বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে কুমিল্লায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত। প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

আজ সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকা অবরোধ করেন বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আতের নেতা–কর্মীরা। পরে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এই দেড় ঘণ্টার মধ্যে মহাসড়কের উভয়মুখী লেনে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় প্রচণ্ড গরমে যানজটে আটকে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন শিশু ও নারীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের পদুয়ার বাজার এলাকায় নুরজাহান হোটেলের সামনে আজ সকাল থেকে জড়ো হতে থাকেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আতের নেতা–কর্মীরা। সকাল সোয়া ১০টার দিকে মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। প্রথমে উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অবরোধকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাঁরা মহাসড়কে নেমে পড়লে দুই দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের অনেকে মহাসড়কে বসে পড়েন। এতে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশাপাশি কুমিল্লা–নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধকারীরা রইস হত্যার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে প্রশাসন ও পুলিশের অনুরোধে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে যান।

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী একটি পরিবহনের বাসচালক হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘সকাল ১০টা ২০ মিনিটে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে এসে অবরোধে আটকা পড়ি। গরমে যাত্রীরাও কষ্ট পেয়েছেন। মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজট লেগে যায়। কিছু হলেই দাবি আদায়ের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করা আর বন্ধ হলো না। এভাবে মানুষকে জিম্মি করা আর কত দিন চলবে?’

অবরোধের কারণে দেড় ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয়মুখী লেনে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক অবর ধ র এল ক য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট

সারা দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

প্রস্তাবে জেলা জজদের মধ্য থেকে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি কর্তৃক হাইকোর্ট বিভাগে বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চ গঠনের বিষয়টিও প্রস্তাবে উঠে এসেছে। প্রস্তাবে মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে মামলা দায়েরের আগেই অনেক বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হবে এবং আদালতের ওপর মামলার ক্রমবর্ধমান চাপ অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোনো বাণিজ্যিক মামলা বা আবেদনের মূল্যমান ৫০ লাখ টাকা হলে তা বাণিজ্যিক আদালতে বিচার্য হবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার সময়ে সময়ে এই নির্ধারিত মূল্যমান সীমা পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।

সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বণিকদের সাধারণ লেনদেন থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও নৌপরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামোগত প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ চুক্তি, বিতরণ ও লাইসেন্সিং, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশক, বিমা এবং অংশীদারত্ব চুক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পরিষেবা খাত এবং শেয়ারহোল্ডার বা যৌথ উদ্যোগ–সম্পর্কিত বিরোধকে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালতের এখতিয়ারভুক্ত করার কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এর ফলে আধুনিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ–সম্পর্কিত প্রায় সব ধরনের বিরোধ একটি বিশেষায়িত আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।

বিচারপ্রক্রিয়াকে দ্রুত ও কার্যকর করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করার বিষয়ে প্রস্তাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চূড়ান্ত শুনানি অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব এড়াতে সংক্ষিপ্ত বিচারের সুযোগও প্রস্তাবে রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবে আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আর বলা হয়, বাণিজ্যিক আপিল আদালত ছয় মাসের মধ্যে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। প্রস্তাবে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিচারক ও আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং ধারাবাহিক পেশাগত উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ