যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে দাবানলে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১১ জন হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে আগুনের সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জায়গায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। শত চেষ্টার পরও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না আগুন। পুড়ে ছারখার হচ্ছে এলাকার পর এলাকা। দাবানলে এখন পর্যন্ত দেড় শ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে লুটপাট চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। লুটপাট ঠেকাতে একটি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, মৃতদের পরিচয় চূড়ান্তভাবে শনাক্ত করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। আঙুলের ছাপ কিংবা মুখমণ্ডল শনাক্তের মতো প্রচলিত উপায়ে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রাণ হারানো কয়েকজনের পরিচয় জানিয়েছে মার্কিন কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। বাবা হারানো মেয়ে বলেছেন, শেষ কথা কী হয়েছিল। ছোট বোন বলেছেন, বাড়ি ছেড়ে কিছুতেই যেতে চাননি বড় ভাই। তাই তাঁকে ফেলেই নিরাপদে সরে যান তিনি। কেউ খুঁজছেন ৮৩ বছরের স্বজনকে। কেউ আবার হারিয়েছেন প্রিয় বন্ধুটিকে। জেনে নেওয়া যাক স্বজন হারানোদের গল্পগুলো।

অ্যান্থনি মিশেল ও জাস্টিন

তাঁরা দুজন বাবা-ছেলে। অ্যান্থনি মিশেলের বয়স ৬৭ বছর। জাস্টিনের ২০ পেরিয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের আলটিডিনা এলাকায় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে থাকতেন জাস্টিন।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যান্থনি মিশেল একসময় বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন। অঙ্গহানি ঘটেছিল তাঁর। অবসরজীবন কাটাচ্ছিলেন। আর ছেলে জাস্টিন স্নায়বিক রোগে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত ছিলেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, দাবানল থেকে বাঁচতে নিরাপদে সরে যাওয়ার চেষ্টার সময় বাড়িতেই মারা যান বাবা-ছেলে। অ্যান্থনি মিশেলের মেয়ে হাজিমা হোয়াইট ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, তাঁর বাবা তাঁকে ফোন দিয়েছিলেন। ফোনে বলেছিলেন, ‘আগুন একেবারে উঠানে পৌঁছে গেছে।’

লস অ্যাঞ্জেলেসের আলটিডিনার বাড়িতে ফিরে এই দুজন দেখেন, দাবানলে সব পুড়ে গেছে। লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ৯ জানুয়ারি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কম্বাইন্ড ডিগ্রি কারিকুলাম বিলম্বে উদ্বেগ বাকৃবিতে

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কম্বাইন্ড ডিগ্রি (বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স অ্যান্ড এএইচ) কোর্সের নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন প্রক্রিয়া আটকে থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর ১৩ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হলেও দুই মাস পরেও কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি বলে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কোর্স কারিকুলাম প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা এসব দাবি ও অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন না হওয়ায় আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম অনিশ্চয়তায় পড়েছে। বর্তমান ব্যাচের শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল দ্রুত সেমিস্টারভিত্তিক কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন করা। কিন্তু, সময়মতো কাজ শুরু না হওয়ায় আমাদের একাডেমিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে।”

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, “কম্বাইন্ড ডিগ্রি কোর্সের কারিকুলাম প্রণয়নের জন্য ১৩ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যার কার্যপরিধি ছিল ১ মাস। কিন্তু, প্রায় দুই মাসের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও এখনো কারিকুলাম প্রণয়ন হয়নি। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিব স্যারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সুস্পষ্ট সময়সীমা জানানো হয়নি, যা ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। চলমান ব্যাচগুলোর অন্যতম দাবি ছিল সেমিস্টারভিত্তিক কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন করা। এ বিষয়ে কমিটির পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।”

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও টেকনিক্যাল কমিটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আর দেরি না করে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন এবং চলমান ব্যাচসমূহের জন্য সেমিস্টার ভিত্তিক কারিকুলাম পরিমার্জন করে যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন বলে আমরা আশা করছি।”

উল্লেখ্য, এ বছর ১৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজিত প্রত্যক্ষ ভোটে পশুপালন অনুষদের ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী কম্বাইন্ড ডিগ্রির পক্ষে এবং ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী অ্যানিমেল হাজব্যান্ড্রি ডিগ্রির পক্ষে মত দেন। অন্যদিকে, ভেটেরিনারি অনুষদের ৮০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী কম্বাইন্ড ডিগ্রির পক্ষে এবং ২০ শতাংশের কম শিক্ষার্থী ডিভিএম ডিগ্রির পক্ষে মত দেন।

ঢাকা/লিখন/জান্নাত

সম্পর্কিত নিবন্ধ