সিলেট স্ট্রাইকার্সের পেসার তানজিম হাসান সাকিব শেষ ম্যাচ খেলতে পারেননি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘাড়ের রগ ফুলে যাওয়ায় তাকে বিশ্রাম দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট।

গত ২০ জানুয়ারি ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনে ব্যথা অনুভব করেন সাকিব। এরপর তাকে মাঠে নামায়নি সিলেট। চট্টগ্রামে সিলেটের পরবর্তী ম্যাচ ২৩ জানুয়ারি খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। সেই ম্যাচেও পাওয়া যাবে না ৬ ম্যাচে ১১ উইকেট পাওয়া তানজিমকে। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে রাইজিংবিডি এ খবর নিশ্চিত হয়েছে।

আট ম্যাচে দুই জয় পাওয়া সিলেটের এখনও সুযোগ আছে প্লে’ অফে যাওয়ার। শেষ চার ম্যাচের চারটি জিতলে তারা সহজেই চলে যাবে শেষ চারে। শেষ দিকের ম্যাচগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও দলের অন্যতম সেরা তারকা তানজিমকে খেলিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না টিম ম্যানেজমেন্ট।

জাতীয় দলের এই পেসার বিপিএলের পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেবেন। এজন্য তাকে বাড়তি চাপ দেওয়ার পক্ষপাতি নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। চট্টগ্রাম পর্ব শেষে ঢাকায় ফেরার পর তাকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সিলেট।

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমিকম্প নিয়ে ইসলামি দৃষ্টিকোণ ও ব্যবহারিক বিধান

প্রকৃতিতে আল্লাহর কুদরতি শক্তির অন্যতম নিদর্শন হলো ভূমিকম্প। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পৃথিবী যখন আপন কম্পনে প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে, পৃথিবী যখন তার ভার বের করে দেবে এবং মানুষ বলবে—এর কী হলো? সেদিন পৃথিবী তার বিবরণ প্রকাশ করবে, কারণ তোমার প্রতিপালক (আল্লাহ) তাকে তা করার নির্দেশ দেবেন। সেদিন মানুষ বিচ্ছিন্ন দলে বেরিয়ে আসবে, যাতে তাদের কৃতকর্ম তাদের সামনে প্রদর্শন করা যায়। যে কেউ অণু পরিমাণ সৎ কর্ম করবে, সে তা দেখবে; আর যে কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কর্ম করবে, সে তা–ও দেখবে।’ (সুরা–৯৯ জিলজাল, আয়াত: ১-৮)।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে, আমানত বিশ্বাস করে গচ্ছিত রাখলে তা আত্মসাৎ করা হবে, জাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে, পুরুষ তার স্ত্রীর অনুগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে, বন্ধুকে কাছে টেনে নিয়ে বাবাকে দূরে সরিয়ে দেবে, মসজিদে শোরগোল হবে এবং অযোগ্য ব্যক্তি সমাজের নেতা হবে—তখন তোমরা অপেক্ষা করো লাল আভাযুক্ত ঝড়, ভূকম্পন, ভূমিধস, লিঙ্গ পরিবর্তন, পাথরবৃষ্টি এবং সুতা ছেঁড়া তসবিহর দানার মতো একটির পর একটি নিদর্শনের।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা কি নির্ভয় হয়ে আছ সেই সত্তার (আল্লাহর) কাছ থেকে, যিনি আকাশে রয়েছেন—যে তিনি তোমাদেরসহ ভূমিকে ধসিয়ে দেবেন না? যখন তা হঠাৎ কাঁপতে থাকবে! অথবা তোমরা কি নির্ভয় হয়ে আছ, যে আকাশে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের ওপর কঙ্করবর্ষী ঝঞ্ঝা প্রেরণ করবেন? তখন তোমরা জানতে পারবে আমার সতর্কবাণী কেমন ছিল!’ (সুরা-৬৭ মুলক, আয়াত: ১৬-১৭)।

‘তুমি পর্বতমালা দেখছ, মনে করছ সেগুলো স্থির, অথচ সেগুলো মেঘপুঞ্জের মতো সঞ্চারমান। এটি আল্লাহর সৃষ্টিনৈপুণ্য, যিনি সবকিছুকে পরিপূর্ণভাবে সৃষ্টি করেছেন। তোমরা যা করো, তিনি সে সম্পর্কে পূর্ণভাবে অবগত। যে কেউ সৎ কর্ম নিয়ে আসবে, সে তার চেয়েও উত্তম প্রতিফল পাবে এবং সেদিন তারা ভয়-আতঙ্ক থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (সুরা-২৭ নমল, আয়াত: ৮৮-৮৯) 

তওবার অন্যতম শর্ত হলো কৃত ভুল সংশোধন করা। সুতরাং আবাসনব্যবস্থায় ও ভবন নির্মাণে কোনো ত্রুটি থাকলে তা যথাযথ সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে ত্রুটিমুক্ত ও নিরাপদ করা—এটিও তওবা কবুলের পূর্বশর্তের অংশ।

প্রকৃতি আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। আমরা প্রকৃতিকে পরিবর্তন করতে পারি না; বরং প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানের মতো ব্যবস্থা করতে পারি। আল্লাহর নির্দেশে মানুষ তীব্র ঠান্ডা ও চরম গরম থেকে বাঁচার জন্য, প্রকৃতিকে জয় করে জীবনধারণের জন্য পোশাক–পরিচ্ছদ, ঘরবাড়ি ও নানা উপায়-উপকরণ অবলম্বন করেছে। আত্মরক্ষা ও মানবসভ্যতার সুরক্ষার জন্য যা যা করণীয়—তা করার নির্দেশ রয়েছে পবিত্র কোরআনে; আর অবহেলা ও উদাসীনতার মাধ্যমে নিজেদের ক্ষতির মধ্যে ফেলার নিষেধও রয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা নিজেদের স্বহস্তে ধ্বংসে নিপতিত কোরো না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৯৫)। 

সময়োপযোগী, ভূমিকম্প-সহনশীল ও নিরাপদ আবাসনের জন্য ভবন নির্মাণে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নীতিমালা মেনে বাড়িঘর নির্মাণ করা উক্ত আয়াতের নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত। কোরআন মাজিদে রয়েছে:

‘মানুষের কৃতকর্মের কারণে স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ তাদের আস্বাদন করান, যাতে তারা সুপথে ফিরে আসে।’ (সুরা-৩০ রুম, আয়াত: ৪১)

নবীজি (সা.) বলেন, ‘যখন কোথাও ভূমিকম্প হয়, সূর্যগ্রহণ ঘটে, ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা দেখা দেয়—তখন মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে অতি দ্রুত তওবা করা, তাঁর কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা, তাঁকে অধিক হারে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা।’ আর তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহকে স্মরণ করো এবং তাঁর কাছে তওবা করো।’ (বুখারি: ২/৩০; মুসলিম: ২/৬২৮)

তওবার অন্যতম শর্ত হলো কৃত ভুল সংশোধন করা। সুতরাং আবাসনব্যবস্থায় ও ভবন নির্মাণে কোনো ত্রুটি থাকলে তা যথাযথ সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে ত্রুটিমুক্ত ও নিরাপদ করা—এটিও তওবা কবুলের পূর্বশর্তের অংশ।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম। ই–মেইল: [email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ