কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল ইনজেকশন পুশের ঘটনায় দুজন রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট নার্সকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল চিকিৎসার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

এ ঘটনায় হাসপাতাল এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।

জানা যায়, হার্নিয়ার চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন কটিয়াদী উপজেলার ধুলদিয়া এলাকার ফালু মিয়ার ছেলে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক মনিরুজ্জামান মল্লিক (৩২)। অপরদিকে পেটে ব্যথাজনিত কারণে ১২ জানুয়ারি ভর্তি হন নিকলী উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে জহিরুল (২৮)। আজ বুধবার সকালে তাদের অপারেশন হওয়ার কথা ছিল।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হেলিশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘অপারেশনের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সকালে তাদের (দুই রোগী) একটি এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়ার কথা ছিল। সাড়ে ৭টার দিকে সিনিয়র স্টাফ নার্স নাদিরা আক্তার ভুলক্রমে দুজনকেই অ্যানেসথেশিয়ার ইনজেকশন পুশ করেন। এর আধা ঘণ্টার মধ্যেই তারা মারা যান। এসময় ডা.

খাজা মাসুদ ছিলেন না। অপারেশন থিয়েটারে তার যাওয়ার কথা ছিল।’

এ ঘটনায় স্বজন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালের সামনের সড়ক নিহত মল্লিক মিয়ার প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।

ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হেলিশ চন্দ্র সরকার জানান, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। নার্স নাদিরাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরও বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে। আর দু’টি মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে। আর এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, নার্স নাদিরা এখানে চার বছর ধরে কর্মরত আছেন। 

ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে নিহতদের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, বিছানায় চাদর দিয়ে দু’টি মরদেহ ঢেকে রাখা হয়েছে। ইটভাটা শ্রমিক জহিরুলের মা হাওয়া বেগম লাশের পাশে বিলাপ করছেন। জহিরুলের ৬ বছরের একটি ছেলে ও ৪ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী আকলিমা আক্তার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। জহিরুলের বড় ভাই মাসুক মিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত বিচার চান। তাঁরা মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন।

মল্লিক মিয়া স্থানীয় ‘সৃজনশীল মডেল কিন্ডারগার্টেন স্কুল’-এর প্রতিষ্ঠা। তিনি প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। তার সাড়ে তিন বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তার বড় ভাই জুয়েল মিয়াও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান। তারাও মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ সড়ক অবর ধ এ ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

এবার সাভারে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে অগ্নিসংযোগ

ধামরাইয়ের পর এবার সাভারের বিরুলিয়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বটতলা এলাকায় পার্কিং করে রাখা আলিফ পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে সন্ত্রাসীরা। রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে বাসটিতে আগুন দেয় তারা। আশেপাশের লোকজন পানি ও বালু দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বাসের মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, “রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিরুলিয়া বটতলা এলাকায় মীর আক্তার কন্সট্রাকশনের গেইটের কাছে বাসটি পার্কিং করে বাসায় খাবার খেতে যাই। রাত পৌনে ১১টার দিকে বাসটিতে সন্ত্রাসীরা আগুন লাগিয়ে দেয়। আশেপাশের লোকজনসন বালতি দিয়ে পানি এনে এবং বালুর সাহায্যে বাসের আগুন নেভান। আগুনে পুরো বাসটাই পুড়ে গেছে আমার। অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে এক ঘণ্টায় ৪ ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ২

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা

সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আ. ওয়াহাব বলেন, “মালিক আমজাদ হোসেন নিজেই বাসটি চালান। তার একটিই বাস। ঋণ করে কিনেছেন বলে জানিয়েছেন। রাতে তিনি বিরুলিয়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মীর আক্তার কন্সট্রাকশনের গেইটের সামনে বাসটি রেখে খাবার খেতে যান। কে বা কাহারা বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”  

এর আগে, রাত ১০টা নাগাদ ঢাকার ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকায় মহাসড়ক থেকে প্রায় ১০০ গজ ভেতরে একটি আঞ্চলিক সড়কের পাশে পার্কিং অবস্থায় থাকা ডি-লিংক পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ