Prothomalo:
2025-12-13@10:19:58 GMT

সব পেশা লুপ্ত হয় না

Published: 26th, October 2025 GMT

‘ও মা তাড়াতাড়ি ভাত বসা। লাউ ছেকছি দিয়ি আইজ ভাত খাবোনে।’

‘লাউ কি হোলের জো মাচায় ঝোলচে যে কাইটি আইনি নাইন্দি দেবো?’

‘ও মা, ওইদ্দ্যাক বাপ লাউ ঝুলাতি ঝুলাতি বাড়ি পান আসছে।’

মা-মেয়ে কথা শেষ করতে না করতেই এ গ্রামের একমাত্র মুয়াজ্জিন কিতাব আলী তাঁর ছিন্ন কুটিরে পা রাখে। অন্যান্য গরিব মানুষের বাড়ির মতোই কিতাব আলীরও বারান্দাওয়ালা একটি খড়ের দোচালা ঘরের বাড়ি। চারপাশ খোলা। উঠানের এক কোণে মাটির চুলা। চুলায় হেলান দেওয়া ঝকঝকে তিন–চারটে হাঁড়ি কড়াই খুন্তি বেড়ি। চুলার ধার ঘেঁষে একটা ভেটুলগাছ। গাছের গোড়ায় শুকনা কলাপাতার ওপর শিল–নোরা দাঁড় করানো। পড়ে থাকা দুটো ভেটুল ঠোকরাচ্ছে খয়েরি শালিক। মেয়ের হাতে লাউটা দিয়ে পানিভর্তি চাড়ি থেকে ফুটো বাটি ভরে পানি তুলে ধূলিমাখা শীর্ণ পা ধুয়ে ফেলে কিতাব আলী। মেয়ে সইদা গামছা এগিয়ে দেয়। কিতাব আলীর বউ কিছু জিজ্ঞাসা না করেই বঁটি পেতে ঘচাং করে লাউ দুফালি করে। সইদা মাটির কলস থেকে ঝকঝকে পেতলের গ্লাসে বাপকে পানি এগিয়ে দেয়। কিতাব আলীর কাঁচাপাকা অঘন দাড়ি বেয়ে বাড়তি পানি ঝরে পড়ে। সইদা পরম আদরে গামছা দিয়ে বাপের মুখ মুছিয়ে দেয়। বাপের মাথা থেকে ছেঁড়াফাটা টুপি খুলে দিতে দিতে বলে, ‘এত কইরি বুললাম টুপিখান থুয়ি যাও, শিলাই কইরি দেবোনে। একদিন মাতায় গামছা পেঁচি আজ্জান দিলি কি আল্লা বেজার হইতু?’

মুয়াজ্জিনকে গ্রামের মানুষ বলে মজ্জেম। কিতা মজ্জেম। প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকেরা পড়া ধরলে বাচ্চারা উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলে শিক্ষক তাদের বেত উঁচিয়ে বলেন, ‘কিরে, কিতা মজ্জেম হলি কবেত্তি?’ কিতাব আলী যেটুকু কথা তা তার মেয়ের সঙ্গেই বলে।

কিতাব আলী অতি স্বল্পভাষী হাড্ডিসার ঢ্যাঙা একটা মানুষ। তার বউও তাকে সময়ে অসময়ে বলে ‘কতার জবাব দ্যাও না ক্যান? তুমাক কি বুবায় ধরে?’

মুয়াজ্জিনকে গ্রামের মানুষ বলে মজ্জেম। কিতা মজ্জেম। প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকেরা পড়া ধরলে বাচ্চারা উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলে শিক্ষক তাদের বেত উঁচিয়ে বলেন, ‘কিরে, কিতা মজ্জেম হলি কবেত্তি?’

কিতাব আলী যেটুকু কথা তা তার মেয়ের সঙ্গেই বলে। ‘কাইল ইবারত চাচা তার ভুঁইয়ের মুলো আর বাগুন দেবে। ফজরের আজ্জান দিয়ি ফিরার পতে নি যাতি বুইল্লো।’

‘খালি তরিতরকার আনলিই হবে? ঘরে যে তেল নুন নি, তা কিডা আনবে?’—সইদার মা ছোট্ট বোতলের মুটকি খুলে কড়াইয়ের ওপর কয়েকবার ঝাঁকি দিয়ে ঝাড়ি দিল। বৃষ্টির ফোঁটার মতো দুফোঁটা পড়ল কি পড়ল না তা দেখা গেল না।

স্বাধীনতার দুবছর যেতে না যেতেই দুর্ভিক্ষ প্রত্যেক খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে হাহাকার নিয়ে এল। মুটে–মজুরেরা দিন শেষে তবু মজুরি দিয়ে দুর্মূল্যের বাজার থেকে সামান্য কিছু কিনে আনত। কিন্তু আজান দেওয়া ছাড়া কিতাব আলীর অন্য কোনো কাজের শারীরিক সক্ষমতা ছিল না। তার আজানের সুরও যে খুব শ্রুতিমধুর, তা–ও নয়। যখন সে আজানের মাঝখানে ‘হাইয়া আলাস সালাহআআআ’ বলত, তখন সেটা অনেকটা কান্নার সুরের মতো শোনাত। কিতাব আলীর একটাই গুণ, সে প্রতিদিন সঠিক সময়ে আজান দিত। কি শীত কি গ্রীষ্ম কি বর্ষা। বিনিময়ে মুখ ফুটে কারও কাছে কিছু চায়নি। চাইবে কী? ও তো কথাই বলে না। অবস্থাপন্ন গৃহস্থেরা নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বেরোনোর সময় বলে—‘কিতা, ডহর দিয়ি যাওয়ার সুমায় গাছে শইজনির ডাঁটা আছে, এক আটি পাইড়ি নিয়ি যাস।’ কিশোরেরা বলে ‘মজ্জেম চাচা, দাদি তুমার জন্যি খ্যাসারির ডাইল থুয়ি দিছে, চাচিক পাটি দিউ, দেবেনে।’ অঘ্রানে মুনশিবাড়ি আর বদি মাতবর প্রতিবছর কিতাব আলীকে দশ কাঠা করে ধান দেয়। ওতে বছর ঘোরে না। কিতাবের বউ মুনশিবাড়ি ভারা ভানত। ওখান থেকে যা পেত তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে যেত। তাহলে তেল-নুন কেনার কাঁচা টাকা? চুপচাপ ভালো মানুষ মুয়াজ্জিনকে নামাজি অবস্থাপন্নরা প্রতি জুমায় দু–দশ টাকা করে দিত। এই দুর্ভিক্ষের সময় মুন্সিরা কিতাব আলীর বউকে ছাড়িয়ে দিয়েছে।

সইদা বড় হচ্ছে। ক্লাস ফাইভে দুবার ফেল করার পর আর স্কুলে যায় না। সবেধন নীলমণি। মা টিপে টিপে খাইয়ে শরীরটা বেশ নধরকান্তি। বাড়ির ছোট্ট উঠান ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করে, ভেটুলের পড়ে থাকা শুকনা পাতা গুছিয়ে মায়ের মেটে চুলার পাশে পালা মেরে রাখে। শাড়ি হাঁটুর ওপর তুলে পিঁড়িতে বসে দুলে দুলে যখন ছাই দিয়ে হাঁড়িকুঁড়ি মাজতে থাকে, তখন পাশের বাড়ির লেকু খাঁকারি দিয়ে পথ পেরোয়। তার ঘরে দুই বউ। রাতদিন খিটিমিটি।

‘তোক কিডা মাজাঘষা করতি বুইললো? পিঁড়ির পোর গিয়ি বাপের নুঙ্গিডা শিলাই কর। পুঙার কাছ এক হাত ফাইড়ি গিইচে।’ মেয়েকে লেকুর চোখ থেকে সরাতে সইদার মায়ের এ কৌশল।

এক রাতে কিতাব আলীর বাড়িতে বেশ রাত অবধি আলো জ্বলতে দেখা গেল। পাড়ার বউঝিদের কথা শোনা যাচ্ছিল। এমনকি গানের সুরও ভেসে এল—

‘বাজনা বাজে পটকা ফোটে কব আমি কি, ও না হা রে

কিপ্টার বেটা আইলো দেখ মুকুট মাথায় দি, কি না হা রে’

কোনো এক ভিনগাঁয়ের মুনিষ ভরদুপুরে কিতাব আলীর বাড়ি এসে তৃষ্ণার জল চায়। সইদা তখন শাড়ি গুটিয়ে পায়ের থোড়া বের করে আখা লেপছিল। লোকটা দেখনাই বটে। বয়স একটু বেশি। কিতাব আলীর বউ আলুভর্তা আর একটা ডিম প্রায় আতেলা ভেজে তার থেকে তিন ভাগ করে এক ভাগ আগন্তুকের পাতে দেয়। বাকি দুই টুকরা বাপ-বেটির জন্য রাখে। লোকটার সব কথা কিতাব আলীর বউ বিশ্বাস করে।

কিতাব মজ্জেম আসরের আজান দিয়ে বাড়ি ফিরে দেখে এক সুপুরুষ দাওয়ায় বসে দাঁতে কাঠি দিচ্ছে। বউ আড়ালে ডেকে সব ভেঙে বলে। কিতাব আলী হ্যাঁ-না কিচ্ছু বলে না। আগন্তুক হাটে গিয়ে একটা কাঁচা রঙের লাল ডুরে শাড়ি আর একটা তিব্বত স্নো নিয়ে আসে।

‘আমার বো আইজ তিন বচ্ছর যাবত পইড়ু। দুই ছেইলিক দেইখতু আমার মা। সেও ও বছর মইরি গেল। ভাইরা সব ভেনো। আমি দ্যাশ বিদ্যাশে মুনিষগিরি করি। পইড়ি থাকা মানুষ নিয়ি আর কদ্দিন থাকা যায়?’

কিতাব মজ্জেম আসরের আজান দিয়ে বাড়ি ফিরে দেখে এক সুপুরুষ দাওয়ায় বসে দাঁতে কাঠি দিচ্ছে। বউ আড়ালে ডেকে সব ভেঙে বলে। কিতাব আলী হ্যাঁ-না কিচ্ছু বলে না। আগন্তুক হাটে গিয়ে একটা কাঁচা রঙের লাল ডুরে শাড়ি আর একটা তিব্বত স্নো নিয়ে আসে। ঘরের কান্টায় সইদার মায়ের হাতে ধরা মোরগের গলায় বঁটি চালানোর আগে কিতাব আলী মিনমিন করে বলে, ‘কোন গিরামের ছেইলি, কী পরিচি, কী তার স্বভাব কিছু না জাইনি মেয়িডাক আমার.

..’

‘দুই গিরাম পরেই পুয়ালদহ গিরাম। সেই গিরামেরত্তি পিতিবচ্ছর আমাগের গাঁয় মুনিষ দিতি আসে সে। অরামধারা কাত্তিকির জো ছেইলি নিজি নিজি হাউশ করচে। মেয়ি বি দিয়ার মুরুদ আছে তুমার?’

সেই রাতেই বিয়ে পড়ানো হয়ে গেল সইদার। পাড়ার সবচেয়ে বয়স্ক সবার ‘হুরজান দাদি’ পান বানিয়ে সইদার হাতে ধরিয়ে পাছায় ছোট্ট একটা ধাক্কা মেরে ঘরের মধ্যে ঠেলে দিল। ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে বিবাহিত বেড়ার দরজা স্লো মোশনে বন্ধ হয়ে গেল।

পরদিনই সইদা মা-বাপকে কাঁদিয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে গেল। কিতাব আলী লুকিয়ে মেয়ের শাড়ির আঁচলের খুঁটে পঁয়ত্রিশ টাকা চার আনা বেঁধে দিল। নতুন জামাই বলল, ‘এক হপ্তা পরে সইদাক সাতে নি বেড়ি যাবোনে।’

এক এক করে তিন সপ্তাহ চলে গেল মেয়েজামাইয়ের আসার কোনো নাম–নিশানা নেই। মুখ বুজে থাকা কিতাব মজ্জেম একদিন ফজরের আজান দিয়ে এসেই কাঁচা ঝাল ডলে সানকির নিচে পড়ে থাকা চারটে পান্তা খেয়ে মেয়েকে দেখতে যাবার কথা বলল। এক আঁটি পুঁইশাক, কচি একটা কদু আর এক হালি ডিম ব্যাগে গুছিয়ে দিয়ে সইদার মা বলল, ‘মেয়িক আমার সাতে কইরি নিয়ি আসপা। সেকেন যায়ি মুখ বুইজি থাকপা না। জামোই আলি ভালো, না আলি বেশি নলোপতোর দরকার নি।’

মাগরিবের আজানের একটু আগে সবজিভরা ব্যাগ ফেরত এনে পিঁড়ির ওপর রাখতে রাখতে কিতাব আলী বলে, ‘পুয়ালদা ছাইড়ি তারা বডারের পানে চইলি গিচে দিন পনেরো আগে। কনে গিচে কেউ জানে না।’

সইদার মা পিঁড়ির খুঁটিতে মাথা দিয়ে মূর্তির মতো বসে থাকল। আর কিছু জিজ্ঞাসা করার নেই। পায়ের কাছে রাখা ব্যাগ থেকে গড়িয়ে পড়া তরল পায়ে লাগলে সে ব্যাগ মেলে ধরে দেখে একটা ডিম ভেঙে চটের ব্যাগের তলা ভিজে উঠেছে। সে ওভাবেই বসে থাকল। কিতাব আলী বউকে যা বলতে পারল না, তা হলো—‘ওই গিরামের এক দুকানদার বুইললো যে কোন আইক্কেলে চাঁদালি ঠগের সাতে মেয়ির বিয়ি দিউছু? সে যে গিরামে মুনিষ দিতি যায় সেকেনে বিয়ি করে। এদানে বিলাক করা শুরু কইরিচে। আগের দুই বউ ফেইলি থুয়ি তুমার মেয়িক নি বডারে চইলি গিচে।’

বেশ কয়েকটা আষাঢ় চলে গেল। কত পরিবর্তন চারদিকে। গ্রামের রাস্তায় বিজলি বাতি জ্বলে রাতে। মুন্সিরা লাইন থেকে তার টেনে নিয়ে তাদের বৈঠকখানায় লাইট দিয়েছে। পাড়ার ছেলেরা সে আলোয় ক্যারম বোর্ড খেলে। তবে চৌদ্দবার করে কারেন্ট আসে আর যায়। সবার আগে মসজিদে বিদ্যুতের লাইন এনেছে মাতবর। সামনে ইলেকশনে তার ছেলে মেম্বারের ভোট করবে। ছেলে সৌদি আরব থেকে অনেক টাকা কামাই করে এনেছে। আর কী একটা কথা বলা মেশিন এনেছে, যেটা আজানের সময় মাইকের সঙ্গে জুড়ে দিলে আপনা–আপনি আজানের রেকর্ড বাজতে থাকে। কিতাব আলী আজান দিতে দিয়ে অজু করে ওঠার সময় মাইকে আজান হয়ে যায়। কিতা মজ্জেমের দিন শেষ। দু–একজন এখনো মায়া করে তাকে আলুটা পটোলটা দেয়। কিতাব আলী লাজুক মুখচোরা মানুষ। বছরের ধান আনতে এবার আর মুনশিবাড়ি যায়নি। তবে অভ্যাসবশত আজানের সময় হলেই সে মসজিদে যায়। মনে মনে বলে—‘হে আল্লাহ! এই সুমায়ডা কারেন বন্ধ কইরি দ্যাও। তুমার নামে আজ্জানডা দিতি দ্যাও। দুইজনের প্যাটের ভাত উটি নিউ না আল্লাহ!’

কিতাব আলী মুহূর্তে লম্ফ জ্বালিয়ে মুখের সামনে ধরে। সইদা। তার কোলে বছর দু-তিনের মেয়ে ঘুমাচ্ছিল। সইদার মায়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে আতঙ্কে কান্না শুরু করে। বাপ-মা-মেয়ের আনন্দের কান্নায় জ্যোৎস্নাময় ঘাসের ওপর শিশির ফোটে। মাইকের আজান আসার পর কিতাব আলীর আয়–রোজগার একেবারে নিম্নমুখী।

সেদিন সন্ধ্যায় পিঁড়ির ওপর এক ফুঁয়ে লম্ফটা নিভিয়ে দিয়ে চাঁদের আলোয় কিতাব আলীকে দুটো খেসারির আটার রুটি আর এক ফোঁটা কুসুরের গুড় দিয়ে থালা এগিয়ে দেয় ওর বউ। নিজে কোলের মধ্যে পানির গ্লাস বসিয়ে রুটি ডুবিয়ে চিবাতে থাকে। ঠিক সেই সময় ঘরের কান্টায় মনে হচ্ছিল ভেটুলগাছের ছায়া দুলছিল। না। ছায়া না। কারও শাড়ির আঁচল নড়ছিল।

‘কিডারে ওকেনে? কিডা তুই?’—কিতার বউ পানির গ্লাস নামিয়ে এগিয়ে যায়। খানিক দম ধরে থেকে চিৎকার করে ওঠে—‘আমার সুনার ময়না পাকি রে এ–এ–এ তুই কনে ছিলি রে!’

কিতাব আলী মুহূর্তে লম্ফ জ্বালিয়ে মুখের সামনে ধরে। সইদা। তার কোলে বছর দু-তিনের মেয়ে ঘুমাচ্ছিল। সইদার মায়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে আতঙ্কে কান্না শুরু করে। বাপ-মা-মেয়ের আনন্দের কান্নায় জ্যোৎস্নাময় ঘাসের ওপর শিশির ফোটে।

মাইকের আজান আসার পর কিতাব আলীর আয়–রোজগার একেবারে নিম্নমুখী। এখন আবার চারটে পেট। সইদার স্বাস্থ্য তেমন ভাঙেনি। মেয়ের স্বাস্থ্যও খারাপ না। ওর স্বামী ওদের খাইয়ে পরিয়ে ভালোই রেখেছিল। কিন্তু কালোবাজারি করতে করতে একদিন পুলিশের সঙ্গে দরদামে না মিললে ওকে ঠ্যাঙানি দিয়ে পুলিশ ভ্যানে করে সোজা হাজত। ভাগ্য ভালো যে সইদার এক সতিনের ভাই চাঁদালি ঠগের খবর নিতে বর্ডারে হাজির হয়েছিল। সে-ই দয়া করে ওকে এ গ্রামের কালভার্ট অবধি পৌঁছে দিয়ে চলে গেছে। এখন কিতাব আলীর চোখে হারায় তার নাতনি। নাতনি কয়েক দিন বাপের জন্য কান্নাকাটি করল। এখন নানার কোল থেকে নামতেই চায় না। নিজেরা খেয়ে না–খেয়ে মেয়ে আর নাতনির জন্য অন্নের সংস্থান করতে করতেই বছর ঘুরে গেল। কিন্তু কাল-কাত্তিকে কিতাব আলী নাচার। নাতনি নানার তালপাতার সেপাইয়ের মতো গলা ধরে ঝুল খায় আর বলে—

‘আমার নানা ত্যানা ত্যানা ম্যানা গাইয়ের দুধ

খাতি চালাম দুধির সর পালাম ভুরুর খুদ।’

কিতাবের বাড়ির ডহর দিয়ে মাতবরের সৌদিফেরত ছেলে যাতায়াত করে। সইদা সাদা পায়ের গোছা বের করে ওদের চিড়ধরা মাটির ঘরের ধারিতে থপাত থপাত করে কাদা মারে। ওর নিটোল শরীর দুলে দুলে ওঠে। কিতাব মজ্জেম খালি হাতে মসজিদ থেকে ফেরে। হাঁড়িতে পানি ফুটছে। ঘরে চারটে খুদ আছে। চাল নেই। সন্ধে নামার পরপর মাতবরের তাগড়া ছেলে ঠোঙায় ভরে কলা আর বিস্কুট সইদার মেয়ের হাতে দেয়। ভেটুলগাছের নিচে নানার কোলে বসে সে দ্বিধাভরে ঠোঙা আর নানার দিকে তাকায়। সইদার মা ডহর পাহারা দিতে সেখান থেকে সরে যায়। লোকটা ঘরে ওঠে। বেড়ার দরজা ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে ঝপ করে বন্ধ হয়ে যায়। কিতাব মুয়াজ্জিনের নাতনি ঠোঙা হাতে ধরে ভীতিবিহ্বল চোখে নানার দিকে না তাকিয়ে বলে—‘নানাগো, ওই নোকটাক্‌ আমি আব্বা বুলতি পাইরবোনান বোলে।’

কিতাব মুয়াজ্জিন বোবার মতো আলাভোলা চোখে আকাশের দিকে তাকায়। তখনই মসজিদ থেকে মাইকে রেকর্ডকৃত মাগরিবের আজান ভেসে আসতে থাকে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ত ব আল র ব র জন য আজ ন দ র আজ ন আজ ন র আর এক ম তবর র ওপর র একট র সময় মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

শব্দগুলো সাজাও, বাক্য বানাও

ইংরেজি: রি–অ্যারেঞ্জ

প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় ইংরেজি ৮ নম্বর প্রশ্নটি রি–অ্যারেঞ্জের ওপর। নম্বর থাকবে ৬।

# Rearrange words in the correct order to make meaningful sentences

Set-1

a. poetry/ time/ in/ my/ free/ father/ his/ writes.

b. I/ can/ questions/ ask/ some/ you?

c. us/ let/ for/ a/ go/ picnic.

d. should/ eat/ you/ chocolate/ not/ of/ lot/ a.

e. beautiful/ girl/ the/ how/ is!

Ans:

a. My father writes poetry in his free time.

b. Can I ask you some questions?

c. Let us go for a picnic.

d. You should not eat a lot of chocolate.

e. How beautiful the girl is!

আরও পড়ুনসবুজ উদ্ভিদ থেকে খাদ্যশৃঙ্খল শুরু১০ ডিসেম্বর ২০২৫

Set-2

a. hare/ for/ slept/ hour/ an/ the.

b. walk/ you/ can’t/ faster?

c. believe/ his/ hare/ the/ couldn’t/ eyes.

d. too/ for/ play/ don’t long.

e. steady/ race/ the/ wins/ slow/ but!

Ans:

a. The hare slept for an hour.

b. Can’t you walk faster?

c. The hare couldn’t believe his eyes.

d. Don’t play for too long.

e. Slow but steady wins the race!

Set-3

a. myself/ I/ introduce/ May?

b. club/ person/ the/ a/ there/ new/ is/ in/ today.

c. down/ please/ sit.

d. hour/ I/ you/ can/ in/ meet/ an.

e. Andy/ can/ when/ meet/ Tamal?

Ans:

a. May I introduce myself?

b. There is a new person in the club today.

c. Please sit down.

d. I can meet you in an hour.

e. When can Tamal meet Andy?

ইকবাল খান, প্রভাষক
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ