মির্জাপুরে ঈদের আনন্দ নেই ৫৪ কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি)। কারণ ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ তাদের। কবে নাগাদ বেতন পাবেন তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।

গত ২০১১ সালে একটি প্রকল্পের অধীনে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও তিন দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ায় সরকার। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরতদের বেতন-ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়নি।

এদিকে গত বছরের জুলাই মাস থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন-ভাতা বকেয়া পড়েছে। এ অবস্থায় সারাদেশে কর্মরত সিএইচসিপিরা তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থান্তারের দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের ফলে চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাসও পান তারা। আশ্বাসের পর এখন বকেয়া বেতন প্রকল্প না রাজস্ব কোন খাত থেকে আসবে তাও জানেন না তারা। এমনকি প্রণোদনা ভাতাও পাননি।

বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে সিএইচসিপিদের সাড়ে তিন মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল থেকে অফিস চলাকালীন সময়ে সোনালী ব্যাংকে অপেক্ষা করে বিকেলে খালি হাতে হতাশা নিয়ে ফিরে যান তারা। যে কারণে ঈদের আমেজ নেই তাদের পরিবারে।

অভিরামপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জিয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘৯ মাস বেতন না হওয়ায় অনেক কষ্টে আছি। ঈদের আগে সাড়ে তিন মাসের বেতন হওয়ার কথা থাকলেও তা অনিশ্চযতার মধ্যে পড়েছে।’

উপজেলা সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন সিকদার জানান, ৯ মাস ধরে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ। এতদিন ধারদেনা করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ জোগাতে হয়েছে। এখন আর কেউ ধারও দিচ্ছে না। ঈদে কেনাকাটা তো এখন চিন্তাও করা যাচ্ছে না।

উপজেলা সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন চৌধুরী বলেন, বর্তমান বাজারে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সামান্য বেতনে চলতে এমনিতেই কষ্ট হয়। এর মধ্যে ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টের শেষ নেই।

গত ৯ মাস ধরে সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করেছেন মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে তাদের সাড়ে তিন মাসের বেতন-বোনাস পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব স থ যকর ম প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলা সরকারের হুমকির মধ্যেও নোবেল নিতে যাবেন মাচাদো

নোবেল শান্তি পুরস্কার নিতে নরওয়ে যাবেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। আগামী বুধবার নরওয়ের অসলো শহরে এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। ৫৮ বছর বয়সী মাচাদোর দেশত্যাগে ভেনেজুয়েলা সরকারের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন তিনি।

মাচাদো বর্তমানে ভেনেজুয়েলায় আত্মগোপনে আছেন। তাঁকে নিয়ে নোবেল ইনস্টিটিউটের প্রধান ক্রিস্টিয়ান ব্রেগ হার্পভিকেন গতকাল শনিবার এএফপিকে বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) রাতে মাচাদোর সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি অসলোয় আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে তিনি কবে বা কীভাবে আসবেন, তা বলতে পারছি না।’

গত ১০ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল পান মাচাদো। পরের মাসে ভেনেজুয়েলার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছিলেন, মাচাদো যদি নোবেল পুরস্কার নিতে নরওয়েতে যান, তাহলে তিনি ‘ফেরারি’ হিসেবে গণ্য হবেন। মাচাদোর নোবেল পুরস্কারের সমালোচনা করে সে সময় হোয়াইট হাউসও বলেছিল, ‘শান্তির ওপরে রাজনীতিকে’ স্থান দিয়েছে নরওয়ের নোবেল কমিটি।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন নিকোলা মাদুরো। তাঁর বিরুদ্ধে তখন নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিলেন মাচাদো। তাঁকে নির্বাচনে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছিলেন। নির্বাচনের ফলের প্রতিবাদ জানানোয় সে সময় প্রায় ২ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন মাচাদো।

মাচাদোর প্রতি সমর্থন

এদিকে নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আগে শনিবার বিভিন্ন দেশে মাচাদোর সমর্থনে সমাবেশ হয়েছে। মাদ্রিদ, বুয়েনস এইরেস, লিমা, ব্রিসবেনসহ বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নামেন হাজারো মানুষ। পেরুর রাজধানী লিমায় মাচাদোর ছবি নিয়ে সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের ‘ভেনেজুয়েলা মুক্ত করো’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। ছিল ভেনেজুয়েলার জাতীয় পতাকাও।

কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায় মাচাদোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে একত্র হন ভেনেজুয়েলার একদল নাগরিক। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে দেখা যায় প্রায় ৫০০ ব্যক্তিকে। তাঁদের একজন ৬০ বছর বয়সী ন্যান্সি হোয়ার বলেন, মাচাদোর নোবেল পুরস্কারের কারণে প্রবাসী ভেনেজুয়েলানদের মুখে আজ হাসি ফুটেছে।

এমন সময় মাচাদোর নোবেল পুরস্কারের বিষয়টি আবার সামনে এল, যখন ভেনেজুয়েলা ঘিরে ক্যারিবীয় সাগরে ব্যাপক সেনা মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভেনেজুয়েলায় হামলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এমন তৎপরতার পেছনে অবৈধ মাদক চোরাচালান বন্ধের কথা বলা হলেও মাদুরোর দাবি, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতেই এসব করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ