তথ্য আপা’ প্রকল্পে ৫ মাস ধরে বেতন নেই, এখন অফিস ছাড়ারও নোটিশ
Published: 11th, January 2025 GMT
নারীর জন্য তথ্যপ্রযুক্তি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, অধিকার বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি, আইন, কৃষি ও ব্যবসায় সুবিধা দিতে ১৪ বছর আগে শুরু হয়েছিল ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প। মেয়াদ বাড়িয়ে তিন বছর ধরে চালু রাখা হচ্ছে প্রকল্পটি। তবে অর্থ ছাড় না হওয়ায় পাঁচ মাস ধরে প্রকল্পের বেতন-ভাতা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
৬০৩ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, মাসের পর মাস বেতন না পাওয়ায় তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এর মধ্যে গত ২ জানুয়ারি হুট করে এক নোটিশে আগামী জুনে প্রকল্পটি শেষ হবে জানিয়ে অফিস ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তাঁরা।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জাতীয় মহিলা সংস্থা’র বাস্তবায়ন করা এ প্রকল্পের পুরোনাম ছিল—‘তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন’। গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে—‘তথ্য আপা: তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’।
২০১১ সালে পাইলট আকারে এ প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০১৮ সালের শেষ দিকে ৪৯২টি উপজেলায় প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পে প্রতিটি উপজেলায় সরাসরি নিয়োগ পাওয়া একজন তথ্যসেবা কর্মকর্তা, দুজন তথ্যসেবা সহকারী রয়েছেন। আরও আছেন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ৪৯৫ জন অফিস সহায়ক। ২০২২ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। পরে তা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন করা হয়।
উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুসারে, ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের জনবল ২ হাজার ৪৮৪। তবে প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা ও অনিয়মিত বেতন-ভাতায় অনেকে চাকরি ছেড়েছেন। এখন জনবল ১ হাজার ৯৮৩।প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ প্রকল্পের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন পাননি তাঁরা। এর মধ্যে গত মাসে জুলাইয়ের বেতন দেওয়া হয়েছে। এখন বকেয়া রয়েছে ৫ মাসের। ইতিমধ্যে তাঁদের জানানো হয়, প্রকল্পের অফিস গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পরে প্রকল্প চালু রাখার দাবিতে ১৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা ও ১৯ আগস্ট সচিবালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তাঁরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের।
উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুসারে, ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের জনবল ২ হাজার ৪৮৪। তবে প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা ও অনিয়মিত বেতন-ভাতায় অনেকে চাকরি ছেড়েছেন। এখন জনবল ১ হাজার ৯৮৩। প্রকল্পের বেশির ভাগ কার্যালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় ভবনে অবস্থিত। কিন্তু ভবনে স্থানসংকটে কিছু কার্যালয় ইউএনও কার্যালয়ের আশপাশে ভাড়া করা কক্ষে চালানো হয়।
নারীদের চাকরি ও দুস্থ নারীদের সহায়তায় ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কার্যক্রমে তালিকাভুক্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে কার্যালয়গুলোতে বিনা মূল্যে সেবা দেওয়া হয়। নারীদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির সুবিধা দিতে পরে প্রকল্পে ‘লাল সবুজ ডটকম’ নামের ই-কমার্স উদ্যোগ যুক্ত করা হয়।
বেতন না হওয়ায় প্রকল্পের লোকজন অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। প্রকল্প যাঁরা চালান, তাঁরাও একধরনের মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন।—শাহনাজ বেগম, প্রকল্প পরিচালক ও জাতীয় মহিলা সংস্থার যুগ্ম সচিবতবে প্রকল্পের কোনো উদ্যোগই এখন ঠিকঠাক চলছে না। প্রকল্পের আওতায় মাসে দুটো উঠান বৈঠক হতো প্রান্তিক নারীদের নিয়ে। বৈঠকে অংশ নেওয়া নারীরা ২০০ টাকা করে ভাতা পান। গত জুলাই থেকে এ পর্যন্ত মাত্র একবার (১০ ডিসেম্বর) উঠান বৈঠক হয়েছে।
‘লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না’প্রকল্পের একজন তথ্যসেবা সহকারী প্রথম আলোকে জানান, নারীদের আত্মনির্ভরশীল করার জন্য তাঁরা উঠান বৈঠক করেন, দ্বারে দ্বারে (ডোর টু ডোর) সেবা দেন। তাঁকে মাসে সাড়ে ৩০০ ডোর টু ডোর পরিদর্শন করতে হয়। মাসে বেতন ছিল ১৫ হাজার ৬৫০ টাকা। এর বাইরে ডোর টু ডোর পরিদর্শনের জন্য দিনে ১৬০ টাকা যাতায়াত ভাতা পেতেন। ৫ মাস ধরে বেতন ও ভাতা দুটোই বন্ধ।
এই তথ্যসেবা সহকারী জানান, তাঁর দুটো শিশুসন্তান রয়েছে। স্বামী ছোটখাটো চাকরি করেন। অনটনের মধ্য দিয়ে তাঁদের চলতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘দোকানে এত টাকা বকেয়া পড়েছে! কী বলব! দোকানদার খালি বলে, কবে বেতন পাবেন? কবে বাকি দেবেন? লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না।’
এই নারী আরেক সহকর্মী নারীসহ কয়েকজনের দুর্ভোগের কথা টেনে বলেন, একজন অর্থাভাবে শিশুসন্তানের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। সরকারি চাকরি পরিচয়ে বিয়ে করেছিলেন অনেকে। এখন তাঁদের সংসারই ভেঙে যাচ্ছে। প্রকল্প টিকে থাকতে পারে, এ আশা নিয়ে তাঁরা বিনা বেতনে কাজ করে যাচ্ছেন।
আরেকজন তথ্যসেবা সহকারী প্রথম আলোকে বলেন, দুই শিশুসন্তান ও স্বামীকে নিয়ে তাঁর সংসার। স্বামী অসুস্থ, বেকার। ছোট সন্তানও অসুস্থ। তাঁর একার আয়ে সংসার চলে। অভিমানভরা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি কী অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, কীভাবে সংসার চালাচ্ছি, শুধু আল্লাহ জানেন!’
এক তথ্যসেবা কর্মকর্তা অভিযোগ করে প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প কর্মকর্তার উদাসীনতা রয়েছে। প্রকল্প শেষে প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে যাবে, এটা জেনে তাঁরা চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও তথ্যসেবা সহকারীদের বেশির ভাগ অনার্স-মাস্টার্স পাস। কারও কারও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরিও হয়েছিল। সংসার নিয়ে প্রকল্প এলাকায় সুবিধা বোধ করায় এবং রাজস্ব খাতে যাবে আশায় চাকরি বদলাননি। এখন তাঁদের নতুন কোনো চাকরিতে আবেদন করার বয়স নেই।
মেয়াদ আর না বাড়ার সম্ভাবনাজাতীয় মহিলা সংস্থা ২ জানুয়ারি এক চিঠিতে জানিয়েছে, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি হওয়ায় মাঠপর্যায়ের ৪৯২টি উপজেলা তথ্যকেন্দ্রের অফিস ভাড়া নবায়ন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে বলে যেসব ইউএনও অফিস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাসায় ভাড়া নেওয়া হয়েছে, সেগুলো ৩০ জুনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হলো।
প্রকল্প পরিচালক ও জাতীয় মহিলা সংস্থার যুগ্ম সচিব শাহনাজ বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও এক বছর বেড়েছে। ইতিমধ্যে ডিপিপি দুইবার সংশোধন হয়েছে। তৃতীয়বার সংশোধনের সম্ভাবনা কম। ফলে মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না বলে ধরে নিয়েছি। নতুন প্রকল্প নিয়ে এই জনবলের বিষয়ে কিছু করা যায় কি না দেখতে হবে।’
পাঁচ মাস ধরে বেতন-যাতায়াত ভাতা বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে যুগ্ম সচিব বলেন, বাজেট না থাকায় বেতন-ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় মহিলা সংস্থার নিজস্ব বাজেট থেকে অর্থ ধার নিয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এক মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় আগামী সপ্তাহে অর্থ ছাড় দিতে পারে। এরপর দুই কিস্তিতে বকেয়া বেতন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, বেতন না হওয়ায় প্রকল্পের লোকজন অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। প্রকল্প যাঁরা চালান, তাঁরাও একধরনের মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বব্যাংকের সিটা প্রকল্পের ব্যর্থতা ও অপচয়ের আশঙ্কা কেন
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পুরোনো প্রকল্পগুলোর ব্যর্থতা ও অপচয় থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে নতুন উদ্যোগ নেওয়া দরকার; কিন্তু তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি (সিটা) ঋণ প্রকল্পটি নিয়ে কিছু কথা বলা জরুরি। উল্লিখিত ঋণ প্রকল্পটি ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের, যা ২০২৫ সালের মে থেকে ২০৩০ সালের মে পর্যন্ত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পরিকল্পনা বিভাগ, বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি এবং মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক—এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানে ব্যয় হবে।
প্রকল্পের ধারণাপত্র থেকে স্পষ্ট, অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়নি এবং ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের চাওয়া দেশের স্বার্থ ছাপিয়ে গেছে, যা অতীতে ‘অত্যধিক মূল্যে অফলপ্রসূ বিদেশি সফটওয়্যার কেনার’ মতো বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এ ছাড়া আশঙ্কা আছে ভূরাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বিদেশি সফটওয়্যারের সেবা বন্ধ হওয়ার এবং বাণিজ্যিক তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রের হাতে চলে যাওয়ার।
দেশের স্বার্থ বিবেচনায় এ ধরনের প্রকল্প যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সরকারকে সচেতন করার লক্ষ্যে এই লেখা। ঋণদাতার ওপর নির্ভরশীল না হয়েও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের দিয়েই সাশ্রয়ী ও টেকসই তথ্যপ্রযুক্তিগত অটোমেশন সম্ভব। প্রয়োজন এমন একটি তথ্যপ্রযুক্তি নীতি, যা আশঙ্কাজনক প্রকল্প ও বিদেশি সংস্থার ওপর নির্ভরশীলতা থেকে মুক্তি দিয়ে দেশের মেধাসম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করবে। বিদেশি ঋণ কেবল নিজস্ব শর্ত ও পরিকল্পনা অনুযায়ী নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।
■ অন্যান্য খাতের তুলনায় তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক ঋণের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, ব্যয় ও অপচয় বেশি। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতার কারণে বহু প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। ■ নতুন সিটা প্রকল্পের মাধ্যমে আগের ব্যর্থ ‘শ্বেতহস্তী’ প্রকল্পগুলোকে আরও বড় করার আয়োজন চলছে। প্রকল্পে প্রস্তাবিত কার্যতালিকা থেকেই স্পষ্ট, প্রকল্পটি কতটা বাস্তবতাবিবর্জিত।গত ১৫-১৬ বছরে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ঋণদাতা সংস্থাগুলোর প্রভাব বাড়লেও, বেশির ভাগ প্রকল্প লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ। এর মূলে আছে ঋণদাতার নীতি হস্তক্ষেপের প্রভাবে বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শকদের কাজ পাওয়া এবং চাপিয়ে দেওয়া ‘ভেন্ডর-লকড’ এবং প্রোপ্রাইটারি প্রযুক্তি, যা দেশীয় জনবল ও দক্ষতার বিকাশে বাধা। ফলে ঋণের বোঝা বেড়েছে, দেশীয় মানবসম্পদ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত দুর্বল হয়েছে এবং সরকারি–বেসরকারি খাত ও জনগণের মধ্যে ত্রিমুখী অনাস্থা তৈরি হয়েছে।
অন্যান্য খাতের তুলনায় তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক ঋণের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, ব্যয় ও অপচয় বেশি। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতার কারণে বহু প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারের ধারণা আপাতদৃষ্টিতে কার্যকর মনে হলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে, ব্রিজ অথরিটি, পাওয়ার সেল, জিটিসিএল, ইজিসিবি, এনবিআরসহ বিভিন্ন সংস্থায় বিদেশি সফটওয়্যারের ব্যর্থতার কারণে অর্থ অপচয়ের দৃষ্টান্ত অসংখ্য।
এনবিআর আগেও এ ধরনের প্রকল্প নিয়েছে। তাই তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে এই প্রকল্পের পুনর্মূল্যায়ন জরুরি। সিটা প্রকল্পের ৮০ মিলিয়ন ডলার এনবিআর চারটি খাতে ব্যয় করবে।
১. আয়কর ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও স্বয়ংক্রিয়করণ; ২. মূসক ব্যবস্থাপনায় ‘এসএপি’ প্রযুক্তির একটি উচ্চতর দক্ষতা কেন্দ্র স্থাপন, ভ্যাট ব্যবস্থাপনার অসমাপ্ত কাজের সম্পাদন, ‘আইভাস’ প্রযুক্তির সঙ্গে এসএপি প্রযুক্তির সংযোগ স্থাপন এবং এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং স্থাপন; ৩. রাজস্ব বোর্ডের অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তি, যেমন অ্যাসিকুডা ওয়ার্ল্ড, আইভাস, আয়কর এবং বহিঃস্থ অন্যান্য প্রযুক্তি, যেমন আইবাসের++ মধ্যে আন্তযোগাযোগের ব্যবস্থা তৈরি করা এবং ৪. আয়করদাতাদের জন্য স্বয়ংক্রিয় গ্রাহকসেবা কেন্দ্র স্থাপন।
এই ঋণ ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে ঋণ দিয়েছিল, তার সম্প্রসারণ। ২০২১ সালে ‘অসমাপ্ত’ সেই প্রকল্পের অধীনে ভিয়েতনামের প্রতিষ্ঠান এফপিটি এসএপি প্রযুক্তিভিত্তিক ইন্টেগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভাস) স্থাপন করে। ১০ বছরে (২০১৫-২৫) প্রায় ৭৩০ কোটি টাকা ব্যয়ের পর বিশ্বব্যাংকের ভাষাতেই আইবাস প্রকল্পের অবস্থা ‘মডারেটলি আনস্যাটিসফ্যাকটরি’; বাংলায় যার অর্থ, ‘কাজের উদ্দেশ্য, উৎকর্ষ অর্জনে বা কাজের প্রাসঙ্গিকতায় উল্লেখযোগ্য ত্রুটি ছিল, ফলে কাজটিকে অসন্তোষজনক হিসেবে বিবেচনা করা যায়।’
ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিত ও কারণসমূহ সম্পর্কে বলা হলো১. দুর্বল প্রযুক্তিগত ও প্রক্রিয়াগত নকশা: যথাযথ পরিকল্পনা ও বিশ্লেষণ ছাড়াই প্রকল্প হাতে নেওয়া; ২. বিদেশি সফটওয়্যারের অযাচিত ব্যবহার: দেশীয় চাহিদা বিবেচনা না করে, শুধু অন্য দেশে চলছে যুক্তিতে এসএপি সফটওয়্যার কিনে বসানো;
৩. বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা: প্রযুক্তির সব দায়িত্ব বিদেশি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া; ৪. বেমানান প্রযুক্তি: এমন একটি প্রযুক্তি (এসএপি) কেনা, যার জন্য দেশে কোনো প্রশিক্ষিত জনবল নেই; ৫. দেশীয় প্রতিষ্ঠান বর্জন: প্রযুক্তি বাস্তবায়ন ও ভবিষ্যতে ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত না রাখা।
আইবাস প্রকল্পটি আমাদের জন্য বৈদেশিক ঋণের টাকায় কেনা অতিকায় এক ‘শ্বেতহস্তী’। এনবিআরের ট্যাক্স–সংক্রান্ত প্রকল্পের সঙ্গে তুলনামূলক পর্যালোচনা করে দেখা যাক। এফপিটি পরপর রাজস্ব বোর্ডের দুটি কাজ পায়। এর একটি আইবাস আর অন্যটি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার ঋণ অর্থায়নে আয়করের ‘বিট্যাক্স’।
২০০৯ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া বিট্যাক্স ২০১৩ থেকে সময় বাড়িয়ে ২০১৮ সালের নভেম্বরে গিয়ে থামে। ডেইলি স্টার–এর প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ২২ লাখ রিটার্নের মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ (প্রায় ৬ হাজার) বিট্যাক্সের মাধ্যমে হয়েছিল। এডিবি বলছে, আয়কর সংগ্রহে বিট্যাক্সের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য নয়।
অন্যদিকে এনবিআরের নিজস্ব উদ্যোগে, দেশীয় জনবলে, ওপেন সোর্স প্রযুক্তিতে ২০২১-২২ সালে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তুত ই-রিটার্ন সিস্টেমের মাধ্যমে গত অর্থবছরে ১৫ লক্ষাধিক আয়কর সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে এবং একটি সফল উদ্যোগ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।
আইবাস ২০১৫ সালে শুরু হয়ে শেষ হয় ২০২১ সালের জুনে। বিশ্বব্যাংক ‘মডারেটলি আনস্যাটিসফ্যাকটরি’ বললেও দেশের পত্রপত্রিকা ও রাজস্ব বোর্ডের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, এটি লক্ষ্য অর্জনে কেবল ব্যর্থই নয়, কর আহরণ বাড়ানোর রাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্যটাই হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড–এর ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে রাজস্ব বোর্ডের পর্যালোচনায় এসেছে, ‘অটোমেশন প্রকল্পগুলোর অধিকাংশে অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীরা। অথচ তাদের সমর্থন থাকা সত্ত্বেও ডিজিটালাইজেশনের গতি মন্থরই রয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মূল্য দিতে হচ্ছে জাতীয় অর্থনীতি ও করদাতাদের।
আইভাস ও বিট্যাক্স প্রকল্পের ব্যর্থতার কারণ তাদের কার্যপদ্ধতিতেই নিহিত। এসব প্রকল্পের দরপত্র এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে শুধু নির্দিষ্ট কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারে, যা কর ব্যবস্থাপনার মতো স্থানীয় সংস্কৃতি ও বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভরশীল কাজের জন্য অনুপযুক্ত।
উভয় প্রকল্পে ব্যবহৃত এসএপি একটি ব্যয়বহুল, ‘ভেন্ডর-লকড’, ‘ক্লোজড সোর্স’ প্রযুক্তি, যার জন্য দেশে প্রশিক্ষিত জনবল নেই। কাঙ্ক্ষিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এর প্রয়োজনীয় পরিমার্জন বা দৈনন্দিন কাজও দুরূহ হয়ে উঠেছে, যা এনবিআরের চেয়ারম্যানের অসহায় স্বীকারোক্তিতে (এফপিটির অসহযোগিতা) স্পষ্ট। প্রতিবছর সরকারকে প্রায় ২০ কোটি টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে এর থেকে মুক্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের খরচের চেয়ে কম অর্থ ব্যয় করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কোনো লাইসেন্স ফি ছাড়াই সফটওয়্যারটি প্রস্তুত করা যেত, সাশ্রয় হতো হাজার কোটি টাকার।
এসব প্রকল্পের কারণে তথ্যের নিরাপত্তাও গুরুতর ঝুঁকির মুখে। আয়করের মতো গোপনীয় তথ্যভান্ডারে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অবাধ প্রবেশাধিকার নিয়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ৬-৭ বছর আগেই সতর্ক করেছিল যে এটি রাষ্ট্রের তথ্যের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। জাতীয় পরিচয়পত্রের ঘটনার মতো সংবেদনশীল করসংক্রান্ত তথ্যও গোপনীয়তা হারানোর ঝুঁকিতে।
বিশ্বব্যাংকের ঋণ ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রকল্পে এ ধরনের বিপর্যয় ও অপচয় আরও রয়েছে। প্রথম আলোর ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ন্যাশনাল হাউসহোল্ড ডেটাবেজ প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালে ৩ কোটি ৬০ লাখ পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হলেও, ২০২২ সাল পর্যন্ত সেই তথ্য সংরক্ষণের জন্য সফটওয়্যার তৈরি হয়নি। ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাংকের শর্তে আর্মেনিয়ার একটি কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়েছিল, অথচ দেশীয় একাধিক প্রতিষ্ঠান অনেক কম সময়ে ও ব্যয়ে এটি করতে পারত।
নতুন সিটা প্রকল্পের মাধ্যমে আগের ব্যর্থ শ্বেতহস্তী প্রকল্পগুলোকে আরও বড় করার আয়োজন চলছে। প্রকল্পে প্রস্তাবিত কার্যতালিকা থেকেই স্পষ্ট, প্রকল্পটি কতটা বাস্তবতাবিবর্জিত ও অপ্রাসঙ্গিক এবং এর পেছনের আসল উদ্দেশ্য কী।
আয়কর ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং স্বয়ংক্রিয়করণ ছিল বিট্যাক্সের কাজ, যার ব্যর্থতা আমাদের ১০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে রাজস্ব বোর্ডের নিজস্ব দেশীয় ই-রিটার্ন প্রকল্প গত তিন বছরে মাত্র ৫ কোটি টাকায় সফলভাবে বিট্যাক্সের সব কাজ সম্পন্ন করেছে। এই সাফল্যের কারণ হলো, নিজস্ব অর্থায়ন, রাজস্ব বোর্ডের স্বাধীন সিদ্ধান্ত, দেশি ভেন্ডর এবং উন্মুক্ত আধুনিক প্রযুক্তি। আবারও মিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাবের পেছনে যে অশুভ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে আশঙ্কা করছি তা হলো, বিট্যাক্স–জাতীয় ব্যর্থ প্রকল্পকে অন্য রূপে পুনরুজ্জীবিত করে কর ব্যবস্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া।
●এসএপির জন্য একটি দক্ষতা বা উৎকর্ষকেন্দ্র স্থাপনের চিন্তাটিই নীতিগতভাবে অসৎ। এসএপি একটি আন্তর্জাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান; নিজেদের স্বার্থেই নিজ খরচে তারা প্রশিক্ষণ বা উৎকর্ষকেন্দ্র স্থাপন করবে। ধার করা টাকায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব অনৈতিক। এ ধরনের অভিসন্ধি বিদেশি প্রযুক্তি ও পরামর্শক সংস্থাগুলোর আধিপত্যকে আরও বাড়িয়ে দেবে। এর মাধ্যমে আমরা দেশের ভবিষ্যতের বিনিময়ে উচ্চ মূল্যের প্রোপ্রাইটারি প্রযুক্তির হাতে পুরো তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে তুলে দিচ্ছি।
●আইভাসের মাধ্যমে ১০ বছরে ৬০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেও বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শকদের দ্বারা ভ্যাট ব্যবস্থাপনা সফল হয়নি। ব্যর্থতার কারণগুলো এখনো বিদ্যমান। আরও ৮০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করলেই সমস্যা মিটে যাবে, সেটা ধারণা করা বোকামি। যত দিন রাজস্ব বোর্ড নিজস্ব উদ্যোগে, অর্থায়নে, বৈদেশিক ঋণ ও হস্তক্ষেপ ছাড়া নিজস্ব জনবল এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় প্রকল্প হাতে না নেবে; বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ‘ভেন্ডর-লকড’ প্রযুক্তিতে অন্ধ থাকবে; মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেও কোনো সফলতা আসবে না।
○ দরপত্র অনুযায়ী, আইভাস সিস্টেমের ভিত্তি এসএপি প্রযুক্তি, সেভাবেই এসএপি লাইসেন্স কেনা হয়েছে। আইবাসের সঙ্গে এসএপির সংযোগ নেই বলাটা বোধগম্য নয়। আশঙ্কা হয়, এক জিনিস কেনার নাম করে অন্য জিনিস দিয়ে ঠকানো হয়েছে, অথবা একই কাজের জন্য কৌশলে বারবার নতুন ব্যয় দেখানোর এটি একটি ফন্দি।
○ ঋণের বোঝা চাপিয়ে রাজস্ব বোর্ডকে এসএপির শিকলে বাঁধার প্রক্রিয়া হিসেবে ইআরপি প্রকল্প আনা হচ্ছে। ঋণদাতারা কারিগরি সহায়তার নামে নীতি ও ক্রয়প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটিয়ে অতীতে অন্তত ১০টি সরকারি ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে একই কাজ করেছে, যার প্রায় সব কটিই ব্যর্থ ও বিশাল ঋণের ভার চাপিয়ে দিয়েছে। এগুলোতে কাজ পেয়েছে বেক্সিমকোর মতো অপ্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠান। সমতুল্য কাজে সফলভাবে আইবাস++, জেমস, ইজিপি দেশে তৈরির পর এমন সিদ্ধান্ত বিস্ময়কর।
● রাজস্ব বোর্ডের নিজস্ব সফটওয়্যারের (অ্যাসিকুডা ওয়ার্ল্ড, আইভাস, আয়কর ইত্যাদি) এবং বাইরের অন্যান্য সফটওয়্যারের (আইবাস++ ইত্যাদি) মধ্যে আন্তযোগাযোগের ব্যবস্থার জন্য আমাদের দেশীয় প্রযুক্তি এবং জনবল পুরোপুরি সক্ষম। বহু সরকারি সেবা ও প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে পস্পর সংযুক্ত। অ্যাসিকুডা ওয়ার্ল্ড বর্তমানেই জাতীয় তথ্যভান্ডার, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এপিআই দ্বারা যুক্ত; বরং এসএপিভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্পে অন্য সফটওয়্যারের সঙ্গে তথ্য আদান–প্রদান অপর্যাপ্ত।
তথ্যপ্রযুক্তিতে বিদেশি ঋণের ব্যয় অন্যান্য খাতের তুলনায় দীর্ঘমেয়াদি। ঋণের বড় অংশ অপচয় হওয়ার পাশাপাশি, প্রতিবছর প্রায় ২০ শতাংশ অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ব্যয় হবে। ১০ বছরে মূল ঋণের বাইরে রক্ষণাবেক্ষণে কয়েক গুণ বেশি অর্থ ব্যয় হবে। যেহেতু ঋণদাতা সংস্থার পরামর্শে দরপত্রে অযৌক্তিক অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়, যা দেশীয় কোম্পানির পক্ষে অসম্ভব, তাই অর্থের পুরোটা বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশে অথবা তাদের দেশীয় এজেন্ট কিছু অযোগ্য প্রতিষ্ঠানের কাছে যায়।
আমরা আশা করি, সিটার মতো প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা এর নেতিবাচক ফলাফল অনুধাবন করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। জনগণ ও দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে নিজস্ব প্রয়োজন নির্ধারণ ও নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঋণ গ্রহণ বা প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প প্রণয়ন করাই অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। এতে টেকসই সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়বে, বিপুল অর্থ অপচয় রোধ হবে।
মো. মোস্তফা আকবর অধ্যাপক, সিএসই, বুয়েট
মো. রেজওয়ান আল বখতিয়ার সিআইটিও, সোনালী ব্যাংক
মোহাম্মদ জুবেরুল ইসলাম প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার, স্যামসাং রিসার্চ বাংলাদেশ
অনিন্দ্য ইকবাল অধ্যাপক, সিএসই, বুয়েট
*মতামত লেখকদের নিজস্ব