বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকারের নেতৃত্বে চাকরিচ্যুত তৎকালীন বিডিআর সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে গেছেন। 

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে প্রতিনিধিদলটি সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে স্মারকলিপি জমা দেবেন ও আলোচনা করবেন। তারপর পরবর্তী কর্মসূচি গণমাধ্যমকে জানাবেন।

বিডিআর সদস্যদের মামলা প্রত্যাহার, বন্দীদের মুক্তি, গঠিত কমিশনের সংস্কার ও চাকরিতে পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন তারা। 

প্রতিনিধিদলে বিডিআর সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- ফখরুদ্দিন আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন, মাহাবুব আলাম, মনিরুজ্জামান, রোকসাদ আল প্রধান রিয়াল। বাকিরা খাদ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছেন। 

সচিবালয় ঘিরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে রেখেছে। সেখানে ১০ প্লাটুন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কাফনের কাপড় পরে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান

পুলিশের বাধায় সচিবালয়ের সামনে রাস্তায় কাফনের কাপড় পরে শুয়ে পড়েন আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যরা। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষা ভবনের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন তারা।

দুপুর একটার কিছু আগে তারা সচিবালয়ের দিকে এগোলে শিক্ষা ভবনের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। বাধা অতিক্রম করে সামনের দিকে এগোতে থাকলে পুলিশ জলকামান দিয়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। তবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে সচিবালয়ের সামনের এলাকায় ঢুকে পড়ে আন্দোলনরতরা।

শাহবাগ থানার ওসি মো.

খালিদ মনসুর বলেন, “শিক্ষা ভবনের সামনের ব্যরিকেড ভেঙে তারা এখন সচিবালয় এলাকায় চলে এসেছে।”

এর আগে, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার।

সচিবালয় এলাকায় ঢুকে পড়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় চাকরিচ্যুত সদস্যদের ফের আব্দুল গণি রোডের খাদ্য অধিদপ্তর ও বিদ্যুৎ ভবনের সামনে আবারো আটকে দেয় পুলিশ।

আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের শপথ পাঠ করান এই সমন্বয়ক।

হাসনাতের আশ্বাসে সড়ক ছাড়বেন না চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা

চাকরিচ্যুত বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদস্যদের পুনর্বহালসহ ছয় দফা দাবিতে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তবে তার আশ্বাসের পরও চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা সড়কে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন।

বুধবার দুপুর ২টার পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থলে যান হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ সময় তিনি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘এই আন্দোলনের শুরু থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থন দিয়ে আসছে। আমরা চাই বিডিআর সদস্যরা যেন ন্যায্য বিচার পায়। আমরা আপনাদের দাবি নিয়ে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক করব।’’

তার আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা সড়ক ছাড়তে রাজি না হওয়ায় তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় অবস্থান করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আন্দোলনটি বেহাত হতে পারে। তাই তারা আশ্বাস মানবেন কি মানবেন তা আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের নিজের বিষয়।’’

গেল ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।

এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।

হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন।

হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি ওঠে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

পনের বছর আগে এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গেল বছরের ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয় সরকার।

গত ২১ জানুয়ারি বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে কারাগারে আটক ১৭৮ জন বিডিআর জওয়ানের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এর দুইদিন পর জামিনে মুক্ত হন তারা।

ঢাকা/সুকান্ত/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন স মন র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকার: এক বছরে সফলতা ও ব্যর্থতা

গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের মূল্যায়নে প্রশংসা ও সমালোচনা-উভয় দিকই সামনে এসেছে। সরকারের এক বছরের সফলতা-ব্যর্থতার আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে অর্থনীতি, বিচার সংস্কার এবং মব ভায়োলেন্সের মতো ইস্যুগুলো।

অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা কী এই প্রশ্নে অর্থনীতিতে ব্যাংক, বাজার, রিজার্ভসহ সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সরকার কৃতিত্ব পাচ্ছে।

তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির, মব ভায়োলেন্স, মৌলিক সংস্কার এমনকি বিচার প্রক্রিয়ার কিছু বিষয়ে সরকারের ভূমিকার নানা সমালোচনা করছেন পর্যবেক্ষক এবং বিশ্লেষকরা।

আরো পড়ুন:

রাজনীতিতে পরিবর্তন ও ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে

স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, আগামীতে সুফল পাওয়া যাবে

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর আন্দোলনকারী সব পক্ষের সমর্থনে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের সামনে সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন অনুষ্ঠান এই তিনটি বড় দায়িত্ব ছিল।

এছাড়া ভঙ্গুর অবস্থা থেকে দেশের অর্থনীতিকে সামাল দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছিল সরকারের সামনে।

অর্থনীতির স্থিতিশীলতা
অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনা এবং বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রশংসা রয়েছে। তবে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন না হওয়ায় দুর্বলতার কথাও সামনে আনছেন অর্থনীতিবিদরা।

সরকারের এক বছরের মূল্যায়ন করে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “যে অর্থনীতি এ সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল সেটা তো খুবই জটিল অবস্থার ভেতরে ছিল।”

তিনি বলেন, “অর্থনীতিতে সামষ্টিক স্থিতিশীলতার একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে ছিল সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা, টাকার পতন আটকানো, সুদের হার একটা অবস্থায় রাখা, বাজেট ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা ইত্যাদি। কাজের ভেতরে সাফল্য এসেছে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।”

তবে অর্থনীতির এই সাফল্যটা মূলত হয়েছে বাইরের খাতে বা এক্সটার্নাল সেক্টরে। অর্থাৎ রেমিট্যান্স বেড়েছে, রপ্তানি চালু আছে, আমদানি কম হওয়ার ফলে বৈদেশিক লেনদেনে একটা ভারসাম্য এসেছে এবং সরকার অনেক পুরোনো বিদেশি ঋণ শোধ করেছে। এই সময়কালে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত সে অর্থে কমেনি বলেও মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তবে তার দৃষ্টিতে কর আহরণ বা আরো কার্যকরভাবে সরকারের বিনিয়োগ বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অনেক বড় দুর্বলতা রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, “সবচেয়ে বড় দুর্বলতা রয়ে গেছে আমরা ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ চালু করতে পারিনি। যে কর্মসংস্থানের আকাঙ্ক্ষা থেকে ছাত্র গণঅভ্যুত্থান হলো সেই কর্মসংস্থানের জায়গাটা দুর্বল রয়ে গেল।”

অর্থনীতিতে সরকারের সমস্যার জায়গা তুলে ধরে তিনি বলছেন, “সরকার অনেক সংস্কারের কথা বলে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মধ্যমেয়াদী নীতিকাঠামো দেওয়া হয়নি অর্থনীতির।”

তিনি উল্লেখ করেন, “সফল হয়েছে কি ব্যর্থ হয়েছে এটা কোনো লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আমি মূল্যায়ন করব, এটা পারছি না। আমি যেটা পারি সেটা হলো যে আগে কী ছিল, এখন কী হয়েছে। সেহেতু আগের সাথে পরের তুলনা করে আমরা দেখি যে একটা মিশ্র পরিস্থিতি এখানে আছে।”

বিচার ও সংস্কার
অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে বড় দায়িত্ব ছিল জুলাই হত্যার বিচার এবং প্রশাসন থেকে শুরু করে নির্বাচন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে মৌলিক কিছু সংস্কার করা।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন তিনটি ক্ষেত্রেই কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।”

জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে সরকার একটি রূপরেখা দিয়েছে। তবে বিচার ও সংস্কার ইস্যুতে অগ্রগতির বেলায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

গত এক বছরে বিচার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বিচার প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ, এ নিয়ে বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই।”

কারণ হিসেবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “ঢালাও মামলার ব্যাপারে শুরু থেকেই তাদের উদ্বেগ রয়েছে। এটি কোনো দেশেই বিচার প্রক্রিয়ার জন্য সুষ্ঠু না বলে তারা মনে করেন।”

এ বিষয়ে সরকারের একটা অবস্থান আছে যে মামলাগুলো সরকার করে না, সে কথা উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন,“এটা ঠিক। কিন্তু এটাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিকারের উপায় তো সরকারকেই বের করতে হবে। সেদিকে আমরা তেমন কিছু দেখি না। কতটুকু বিচার, কতটুকু প্রতিশোধ এই প্রশ্নটা ওঠা খুবই যৌক্তিক, যেভাবে চলছে। অন্যদিক থেকে আবার বিচারকেন্দ্রিক অনিয়ম-দুর্নীতি-যেমন মামলা বাণিজ্য, গ্রেপ্তার বাণিজ্য, জামিন বাণিজ্য এই বিষয়গুলো মোটামুটি এক ধরনের স্বাভাবিকতায় রূপান্তর করা হয়েছে।”

ইফতেখারুজ্জামান সরকার গঠিত দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ছিলেন, এছাড়া জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনেরও সদস্য।

তিনি বলছেন, “দ্বিতীয় পর্যায়ে যে পাঁচটি সংস্কার কমিশন, সে কমিশনগুলো যথাযথ সময়ে রিপোর্ট দিয়েছে। রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে আশু করণীয় প্রস্তাবনাগুলো জমা দিয়েছে সরকারের কাছে। কিন্তু সেগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, কোনো অগ্রগতি নেই।”

তার ভাষায়, “দুদক সংস্কার কমিশনসহ প্রথম দফার ছয়টি কমিশনের মধ্যে যে পাঁচটি কমিশনের আশু করণীয় প্রস্তাবগুলো এসেছে সেগুলোর ভাগ্যে কী হয়েছে এ প্রশ্নের জবাব কিন্তু সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। যদিও সরকার বলছে ‘পদক্ষেপ নিচ্ছি’, কিন্তু বাস্তবে বলার মতো কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন রাখেন, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে পিক অ্যান্ড চুজ। যেমন প্রশাসনিক সংস্কারের ক্ষেত্রে কমিশনের শতাধিক সুপারিশ ছিল, তার মধ্যে থেকে দেড় ডজনের মতো সুপারিশ পিক করা হয়েছে; যেখানে প্রাধান্যটা যদি দেখি, একটা দৃষ্টান্ত হচ্ছে- টয়লেট পরিষ্কার রাখতে হবে। বাংলাদেশে প্রশাসন সংস্কারের যে মৌলিক যায়গাগুলো সেগুলো কোথায়?”

আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও ‘মব ভায়োলেন্স’
অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরে সারা দেশে ‘মব ভায়োলেন্স’ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, “সরকার বা সেনাবাহিনী বলছে যে মব ভায়োলেন্স টলারেট করবে না। কিন্তু কার্যত আমরা দেখতে পাচ্ছি যে মবের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এবং আমরা দেখেছি যে সরকার বিভিন্ন সময় একে বৈধতা দিয়েছে বলে মনে হয়েছে।”

মব নিয়ে সমালোচনার মুখে বিভিন্ন সময় সরকারের উপদেষ্টারা বলেছেন, মব ভায়োলেন্সকে সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে না, এমনকি এর সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উন্নতির জন্য সরকার সেনাবাহিনীকে মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মাঠে রেখেছে। সরকারের দাবি, পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারের চেষ্টার ঘাটতি নেই।

সূত্র: বিবিসি

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ