গ্রেটওয়াল সিরামিকসের গাজীপুরে কারখানায় মাসে টাইলসের উৎপাদন সক্ষমতা ১ কোটি বর্গফুট। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর চাহিদা কমে যাওয়ায় কারখানার পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে দুটি বন্ধ। তারপরও যেটুকু উৎপাদন হচ্ছে, সেটুকু বিক্রি হচ্ছে না। গুদামে জমছে পণ্য। ফলে মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গ্রেটওয়াল সিরামিকসের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে টাইলসের বেচাবিক্রিতে মন্দাভাব চলছে। আগে স্বাভাবিক সময়ে আমরা মাসে গড়ে ৯০ লাখ বর্গফুট টাইলস বিক্রি করতাম। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিক্রি অনেক কমে গেছে। গত মাসে টাইলস বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ লাখ বর্গফুট।’
গ্রেটওয়ালের মতো দেশের অধিকাংশ টাইলস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমেছে। প্রতিষ্ঠানভেদে বিক্রি কমার হার ১৫-৪০ শতাংশ। এই অবস্থায় উৎপাদন কমিয়ে, মূল্যছাড় দিয়ে কোনো রকমে ব্যবসায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে কোম্পানিগুলো। একাধিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা গেলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
সিরামিক খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ পুরো নির্মাণ খাতেই বড় ধাক্কা লাগে। মূলত সরকারের উন্নয়নকাজে ধীর গতি আর বেসরকারি আবাসন খাতে মন্দার কারণে নির্মাণ খাতের ব্যবসায় প্রভাব পড়ে। ফলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরলে ব্যবসায়ও গতি ফিরে আসবে বলে মনে করেন তাঁরা।
সামগ্রিকভাবে টাইলসের বেচাবিক্রি ১৫-২০ শতাংশ কমেছে। বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। মইনুল ইসলাম, সভাপতি, বিসিএমইএজানতে চাইলে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, সামগ্রিকভাবে টাইলসের বেচাবিক্রি ১৫-২০ শতাংশ কমেছে। বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বিসিএমইএর তথ্যানুযায়ী, দেশের টাইলসের বার্ষিক বাজার প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার। এই চাহিদার ৮৫ শতাংশ দেশীয় কারখানাগুলো সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে ৩১ টাইলস কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানে ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
দেশে টাইলস উৎপাদনকারী শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি শেলটেক সিরামিকস। ভোলায় তাদের নিজস্ব কারখানায় তিনটি ইউনিটে প্রতিদিন সাড়ে ৪ লাখ বর্গফুট টাইলস উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৩০-৪০ শতাংশ কম। বিক্রি কমে যাওয়ায় গুদামে টাইলসের মজুত বাড়ছে।
বিক্রি কমে যাওয়ায় অন্য ব্যবসা থেকে টাকা এনে খরচ চালাতে হচ্ছে। তবে বছরের পর বছর সেটি করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে না।তানভীর আহমেদ, চেয়ারম্যান, শেলটেক সিরামিকসজানতে চাইলে শেলটেক সিরামিকসের চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিক্রি কমে যাওয়ায় অন্য ব্যবসা থেকে টাকা এনে খরচ চালাতে হচ্ছে। তবে বছরের পর বছর সেটি করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে না। ফলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে যা যা করণীয়, সেসব করতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সিরামিক খাতের মূল কাঁচামাল খনিজ মাটি, ক্লে ও খনিজ পদার্থ, ফেলস্পার আমদানি হয়েছে ২২ লাখ ৬২ হাজার টন। তার আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছর আমদানি হয়েছিল ২২ লাখ ৮৭ হাজার টন। তার মানে, গত বছর কাঁচামালের আমদানি কমেছে প্রায় ১ শতাংশ।
মন্দার বাজারে কোনো প্রতিষ্ঠান ভালোও করেছে। যেমন—টাইলস উৎপাদনে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি আকিজ সিরামিক। ময়মনসিংহের ভালুকায় তাদের কারখানায় দিনে ৭৫ হাজার বর্গমিটার টাইলস উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। গত অর্থবছর প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি ৩ শতাংশ বেড়েছে বলে জানালেন আকিজ বশির গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।
অবশ্য সামগ্রিকভাবে টাইলসের বাজার ভালো নয় বলে মন্তব্য করলেন বিসিএমইএর সভাপতি মইনুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস কিনছে না। যদিও আগের চেয়ে পরিস্থিতি ভালো। তবে পূর্ণ সক্ষমতা অনুযায়ী গ্যাস মিলছে না। অনেকেই বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করেছেন। এতে খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া সরকারি প্রকল্পের গতি কমে যাওয়া ও আবাসন খাতের ব্যবসা কমে যাওয়ায় টাইলসে বেচাবিক্রি কমেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার এলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। বিদেশি বিনিয়োগও আসবে। গ্যাসের জোগানও বাড়বে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট ইলস র ব চ ব ক র ন ল ইসল ম র জন ত ক র ব যবস ব যবস য় গত বছর সরক র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার মানুষের মাথাপিছু আয় ৫১৬৩ ডলার
ঢাকা জেলার মানুষের গড়ে মাথাপিছু আয় বর্তমানে ৫ হাজার ১৬৩ মার্কিন ডলার। এটি দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয়ের প্রায় দুই গুণের কাছাকাছি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত অর্থবছর (২০২৪–২৫) শেষে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক প্রণয়নবিষয়ক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ঢাকার মানুষের মাথাপিছু আয়ের এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা চেম্বার জানায়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১১ সালে করা জেলাভিত্তিক জিডিপির তথ্যকে ভিত্তি ধরে এ জেলার বিনিয়োগ, ভোগ, ব্যয়, আমদানি, রপ্তানি, আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা জেলার মাথাপিছু আয়ের এ হিসাব অনুমান করা হয়েছে। যদিও ঢাকার মাথাপিছু আয় ও জিডিপির এসব তথ্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি।
সর্বশেষ গত মে মাসে জাতীয় মাথাপিছু আয়ের তথ্য প্রকাশ করে বিবিএস। এতে উঠে আসে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন (২০২৪–২৫ অর্থবছর) ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার। এই মাথাপিছু আয় এযাবৎকালের রেকর্ড। এর আগের অর্থবছরের চেয়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৮২ ডলার। গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। তবে বিবিএস বিভাগ বা জেলাভিত্তিক মাথাপিছু আয়ের হিসাব করে না।
মাথাপিছু আয় ব্যক্তির একক আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরীণ আয়ের পাশাপাশি প্রবাসী আয়সহ যত আয় হয়, তা একটি দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে এই হিসাব করা হয়।
বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, ২০২১–২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। এরপর ২০২২–২৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৪৯ ডলারে। গত অর্থবছরে তা আরও কমে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার হয়। মূলত ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বিবিএসের হিসাবে মাথাপিছু আয়ের পার্থক্য হয়।
কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ ঢাকায়আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি জানান, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বড় একটি অংশ সম্পন্ন হয় ঢাকা জেলায়। দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ আসে এই জেলা থেকে। ঢাকাকে বিবেচনা করা হয় আর্থিক খাতের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সাড়ে ৭০০–এর বেশি কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঢাকা জেলায় অবস্থিত।
আসাদুজ্জামান জানান, দেশের শহুরে জনসংখ্যার ৩২ শতাংশের বাস ঢাকা জেলায়। আর মোট জনসংখ্যার ১১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ঢাকায় থাকেন। ঢাকা খুবই শিল্পঘন জেলা। দেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪০ শতাংশের বেশি হয় এ জেলা থেকে। সব মিলিয়ে মোট দেশজ আয়ে (জিডিপি) এককভাবে ৪৬ শতাংশ অবদান রাখছে ঢাকা জেলা।
ইপিআই সূচক চালু করবে ঢাকা চেম্বারদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা চেম্বার। প্রতি তিন মাস পরপর ইপিআই সূচক প্রকাশ করা হবে। এতে মূলত শিল্প ও সেবা খাতের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন চিহ্নিত করা হবে এবং তার আলোকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।
ঢাকা চেম্বারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় ইপিআই সূচক নির্ধারণের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিমাপের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন সূচক, যেমন বিসিআই, ইজ অব ডুইং বিজনেস ইনডেক্স, জিডিপি প্রভৃতি রয়েছে। তবে এসব সূচক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রকৃত পরিবর্তন ও কারণগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত করতে পারে না। সরকার অনেক সময় ভূ–অর্থনৈতিক পটভূমি নীতিনির্ধারণ করে, কিন্তু হালনাগাদ তথ্য না থাকায় সেগুলো সব সময় কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না।
এমন বাস্তবতায় ইপিআই সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তাসকিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকা জেলাকে কেন্দ্র করে এই সূচক প্রকাশ করা হবে। ভবিষ্যতে সারা দেশে এর আওতা বাড়ানো হবে।
তাসকিন আহমেদ আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক কার্যক্রম মূল্যায়নের প্রচলিত পদ্ধতিতে আমরা সাধারণত বার্ষিক বা প্রান্তিক জাতীয় হিসাবের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দ্রুত পরিবর্তনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও ব্যবসায়িক আস্থা মূল্যায়নে রিয়েলটাইম বা হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণ জরুরি।’
ডিসিসিআই প্রণীত ইপিআই দেশের উৎপাদন ও সেবা খাতের কার্যক্রম ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে মূল্যায়ন করবে। এর মাধ্যমে উৎপাদন, বিক্রয়, রপ্তানি, ক্রয়াদেশের প্রবাহ, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের প্রবণতা জানা সম্ভব হবে। প্রাথমিকভাবে সূচকের হিসাবে ছয়টি উপখাত রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে তৈরি পোশাক, বস্ত্র, পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়, আবাসন, পরিবহন ও সংরক্ষণ এবং ব্যাংক খাত।
অর্থনীতি ভালো করছেগত বছরের দুটি প্রান্তিকের তথ্য নিয়ে প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক অবস্থান সূচকের (ইপিআই) তথ্য প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার। এ জন্য শূন্য থেকে এক পর্যন্ত মোট ছয়টি স্কোর নির্ধারণ করেছে তারা। এগুলো হচ্ছে (অর্থনীতির গতি) খুবই কম, কম, মাঝামাঝি, বেশি ও অনেক বেশি। এর মধ্যে শূন্য দশমিক ৮০ স্কোর পেয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে ঢাকা জেলার অর্থনীতি বেশি বা ভালো গতিতে এগিয়েছিল বলে জরিপে উঠে আসে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, ওই বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে অর্থনীতি অনেকটা স্তিমিত ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কিছু ত্বরিত সিদ্ধান্তের কারণে পরের প্রান্তিকে অর্থনীতি ভালো করেছে।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন সূচকে দেখা যায়, ‘দেশের অর্থনীতি ভালো করছে। কিন্তু বৈশ্বিক সূচকের কিংবা অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখতে পাই, আমরা বিভিন্ন সূচকে সবচেয়ে নিচের দিকে থাকি। তাই এসব সূচকের তথ্যে আত্মতুষ্টির কারণ নেই; বরং এসব সূচককে বৈশ্বিক মানের সঙ্গে তুলনা করে প্রকাশ করলে সেটি বেশি কার্যকর হবে।’
আর ইপিআই সূচকটি প্রতি মাসে প্রকাশ করা ও সূচকের পরিধি বাড়ানোর পরামর্শ দেন ঢাকা চেম্বারের আরেক সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) মহাপরিচালক মো. নূরুল আলম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের (এসএসজিপি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ নেসার আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক সৈয়দ মুনতাসির মামুন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম আতিকুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (এসএমইএসপিডি) নওশাদ মোস্তফা, পরিচালক মো. সালিম আল মামুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. দীন ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট মিয়া রহমত আলী প্রমুখ।