৯ মাসের বেতন বকেয়া, ঈদ নেই ৫৪ স্বাস্থ্যকর্মীর ঘরে
Published: 27th, March 2025 GMT
মির্জাপুরে ঈদের আনন্দ নেই ৫৪ কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি)। কারণ ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ তাদের। কবে নাগাদ বেতন পাবেন তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।
গত ২০১১ সালে একটি প্রকল্পের অধীনে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও তিন দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ায় সরকার। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরতদের বেতন-ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়নি।
এদিকে গত বছরের জুলাই মাস থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন-ভাতা বকেয়া পড়েছে। এ অবস্থায় সারাদেশে কর্মরত সিএইচসিপিরা তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থান্তারের দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের ফলে চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাসও পান তারা। আশ্বাসের পর এখন বকেয়া বেতন প্রকল্প না রাজস্ব কোন খাত থেকে আসবে তাও জানেন না তারা। এমনকি প্রণোদনা ভাতাও পাননি।
বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে সিএইচসিপিদের সাড়ে তিন মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল থেকে অফিস চলাকালীন সময়ে সোনালী ব্যাংকে অপেক্ষা করে বিকেলে খালি হাতে হতাশা নিয়ে ফিরে যান তারা। যে কারণে ঈদের আমেজ নেই তাদের পরিবারে।
অভিরামপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জিয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘৯ মাস বেতন না হওয়ায় অনেক কষ্টে আছি। ঈদের আগে সাড়ে তিন মাসের বেতন হওয়ার কথা থাকলেও তা অনিশ্চযতার মধ্যে পড়েছে।’
উপজেলা সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন সিকদার জানান, ৯ মাস ধরে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ। এতদিন ধারদেনা করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ জোগাতে হয়েছে। এখন আর কেউ ধারও দিচ্ছে না। ঈদে কেনাকাটা তো এখন চিন্তাও করা যাচ্ছে না।
উপজেলা সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন চৌধুরী বলেন, বর্তমান বাজারে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সামান্য বেতনে চলতে এমনিতেই কষ্ট হয়। এর মধ্যে ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টের শেষ নেই।
গত ৯ মাস ধরে সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করেছেন মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে তাদের সাড়ে তিন মাসের বেতন-বোনাস পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ যকর ম প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএলে টিকিট কেলেঙ্কারি ও জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হায়দরাবাদ ক্রিকেটের প্রধান
হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এইচসিএ) সভাপতি এ জগন মোহন রাও, কোষাধ্যক্ষ সি জে শ্রীনিবাস ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুনীল কান্তেকে জালিয়াতি ও তহবিল অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে তেলেঙ্গানার অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
হায়দরাবাদের স্থানীয় ক্রিকেট ক্লাবের দুই সদস্য রাজেন্দর যাদব এবং তাঁর স্ত্রী কবিতাকেও নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এইচসিএ সভাপতি যে মামলায় জড়িয়েছেন, তাঁর সঙ্গে এই দুজন জড়িত আছেন কি না, সেটা জানতে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আরও পড়ুনগ্লোবাল সুপার লিগে সাকিব ও রংপুর রাইডার্সের ম্যাচ কবে, কখন১ ঘণ্টা আগেএইচসিএর তিন অফিশিয়ালের বিরুদ্ধে গত মাসে এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) দায়ের করে তেলেঙ্গানা সিআইডি। তাঁদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা, ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার, সম্পদের অপব্যবহার ও বিশ্বাস ভাঙার অভিযোগ আনা হয়।
এই এফআইআর করা হয় গত ৯ জুন তেলেঙ্গানা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি ডি গুরুভা রেড্ডির করা অভিযোগের ভিত্তিতে। রেড্ডির অভিযোগ ছিল, ২০২৩ সালে এইচসিএর নির্বাচনে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে অংশ নেন জগন মোহন রাও। বাকিদের সঙ্গে নিয়ে তিনি অ্যাসোসিয়েশনের তহবিল থেকে ২ কোটি ৩২ লাখ রুপি সরিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন রেড্ডি।
সিআইডির একটি সূত্র ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, এইচসিএর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জনে জগন মোহন জালিয়াতির মাধ্যমে একটি ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যপদ নেন—তা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এইচসিএ নির্বাচনে অংশ নিতে অন্যতম শর্ত হলো, এই অ্যাসোসিয়েশন অনুমোদিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ থাকতে হবে।
আরও পড়ুনযেভাবে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারে ইতালি২ ঘণ্টা আগেসিআইডির সে সূত্র আরও জানিয়েছে, এ বছর আইপিএলে ফ্রি বা উপহারসূচক টিকিট বণ্টন নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল এইচসিএ ঘিরে, সে বিষয়েও গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে এইচসিএ কোষাধ্যক্ষ শ্রীনিবাসকে এ বিষয়ে একটি মেইল করেছিলেন আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ম্যানেজার টি বি শ্রীনাথ। সেই মেইলে তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৭ মার্চ লক্ষ্মৌ সুপারজায়ান্টস ও সানরাইজার্সের মধ্যকার ম্যাচে এইচসিএর কর্মীরা রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের করপোরেট বক্স বন্ধ রাখেন। ‘২০টি অতিরিক্ত ফ্রি টিকিট না দিলে’ এইচসিএ কর্মীদের করপোরেট বক্স খুলতে অস্বীকৃতি জানানোর কথা মেইলে উল্লেখ করেন শ্রীনাথ।
টিকিট বণ্টন নিয়ে বিসিসিআই, সানরাইজার্স ও এইচসিএর মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির শর্তানুসারে, এইচসিএ ৩ হাজার ৯০০টি ফ্রি টিকিট পাবে, যা স্টেডিয়ামের মোট আসনসংখ্যার ১০ শতাংশ। কিন্তু এইচসিএ কর্মকর্তারা আরও ১০ শতাংশ ফ্রি টিকিট চান, যা দিতে অস্বীকৃতি জানায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।সেই মেইলে সানরাইজার্সের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এই ব্ল্যাকমেল ও হুমকি দেওয়া হয়, যা শুধু অবৈধ নয়, অগ্রহণযোগ্যও। এতে আমাদের দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কাজ করার পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’
হায়দরাবাদ রাজ্যের তদন্তকারী বিভাগ (ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্ট) তদন্ত শেষে তাদের প্রতিবেদন রাজ্য সরকারকে হস্তান্তর করেছে, যেখানে এইচসিএকে আইন ভাঙার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন১২ মাসে জয়ের চেয়ে হার বেশি, তবু বেতন বাড়ছে বাবর-সালমানদের৪ ঘণ্টা আগেভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, টিকিট বণ্টন নিয়ে বিসিসিআই, সানরাইজার্স ও এইচসিএর মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির শর্তানুসারে, এইচসিএ ৩ হাজার ৯০০টি ফ্রি টিকিট পাবে, যা স্টেডিয়ামের মোট আসনসংখ্যার ১০ শতাংশ। কিন্তু এইচসিএ কর্মকর্তারা আরও ১০ শতাংশ ফ্রি টিকিট চান, যা দিতে অস্বীকৃতি জানায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
বিসিসিআই ও আইপিএল গর্ভনিং কাউন্সিলকে সঙ্গে নিয়ে এরপর এইচসিএর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় সানরাইজার্সের পক্ষ থেকে, যেখানে বলা হয় এইচসিএ বারবার ‘ব্ল্যাকমেল করার কৌশলে হাঁটছে। তবে এইচসিএর পক্ষ থেকে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়। হায়দরাবাদ থেকে ‘হোম ম্যাচ’ সরিয়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এরপর রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে এইচসিএ সচিব আর দেবরাজ সানরাইজার্সের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।