বেড়াতে গিয়ে জিতলেন ৩৮ কোটি টাকার লটারি
Published: 27th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক পর্যটক। কিছু জিনিস কেনাকাটা করতে হোটেলের পাশের একটি দোকানে ঢোকেন। প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে বেরিয়ে আসার সময় দেখেন, বিক্রি হচ্ছে লটারির টিকিট। নিজের ভাগ্য যাচাই করে দেখাই যাক—এই ভাবনা থেকে একটি লটারির টিকিট কিনে ফেলেন তিনি।
হোটেলে ফিরে লটারির ফলাফল দেখতে গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য তিনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কারণ, আর কেউ নয়, তিনিই জিতেছেন লটারি, পুরস্কার ৩১ লাখ ৮৮ হাজার ১০৪ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বেশি!
ওই পর্যটক নিজের ডাকনাম ‘ট্রাভেলিং ট্রেজার’ বলেছেন। তিনি ইলিনয় লটারি কর্মকর্তাদের বলেছেন, ‘আমি এর আগেও শিকাগোতে এসেছি। কিন্তু আগে কখনো এখানকার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখার সুযোগ পাইনি। তাই এবার আমি যতটুকু সম্ভব ঘুরে বেড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম।’
ওই ব্যক্তি উইলিস টাওয়ারের স্কাই ডেক দেখেছেন, সিনেমার শুটিং হয়, এমন কিছু জায়গাও ঘুরে দেখেছেন। ঘুরে বেড়ানোর এই সময়ে তিনি নর্থ কাম্বারল্যান্ড অ্যাভিনিউয়ের একটি দোকানে ঢুকে দেখেন, স্থানীয় ফাস্টপ্লে আল্টিমেট ডায়মন্ড জ্যাকপট টিকিট বিক্রি হচ্ছে, পুরস্কারের অঙ্কও বেশ বড়। নিজের ভাগ্য যাচাই করতে তিনি একটি টিকিট কিনে ফেলেন।
সেদিনের বর্ণনায় লটারিজয়ী ওই ব্যক্তি বলেন, ‘এক সন্ধ্যায় হোটেলে ফেরার আগে আমি কাছের একটি দোকানে ঢুকি। আমি দেখতে পাই, আল্টিমেট ডায়মন্ড জ্যাকপট খেলায় সে মুহূর্তে বেশ বড় অঙ্কের পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ভাগ্য যাচাই করতে আমি একটি টিকিট কিনে ফেলি। হোটেলে ফিরে আমি যখন লটারির ফলাফল দেখি, দেখতে পাই, আমিই পুরস্কার জিতেছি, পুরস্কারের অংশ ৩০ লাখ ডলারের বেশি। ওই মুহূর্তে আমি একই সঙ্গে হতবাক এবং বিস্মিত হয়েছিলাম। আমি নড়তে পারছিলাম না।’
পুরস্কারের অর্থ দিয়ে কী করবেন, সে পরিকল্পনাও করে ফেলেছেন ট্রাভেলিং ট্রেজার। তিনি বলেন, ‘শুরুতে আমি একটি বাড়ি কিনতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন বাড়ির দাম যা বেড়ে গেছে, তাই বাড়ি কেনা সম্ভব হয়নি। আমি সম্প্রতি দেখতে পাই, আমি যে অ্যাপার্টমেন্টটি ভাড়া নিয়েছি, আমার বাড়ির মালিক সেটি বিক্রি করে দিতে চলেছেন, আমাকে তো এখন একটা চেষ্টা করতেই হবে। আমার নিজেকে অসম্ভব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। লটারিতে পুরস্কার জয়ের এর থেকে ভালো সময় আর হতে পারত না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ক র
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের মধুসহ ২৪ পণ্য পেল জিআই সনদ
মণিপুরি শাড়ি, গামছা, লিচু, আম, মধুসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি পণ্যকে জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এই সনদ দেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সভায় শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মেধাসম্পদ দিবসের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী, অভিনেত্রী ও সংগীত পরিচালক আরমিন মুসা।
সভায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, দেশের প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে জামদানি শাড়ি। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল। জিআই পণ্য দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে লালন করে। এই পণ্যের বাজারজাতকারীদের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীদের ক্ষমতায়ন হবে।
এ সময় তিনি জিআই পণ্যের তালিকা সমৃদ্ধ করার পর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিকশিত করার আহ্বান জানান।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব গান। এ দেশের মানুষ গানের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করে, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। সংগীত নিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বড় প্রকল্পের কাজ করছে। দেশের মানুষ কিছু দিনের মধ্যে তা দেখতে পাবে। সংগীতের কপিরাইট নিশ্চিত করতে হবে।
নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হলো– নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, কুমারখালীর বেডশিট, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর, নওগাঁর নাকফজলি আম, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ।
সভায় এসব জিআই সনদ বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নাকফজলি আমচাষি সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়।