চট্টগ্রামে শনাক্তের বাইরে ৮২ শতাংশ রোগী
Published: 17th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরণজনিত হিমোফিলিয়া রোগী বাড়লেও নেই শনাক্তের ব্যবস্থা। ফলে ঢাকায় ছুটতে গিয়ে অনেকেই মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। চিকিৎসা সহজলভ্য না হওয়ায় বন্দরনগরীতে আক্রান্তের ৮২ শতাংশ শনাক্তের বাইরে থাকছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়ার তথ্যমতে, দেশে প্রতি লাখে ১০ জন হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত। ১৭ কোটি মানুষ ধরলে রোগী হওয়ার কথা প্রায় ১৭ হাজার।
অথচ শনাক্ত হয়েছে তিন হাজারের কিছু বেশি, অর্থাৎ প্রায় ৮২ শতাংশ এখনও শনাক্তের বাইরে রয়ে গেছে।
চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলায় হিমোফিলিয়ার রোগী মিলছে। বাঁশখালীতেই রয়েছে শতাধিক। শনাক্ত হয়েছে মাত্র ১৬ জন।
চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার রোগী চিকিৎসা পাওয়ার জন্য ছুটে আসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমে) হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে। কিন্তু ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিভাগে নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক ও জনবল। পূর্ণাঙ্গভাবে হিমোফিলিয়া নির্ণয়ের ব্যবস্থা না থাকায় কিছু রক্ত
পরীক্ষা করে রোগীকে জোড়াতালির চিকিৎসা দিচ্ছে বিভাগটি।
এ ব্যাপারে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত বাড়ছে হিমোফিলিয়া রোগী। তবে পুরো অঞ্চলের রোগীর জন্য নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসার সুযোগ। চমেক হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে নেই রোগটি শনাক্তের উপযুক্ত কোনো যন্ত্রপাতি। এটি নিয়ে আমরাও বিব্রত।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে একাধিকবার চিঠি দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা ৮০ শতাংশই গরিব-অসহায়, যাদের পক্ষে বাড়তি টাকা খরচ করে বাইরে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়।’
হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা.
চট্টগ্রামের বিশিষ্ট হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘হিমোফিলিয়া মারণব্যাধি। সঠিকভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা না পেলে রোগী ঝুঁকিতে পড়ে ও
অকালে পঙ্গুত্ব বরণ করে। এক পর্যায়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল; দেশে প্রয়োজনীয় ইনজেকশনও পাওয়া যায় না। ফলে সরকারিভাবে রোগটির চিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
হেমাটোলজি বিভাগের তথ্যমতে, এক বছরের ব্যবধানে চট্টগ্রামে রোগী বেড়েছে শতাধিক। এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে পাঁচ শতাধিক। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ফ্যাক্টর
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’