নাগরিকের সুরক্ষায় জোরালো উদ্যোগ চাই
Published: 5th, May 2025 GMT
১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোর মধ্যে ভূমিমাইন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ চুক্তি হলেও বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ক্ষেত্রে ভয়ংকর এই অস্ত্রের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। সিরিয়া, ইউক্রেন, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে ভূমিমাইন বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
বাংলাদেশ ভূমিমাইন নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ। কিন্তু প্রতিবেশী মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের কারণে সীমান্তের নাগরিকেরা ভূমিমাইন বিস্ফোরণে যেভাবে হতাহত হচ্ছেন, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কেননা, বিস্ফোরণে কেউ চিরতরে পঙ্গু হচ্ছেন আবার কেউ চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। আবার পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিহত হওয়ায় কোনো কোনো পরিবার সীমাহীন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছেন। ফলে বাংলাদেশের নাগরিকদের সুরক্ষায় সরকার, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের জোরালো ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে মিয়ানমার সীমান্তের আমাদের নাগরিকেরা কতটা অরক্ষিত। শুধু এ বছরের চার মাসে ভূমিমাইন বিস্ফোরণে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। বেশির ভাগই হাত-পা হারানোয় পঙ্গু হয়ে গেছেন। জীবিকা হারিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
বান্দরবান ও কক্সবাজারের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত প্রায় ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এটা সত্যি যে বিশাল এই সীমানার অনেক জায়গাতেই কাঁটাতারের বেড়া নেই। আবার দুর্গম হওয়ায় বিজিবির পক্ষে নজরদারি করাও সম্ভব নয়। অনেকে চোরাচালান করতে মিয়ানমারে যান। এর বাইরেও গাছ কাটতে, মাছ ধরতে, গরু চরাতে কিংবা কৃষিকাজ করতে অনেকে সীমানা অতিক্রম করে মিয়ানমারে প্রবেশ করেন। এই সাধারণ মানুষেরাই ভূমিমাইন বিস্ফোরণের মুখে পড়ছেন।
আগে আরাকান আর্মিকে ঠেকাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভূমিমাইন পুঁতত। সম্প্রতি আরাকান আর্মি রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভূমিমাইন ব্যবহার করছে। সীমান্তে এভাবে মাইন পুঁতে রাখা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। কেননা, কোথাও মাইন পোঁতা থাকলে স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করতে হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামে যাওয়ার সুযোগ আছে।
কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। সে ক্ষেত্রে সীমান্তের অরক্ষিত জায়গাগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা জরুরি। শূন্যরেখা অতিক্রম করে আমাদের নাগরিকেরা যেন মিয়ানমারে প্রবেশ না করতে পারে, সে ব্যাপারে বিজিবির আরও সতর্কতা প্রয়োজন। মিয়ানমারে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করতে স্থানীয় প্রশাসন জনগণকে সচেতন করছে। আমরা মনে করি, স্থানীয় কমিউনিটিকে যুক্ত করে সচেতনতা অভিযান চালালে সেটা আরও বেশি কার্যকর হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নাগরিকের সুরক্ষায় জোরালো উদ্যোগ চাই
১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোর মধ্যে ভূমিমাইন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ চুক্তি হলেও বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ক্ষেত্রে ভয়ংকর এই অস্ত্রের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। সিরিয়া, ইউক্রেন, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে ভূমিমাইন বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
বাংলাদেশ ভূমিমাইন নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ। কিন্তু প্রতিবেশী মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের কারণে সীমান্তের নাগরিকেরা ভূমিমাইন বিস্ফোরণে যেভাবে হতাহত হচ্ছেন, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কেননা, বিস্ফোরণে কেউ চিরতরে পঙ্গু হচ্ছেন আবার কেউ চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। আবার পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিহত হওয়ায় কোনো কোনো পরিবার সীমাহীন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছেন। ফলে বাংলাদেশের নাগরিকদের সুরক্ষায় সরকার, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের জোরালো ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে মিয়ানমার সীমান্তের আমাদের নাগরিকেরা কতটা অরক্ষিত। শুধু এ বছরের চার মাসে ভূমিমাইন বিস্ফোরণে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। বেশির ভাগই হাত-পা হারানোয় পঙ্গু হয়ে গেছেন। জীবিকা হারিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
বান্দরবান ও কক্সবাজারের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত প্রায় ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এটা সত্যি যে বিশাল এই সীমানার অনেক জায়গাতেই কাঁটাতারের বেড়া নেই। আবার দুর্গম হওয়ায় বিজিবির পক্ষে নজরদারি করাও সম্ভব নয়। অনেকে চোরাচালান করতে মিয়ানমারে যান। এর বাইরেও গাছ কাটতে, মাছ ধরতে, গরু চরাতে কিংবা কৃষিকাজ করতে অনেকে সীমানা অতিক্রম করে মিয়ানমারে প্রবেশ করেন। এই সাধারণ মানুষেরাই ভূমিমাইন বিস্ফোরণের মুখে পড়ছেন।
আগে আরাকান আর্মিকে ঠেকাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভূমিমাইন পুঁতত। সম্প্রতি আরাকান আর্মি রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভূমিমাইন ব্যবহার করছে। সীমান্তে এভাবে মাইন পুঁতে রাখা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। কেননা, কোথাও মাইন পোঁতা থাকলে স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করতে হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামে যাওয়ার সুযোগ আছে।
কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। সে ক্ষেত্রে সীমান্তের অরক্ষিত জায়গাগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা জরুরি। শূন্যরেখা অতিক্রম করে আমাদের নাগরিকেরা যেন মিয়ানমারে প্রবেশ না করতে পারে, সে ব্যাপারে বিজিবির আরও সতর্কতা প্রয়োজন। মিয়ানমারে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করতে স্থানীয় প্রশাসন জনগণকে সচেতন করছে। আমরা মনে করি, স্থানীয় কমিউনিটিকে যুক্ত করে সচেতনতা অভিযান চালালে সেটা আরও বেশি কার্যকর হবে।