Samakal:
2025-05-01@00:18:49 GMT

আইফোন নিয়ে কেন উৎকণ্ঠা

Published: 20th, April 2025 GMT

আইফোন নিয়ে কেন উৎকণ্ঠা

সারাবিশ্বে প্রতিবছর ২২ কোটির বেশি আইফোন ইউনিট বিক্রি করে অ্যাপল।
নির্মাতা ফক্সকন এখন আইফোন উৎপাদনে ভারতে কাজ করছে। অ্যাপল ইতোমধ্যে ভারতে ২০ শতাংশ উৎপাদন লক্ষ্য বাড়িয়েছে, যা কার্গো বিমানে পৌঁছে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্রুত উৎপাদনে বাড়ানো হয় জনবল। ফক্সকন ভারতের চেন্নাই কারখানায় গত বছর দুই কোটি আইফোন তৈরি করেছে। আইফোনের দুটি মডেল ১৫ ও ১৬ রয়েছে ওই উৎপাদন তালিকার শীর্ষে।
যুক্তরাষ্ট্র আইফোনের সর্ববৃহৎ বিপণিকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত। শুরুতেই চীন থেকে আইফোন আমদানির ওপর বেশি নির্ভরশীল অ্যাপল। ইতোমধ্যে ভারত থেকে বিশেষ উদ্যোগে আইফোন আমদানি করেছে অ্যাপল। কারণ,  চীনের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের শুল্কহার নীতি চীনের তুলনায় ভারতে অনেক কম (মাত্র ২৬ শতাংশ)। কিছুদিন আগে অ্যাপল ট্রাম্পের শুল্কহার থেকে রেহাই পেতে ভারত থেকে কয়েকটি কার্গো বিমানে ৬০০ টন আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে, সংখ্যায় যা প্রায় ১৫ লাখ ইউনিট। রিপোর্ট বলছে, অ্যাপল হুট করে দাম বাড়ার শঙ্কায় গোপনে এমন কৌশল নিয়েছে। ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কের চাপ কমাতে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন আমদানি বাড়িয়েছে অ্যাপল।

জানা গেছে, মূলত ট্রাম্পের শুল্ক ধাক্কার চাপ সামলাতে এমনটা করেছে অ্যাপল। চীনের বদলে ভারতে আইফোন উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করেছে অ্যাপল। ইতোমধ্যে অ্যাপল ভারতের চেন্নাই বিমানবন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের সময় কমিয়ে ছয় ঘণ্টা করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেনদরবার করছে।
রিপোর্টে প্রকাশ, গত মার্চ থেকে ছয়টি কার্গো জেট (প্রতিটির ধারণক্ষমতা ১০০ টন) চেন্নাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে। আইফোন-১৪ মডেলের প্যাকজের ওজন প্রায় ৩৫০ গ্রাম। প্যাকেজিং হিসাব বলছে, ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ছয়টি কার্গোতে প্রায় ১৫ লাখ আইফোন ইউনিট রপ্তানি হয়ে থাকতে পারে। অবশ্য অ্যাপল ও ভারতের বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় আমদানি-রপ্তানির বিষয়ে কিছুই বলেনি; বরং বিশেষ গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছে।

চীনের ওপর শুল্কহার বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছেন ট্রাম্প। আগে ৫৪ শতাংশ হারে আইফোন-১৬ প্রো ম্যাক্স মডেলের দাম পড়ত ১ হাজার ৫৯৯ ডলার। নতুন শুল্কে যা বেড়ে ২ হাজার ৩০০ ডলারে পৌঁছে যাবে। এতে ক্রেতার ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। ভাটা পড়ত আইফোন বিপণনে। সম্ভাব্য ক্ষতির মুখে পড়ত অ্যাপল। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইফ ন অ য পল র ওপর আইফ ন আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের

এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।

টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর। 

গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।

দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।

সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত। 

শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।

মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।  

সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ