সিলেট স্ট্রাইকার্সের পেসার তানজিম হাসান সাকিব শেষ ম্যাচ খেলতে পারেননি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘাড়ের রগ ফুলে যাওয়ায় তাকে বিশ্রাম দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট।

গত ২০ জানুয়ারি ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনে ব্যথা অনুভব করেন সাকিব। এরপর তাকে মাঠে নামায়নি সিলেট। চট্টগ্রামে সিলেটের পরবর্তী ম্যাচ ২৩ জানুয়ারি খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। সেই ম্যাচেও পাওয়া যাবে না ৬ ম্যাচে ১১ উইকেট পাওয়া তানজিমকে। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে রাইজিংবিডি এ খবর নিশ্চিত হয়েছে।

আট ম্যাচে দুই জয় পাওয়া সিলেটের এখনও সুযোগ আছে প্লে’ অফে যাওয়ার। শেষ চার ম্যাচের চারটি জিতলে তারা সহজেই চলে যাবে শেষ চারে। শেষ দিকের ম্যাচগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও দলের অন্যতম সেরা তারকা তানজিমকে খেলিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না টিম ম্যানেজমেন্ট।

জাতীয় দলের এই পেসার বিপিএলের পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেবেন। এজন্য তাকে বাড়তি চাপ দেওয়ার পক্ষপাতি নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। চট্টগ্রাম পর্ব শেষে ঢাকায় ফেরার পর তাকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সিলেট।

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলিম নিপীড়নের আরেকটি আইন পাস হলো আসামে

হিন্দু ভোট ব্যাংককে শক্তিশালী করতে মুসলিমদের টার্গেট করে বিধানসভা ভোটের আগে নতুন একটি আইন পাস হলো ভারতের আসাম রাজ্যে। মুসলিমদের বহু বিবাহ রুখতে বৃহস্পতিবার মুসলিম বিধায়কদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও পাস করানো হয়েছে ‘আসাম প্রোহিবিশন অফ পলিগ্যামি বিল, ২০২৫’। এই আইনের মাধ্যমে ভারতের এই  রাজ্যে বহুবিবাহকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই আইনে ছাড় দেওয়া হয়েছে তফসিলি জনজাতি (এসটি) এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকা, যেমন-বডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন, ডিমা হসাও, করবি আংলং ও পশ্চিম করবি আংলং এর বাসিন্দাদের। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, আসামের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১২ দশমিক ৪৪ শতাংশ হল তফসিলি উপজাতি, যাদের সংখ্যা ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ৩৭১ জন। ২০২৫ সালে এসে এই জনসংখ্যা নিশ্চয়ই আরো বেড়েছে। এই তফসিলি জনজাতি হচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপির একটি বড় ভোট ব্যাংক। এই জনজাতিগুলোর মধ্যে বহু বিবাহের প্রচলন রয়েছে। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও রীতিনীতির অজুহাতে এই তফসিলি জনজাতি ও বিশেষ কিছু এলাকার বাসিন্দাদের বহুবিবাহ আইন থেকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

একই আদমশুমারি অনুসারে আসামে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ, যা রাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৪ দশমিক ২২ শতাংশ। এই মুসলমানদের বড় অংশই কংগ্রেসের সমর্থক। ২০১৬ সালে কংগ্রেস থেকে পল্টি নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে প্রচণ্ড মুসলিম বিদ্বেষের কারণে হিন্দুত্ববাদী দলটির ‘পোস্টার বয়’ হয়ে উঠেছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তার মুসলিমবিরোধী বক্তব্যের জন্য সুপরিচিত। তিনি একাধিকবার বলেছেন, তার মুসলিম ভোটের প্রয়োজন নেই। রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের সম্পদ বৃদ্ধির জন্যও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ১০ নভেম্বর তিনি বলেছেন, “আসামের প্রতিটি ব্লকে হিন্দু জনসংখ্যার কমছে এবং মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে। এই পরিবর্তন দ্রুত ঘটেছে। এর অর্থ অসমীয়রা মুসলিমদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। জনসংখ্যার পরিবর্তনের পাশাপাশি সম্পদের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। মুসলিমরা আরো সমৃদ্ধ হচ্ছেন।”

প্রশ্ন হচ্ছে, বহু বিবাহ বা একাধিক বিবাহ মুসলিম পারিবারিক আইনের একটি বিষয়। একজন মুসলিম চাইলেই একাধিক বিয়ে করতে পারেন না। এর জন্য কিছু পূর্বশর্ত রয়েছে। ভারতে মুসলমানদের পারিবারিক বিষয়গুলো নিস্পত্তির জন্য মুসলিম পার্সোনাল ল আছে। সেই আইনকে পাশ কাটিয়ে রাজ্যে আলাদা করে বহুবিবাহ  নিষিদ্ধ আইন করার মানে হচ্ছে, মুসলিম নিপীড়নের একটি অস্ত্র তৈরি করা।

রাজ্যের মুসলিমদের রাজনৈতি দল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের আইন প্রণেতা আমিনুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এই আইনটি মুসলিমদের লক্ষ্য করে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের একটি ‘প্যাটার্ন’-এর সাথে খাপ খায়।

তিনি বলেছেন, “মুসলিমদের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে সরকারের একটি ধরণ রয়েছে, তা সে পুরাতন মুসলিম বিবাহ আইন বাতিল করে নতুন আইন পাস করা হোক বা জমি বিক্রি বন্ধ করার আইন করা হোক। তাই, কোথাও না কোথাও, আমরা লক্ষ্যবস্তু দেখতে পাচ্ছি- মুসলিম সম্পর্কিত বিষয়।”

তিনি আরো বলেন, “আমাদের লক্ষ্য করে আইন আছে, আমরা জমি কিনতে বা বিক্রি করতে পারি না, উচ্ছেদের শিকার হচ্ছি। জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সমগ্র সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।”

কংগ্রেসের বিধায়ক জাকির হোসেন সিকদার জানিয়েছেন, যেসব এলাকাকে আইনে ছাড় দেওয়া হয়েছে সেসব এলাকার নারীরা অন্যান্য স্থানের নারীদের মতোই ভোগান্তিতে পড়েন।

তিনি বলেন, “এই বিল আনার অন্যতম উদ্দেশ্য হল যখন একজন পুরুষ দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করেন, তখন প্রথম স্ত্রী কষ্ট পান এবং দুঃখ পান। কিন্তু বিলের ধারা ২ অনুসারে, আমরা দেখছি যে কিছু ক্ষেত্রকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ধুবড়িতে, একজন মহিলা যার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি ডিব্রুগড়ের একজন মহিলার মতোই ভোগেন যার স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করেন, এবং কোকরাঝাড় এবং কার্বি অ্যাংলিং-এর একজন মহিলাও একই রকম ভোগেন।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ