মানিকগঞ্জ জেলায় গবাদিপশুর চিকিৎসা সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জনবল ঘাটতি এবং অতিরিক্ত অর্থ দাবির কারণে সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খামারিরা। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পশু সেবা ও কল্যাণ কেন্দ্র। ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অসংখ্য পশু, যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জনবল সংকটের কারণেই সেবা ব্যাহত হচ্ছে। খামারিদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা পেতে দিতে হয় অতিরিক্ত টাকা; অন্যথায় চিকিৎসা মেলে না।

শিবালয় উপজেলার খামারি আশিকুর রহমান শ্রাবণ বলেন, “সরকারি চিকিৎসক না পেয়ে হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল। ভুল চিকিৎসার কারণে ১০ দিনের মাথায় গরুটি মারা যায়। ক্ষতি হয়েছে দেড় লাখ টাকারও বেশি।”

ঘিওর উপজেলার খামারি আলতাফ হোসেন বলেন, “উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস অনেক দূরে। অসুস্থ গরু নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। ফোন করলেও চিকিৎসক সাড়া দেন না। একবার ভুল ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছিলাম। একদিনেই তিনটি গরু মারা গেল।”

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খামারি সর্দার মোশাররফের অভিযোগ, “পল্লী চিকিৎসকের তুলনায় সরকারি চিকিৎসকদের কাছে যেতে তিনগুণ খরচ হয়। সরকারি সহায়তা শুধু তাদেরই জন্য, যাদের সঙ্গে দপ্তরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড.

মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, “মানিকগঞ্জে পশু চিকিৎসক সংকট মারাত্মক। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জেলায় প্রায় ১২ হাজার ছোট-বড় খামার রয়েছে, কিন্তু চিকিৎসাসহ ৫৫টি পদ এখনো শূন্য। এছাড়া ইউনিয়ন ও দুর্গম এলাকার ৩০টি পশু সেবা ও কল্যাণ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে।”

ঢাকা/চন্দন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ চ ক ৎসক সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গুলি ছুড়ে প্রহরীদের ভয় দেখিয়ে বনের গাছ কেটে নিল দুর্বৃত্তরা

হবিগঞ্জে বনে ঢুকে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও বনপ্রহরীদের ভয় দেখিয়ে ২০ থেকে ২৫টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে একদল দুর্বৃত্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বনাঞ্চল রেমা–কালেঙ্গায় এ ঘটনাটি ঘটে।

বন বিভাগের হবিগঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের জনবল কম। যে কারণে ৫০ থেকে ৬০ জনের বনদস্যু দল বনের ভেতরে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক তৈরি করে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

১ হাজার ৮০০ একর আয়তনের এই সংরক্ষিত বনের ভেতরে সেগুনগাছসহ নানা প্রজাতির গাছগাছালি রয়েছে। সম্প্রতি এ বনের গাছ কেটে নেওয়াসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বনের হিমানিয়া বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে। তারা বনে ঢুকে প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গুলির আওয়াজ শুনে বনপ্রহরীরা এগিয়ে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করেও গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় প্রহরীরা পাল্টা গুলি চালান। একপর্যায়ে বনদুস্যদের তাড়া খেয়ে বনপ্রহরীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা বনের ভেতর থেকে একে একে ২০ থেকে ২২টি সেগুনগাছ কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে আজ শুক্রবার সকালে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

রেমা–কালেঙ্গা বন কর্মকর্তা (রেঞ্জার) আবদুল খালেক বলেন, প্রহরীদের লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি ছুড়লে তাঁরা পিছু হটেন। কারণ, এ সময় মাত্র তিন প্রহরী দায়িত্বরত ছিলেন। এর বিপরীতে দুর্বৃত্তরা ছিল বেশ সংঘবদ্ধ। বন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বনদস্যুরা বেশি গাছ নিতে পারেনি। সেগুন ও আকাশমণি জাতের ২০ থেকে ২২টি গাছ নিয়ে গেছে। আমরা কিছু উদ্ধার করতে পেরেছি। দুর্বৃত্তরা আধুনিক করাত ব্যবহার করে। এই করাত দিয়ে তিন থেকে চার মিনিটে একটি কাছ কাটা যায়।’

হবিগঞ্জ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, এত বড় বন কমসংখ্যক জনবল দিয়ে সংরক্ষণ করা কঠিন। এ ছাড়া বনের কর্মকর্তা ও বনপ্রহরী সবাই এ বনে নতুন যোগদান করেছেন। যে কারণে তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই এ ঘটনাটি ঘটে। তিনি বলেন, কী পরিমাণ গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা, তা নির্ণয় ও তদন্তকাজ চলছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গুলি ছুড়ে প্রহরীদের ভয় দেখিয়ে বনের গাছ কেটে নিল দুর্বৃত্তরা