রাঙামাটিতে এখনো পানিবন্দী আড়াই হাজার পরিবার
Published: 8th, August 2025 GMT
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় এখনো জেলার প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। ফেরি বন্ধ থাকায় বন্ধ রয়েছে রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কে বাস চলাচলও। তবে গতকালের বৃহস্পতিবারের চেয়ে আজ শুক্রবার হ্রদের পানি কিছুটা কমেছে।
কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঁধের ১৬টি গেট দিয়ে সাড়ে তিন ফুট করে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে কর্ণফুলী নদীতে স্রোত বেড়েছে। এ কারণে চন্দ্রঘোনা ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ বেলা ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফেরি বন্ধ থাকায় রাঙামাটি-কাপ্তাই ও বান্দরবান সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো.
জানতে চাইলে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, আজকেও ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কাপ্তাই বাঁধে পানিনিষ্কাশনের ওপর ফেরি চলাচল নির্ভর করছে। বাঁধ কর্তৃপক্ষ যদি পানি ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়, তখন তাঁরা ফেরি চলাচল শুরু করতে পারবেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানিতে রাঙামাটি সদর, বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার প্রায় ২ হাজার ৫০০ পরিবার আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পানিবন্দী রয়েছে। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০৩টি পরিবার রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চার দিন ধরে রাঙামাটি শহরের বিহারপুর ও মাস্টারপাড়া এলাকার ৬০টি, বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ও আমতলীয় ইউনিয়নের ৩০০টি, সদর এলাকায় ২০০টি ও লংগদু উপজেলায় প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী।
এ ছাড়া জেলার মানিকছড়ি এলাকার বিসিক শিল্পনগরও হ্রদের পানিতে তলিয়ে রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৪০টি কারখানা প্লাবিত হলেও আজ পানি রয়েছে ১৫টিতে। তবে শিল্পনগর এলাকায় তিন সড়কে এখনো পানি রয়েছে। এ কারণে এসব সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল এবং মালামাল ওঠানো–নামানো করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জানতে চাইলে রাঙামাটি শহরের বিহারপুর এলাকার শিপন চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দ্বীপ ও মাস্টারপাড়া এলাকাসহ কয়েক জায়গায় প্রায় ৬০ পরিবার পানিবন্দী। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বাঘাইছড়ি আমতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. হাফিজ উদ্দিন ও মো. রহমত উল্লাহ বলেন, বন্যা সৃষ্টি হওয়ায় তাঁদের ইউনিয়নের চারটি গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চলাচলের সড়ক ডুবে যাওয়ায় নৌকা ছাড়া কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না।
পানিবন্দী বেশ কিছু এলাকায় জরুরি খাবার সহায়তা দিয়েছে প্রশাসন। লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে যাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন, প্রশাসন থেকে তাঁদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া বাকিদের শুকনা খাবারসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল বন ধ র গতক ল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সহ-উপাচার্য, প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। সংগঠনটি বলছে, ছাত্র নামক সন্ত্রাসীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ (পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন) থাকবে।
সোমবার রাতে রাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. আবদুল আলিম এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মাদ আমীরুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাবির সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) দাপ্তরিক কাজ শেষে দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। এ অবস্থায় কতিপয় ছাত্র তাঁকে গাড়ি থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয় ও অশালীন উক্তি করে। এরপর তিনি হেঁটে তাঁর বাসভবনে ঢুকতে গেলে প্রধান ফটকে তারা তালা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সহ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দিকে যেতে চাইলে এই ছাত্র নামক সন্ত্রাসীরা তাঁকেসহ প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা করে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বেলা ১১টায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বহিষ্কার এবং ক্যাম্পাসের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা ও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোরালো দাবি জানান।