টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় এখনো জেলার প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। ফেরি বন্ধ থাকায় বন্ধ রয়েছে রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কে বাস চলাচলও। তবে গতকালের বৃহস্পতিবারের চেয়ে আজ শুক্রবার হ্রদের পানি কিছুটা কমেছে।

কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঁধের ১৬টি গেট দিয়ে সাড়ে তিন ফুট করে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে কর্ণফুলী নদীতে স্রোত বেড়েছে। এ কারণে চন্দ্রঘোনা ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ বেলা ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফেরি বন্ধ থাকায় রাঙামাটি-কাপ্তাই ও বান্দরবান সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো.

মাহমুদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে যাওয়ায় আমরা কয়েক দফায় পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়েছি। গতকাল বৃহস্পতিবারের চেয়ে আজ শুক্রবার হ্রদে পানি কিছুটা কমেছে। আজ সকালে হ্রদে পানির উচ্চতা রয়েছে ১০৮ দশমিক ৭৪ ফুট। গতকাল ছিল ১০৮ দশমিক ৮৩ ফুট।’

জানতে চাইলে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, আজকেও ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কাপ্তাই বাঁধে পানিনিষ্কাশনের ওপর ফেরি চলাচল নির্ভর করছে। বাঁধ কর্তৃপক্ষ যদি পানি ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়, তখন তাঁরা ফেরি চলাচল শুরু করতে পারবেন।

কাপ্তাই হ্রদের পানিতে রাঙামাটি সদর, বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার প্রায় ২ হাজার ৫০০ পরিবার আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পানিবন্দী রয়েছে। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০৩টি পরিবার রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চার দিন ধরে রাঙামাটি শহরের বিহারপুর ও মাস্টারপাড়া এলাকার ৬০টি, বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ও আমতলীয় ইউনিয়নের ৩০০টি, সদর এলাকায় ২০০টি ও লংগদু উপজেলায় প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী।

এ ছাড়া জেলার মানিকছড়ি এলাকার বিসিক শিল্পনগরও হ্রদের পানিতে তলিয়ে রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৪০টি কারখানা প্লাবিত হলেও আজ পানি রয়েছে ১৫টিতে। তবে শিল্পনগর এলাকায় তিন সড়কে এখনো পানি রয়েছে। এ কারণে এসব সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল এবং মালামাল ওঠানো–নামানো করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

জানতে চাইলে রাঙামাটি শহরের বিহারপুর এলাকার শিপন চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দ্বীপ ও মাস্টারপাড়া এলাকাসহ কয়েক জায়গায় প্রায় ৬০ পরিবার পানিবন্দী। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বাঘাইছড়ি আমতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. হাফিজ উদ্দিন ও মো. রহমত উল্লাহ বলেন, বন্যা সৃষ্টি হওয়ায় তাঁদের ইউনিয়নের চারটি গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চলাচলের সড়ক ডুবে যাওয়ায় নৌকা ছাড়া কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না।

পানিবন্দী বেশ কিছু এলাকায় জরুরি খাবার সহায়তা দিয়েছে প্রশাসন। লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে যাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন, প্রশাসন থেকে তাঁদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া বাকিদের শুকনা খাবারসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল বন ধ র গতক ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনা দলের কে কত গোল করেছেন, ট্রফি জিতেছেন কে বেশি

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রায় তিন বছর কেটে গেল। এ সময়ে কেমন করলেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা? পরিসংখ্যানে বিস্তারিত জানিয়েছে আর্জেন্টিনার অনলাইন সাময়িকী ‘এল গ্রাফিকো’।

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় ১৮ ডিসেম্বর। সেই ম্যাচের পর আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ২৩ জন খেলোয়াড় এ পর্যন্ত ক্লাব ও জাতীয় দলের জার্সিতে গোল করেছেন। মোট গোলসংখ্যা ৫১৪টি, শিরোপা ৫৭টি। শিরোপাগুলো ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে জিতেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুনঅভিষেক থেকে আজও—টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব মানে মেসি অপরাজেয়২০ ঘণ্টা আগে

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রথম গোল হুয়ান ফয়থের। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে গোল করেন ভিয়ারিয়ালের এই রাইটব্যাক। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের মধ্যে বিশ্বকাপ জয়ের পর ফয়থই প্রথম গোল করেন। শততম গোলটি রোমা মিডফিল্ডার পাওলো দিবালার। ২০২৩ সালের ৩১ মে সেভিয়ার বিপক্ষে। ২০০তম গোল হুলিয়ান আলভারেজের। এফএ কাপে হাডার্সফিল্ডের বিপক্ষে ৫–০ গোলের জয়ে গোলটি করেন ম্যানচেস্টার সিটি তারকা।

গত বছর ১৫ জুন গুয়াতেমালার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর তাদের সে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের মধ্যে এটি ছিল ৩০০তম গোল। এ বছর ৬ জানুয়ারি ইতালিয়ান সুপার কাপে এসি মিলানের বিপক্ষে লাওতারো মার্তিনেজের গোলটি ৪০০তম। আর গত ৯ জুলাই নিউ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির হয়ে মেসির করা গোলটি ছিল ৫০০তম।

আরও পড়ুনচীন সফর বাতিল করে অক্টোবর ও নভেম্বরে যাদের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা৩ ঘণ্টা আগে

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের মধ্যে এ সময়ে সবচেয়ে বেশি গোল ইন্টার স্ট্রাইকার লাওতারো মার্তিনেজের। ৮২ গোল করেছেন। তাঁর চেয়ে এক গোল কম করে মেসি আছেন দুইয়ে। ৬৪ গোল নিয়ে তিনে আতলেতিকো মাদ্রিদ স্ট্রাইকার হুলিয়ান আলভারেজ। ৪৮ গোল নিয়ে চারে আনহেল দি মারিয়া ও পাওলো দিবালা ৩৬ গোল করে পাঁচে।

বিশ্বকাপজয়ী এই স্কোয়াডের মধ্যে বিশ্বকাপ জয়ের পর সবচেয়ে বেশি ট্রফি জিতেছেন আলভারেজ। গত বছর আগস্টে আতলেতিকোয় যোগ দেওয়ার আগে সিটির হয়ে ছয়টি ট্রফি জেতেন, অন্যটি জাতীয় দলের হয়ে কোপা আমেরিকা। বেনফিকার হয়ে ৪টি ও আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকাসহ মোট ৫টি ট্রফি জিতে দুইয়ে নিকোলাস ওতামেন্দি। সমান চারটি করে ট্রফি জিতেছেন মার্তিনেজ ও মেসি।

আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকার লাওতারো মার্তিনেজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ