে যাতায়াত করেন। কিন্তু এ যাত্রা তাঁদের অনেকের জন্যই এক কঠিন এবং হয়রানিমূলক অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়। বাসে ওঠার মুহূর্ত থেকে নামা পর্যন্ত নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যতম হলো সংরক্ষিত আসন থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার করতে না পারা।
নারীদের জন্য নির্ধারিত আসনের সংখ্যা যেমন অপ্রতুল, তেমনি ওই আসনগুলোতে পুরুষ যাত্রীদের দখলদারত্ব প্রায় স্বাভাবিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিনিয়ত দেখা যায়, নারী যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকলেও সংরক্ষিত আসনে বসে থাকা পুরুষ যাত্রীরা উঠতে অনাগ্রহী। কেউ ভান করেন ঘুমিয়ে আছেন, কেউ নিরুত্তর থাকেন, আবার কেউ কেউ অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করতেও পিছপা হন না। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো তাচ্ছিল্য ও বিদ্রূপের শিকার হতে হয়। ফলে নারীরা শুধু শারীরিক কষ্টে নয়, প্রতিনিয়ত মানসিক হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
মো. রিয়াদ হোসেন
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ