কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে (২০২৫-২০২৬) আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থী হারুনুর রশিদ আবার সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক।

এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী এস এম শাতিল মাহমুদ। তিনি কুমারখালী উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক।

গতকাল বুধবার রাতে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান কে এম আবদুর রউফ। কমিশনের সদস্য ছিলেন মোস্তফা সামসুজ্জামান ও আল মুজাহিদ হোসেন।

আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৭টি পদের মধ্যে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত ৯ জন, বিএনপি–সমর্থিত ৩ জন, বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ দুজন, জামায়াত–সমর্থিত দুজন, জাতীয় পার্টি–সমর্থিত একজন নির্বাচিত হয়েছেন।

আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে গত সোমবার আদালত চত্বরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই দিন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ৪০–৫০ জন আদালত চত্বরে নির্বাচনী পাঁচটি ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুর করেন। তখন এক শিক্ষানবিশ আইনজীবী মুঠোফোন দিয়ে ওই দৃশ্য ধারণ করছিলেন। তখন তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। এ নিয়ে আদালতপাড়ায় আলোচনা–সমালোচনা হয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে ১৭টি পদের জন্য ৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ নির্বাচনে কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির ৪৬০ জন ভোটারের মধ্যে ৪৩০ জন ভোটার তাঁদের ভোট দেন।

সভাপতি পদে হারুনুর রশিদ ১৪৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোহেল খালিদ মো.

সাঈদ ১০৮ ভোট পেয়েছেন। বিএনপির একাংশের সমর্থিত প্রার্থী মাহাতাব উদ্দিন পেয়েছেন ৭৭ ভোট। জামায়াতপন্থী আইনজীবী আজিজুর রহমান পেয়েছেন ৩৯ ভোট। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মনোনীত প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোহাম্মদ পেয়েছেন ৩৬ ভোট। আরেক সভাপতি প্রার্থী জাসদ–সমর্থিত তানজিলুর রহমান পেয়েছেন ১৬ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে আইনজীবী এস এম শাতিল মাহমুদ ১৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ–সমর্থিত খ ম আরিফুল ইসলাম ১৬৭ ভোট পেয়েছেন।

এ ছাড়া সিনিয়র সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ফারুক আজম মৃধা, সহসভাপতি পদে মাহমুদুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নাজমুন নাহার, কোষাধ্যক্ষ পদে আবুল হাশিম, গ্রন্থাগার সম্পাদক পদে সুলতানা বেগম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মকলেচুর রহমান ও দপ্তর সম্পাদক পদে ওয়ালীউল বারী।

এ ছাড়া সিনিয়র সদস্য পদে মারুফ বিল্লাহ, আশুতোষ কুমার পাল, আয়েশা সিদ্দিকা, হাফিজুর রহমান এবং জুনিয়র সদস্য পদে মুহাইমিনুর রহমান, সাইফুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ব চ ত হয় ছ ন ল গ সমর থ ত ব এনপ র র সদস য র রহম ন আইনজ ব আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর