বাংলাদেশ এআই সামিট শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার
Published: 6th, May 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে আগামী বৃহস্পতিবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে ‘বাংলাদেশ এআই সামিট’। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম আয়োজিত দিনব্যাপী এ সম্মেলনে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার, এআই ব্যবহারের প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা, উদ্ভাবন ও এআই প্রযুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি এআই হ্যাকাথনে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগিতায় আয়োজিত এ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে এআইয়ের সম্ভাবনা সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি, সরকারি–বেসরকারি–একাডেমিক অংশীদারত্ব জোরদারসহ জাতীয় এআই নীতিমালা গঠনে কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে অংশ নেবেন দেশ–বিদেশের ব্যবসায়িক নেতা, এআই–বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও উদ্ভাবকেরা।
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম ও বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের চারপাশের বিশ্বকে প্রতিনিয়ত বদলে দিচ্ছে। এই পরিবর্তনের অংশ হতে হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশাসন, স্বাস্থ্য, কৃষি ও শিল্প প্রতিটি খাতে এআইয়ের যথাযথ ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা জানার চেষ্টা করব কীভাবে এআই আমাদের শিল্পকে রূপান্তর ও মানুষের জীবনমান উন্নত করতে পারে।’
সম্মেলনে গত মার্চে অনুষ্ঠিত এআই হ্যাকাথনের সেরা ৩১টি দল নিজেদের তৈরি উদ্ভাবন প্রদর্শন করবে। বিচারকেরা সেগুলো মূল্যায়নের মাধ্যমে ছয়টি বিজয়ী দল নির্বাচন করবে। বিজয়ী প্রতিটি দলকে এক লাখ টাকার পুরস্কার দেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
সামাজিক সমস্যা সমাধানে এআইয়ের ব্যবহার
সমাজের অনেক মানুষ সাধারণ মানুষের মতো ভাষা ব্যবহার করেন না। তাঁরা হয়তো শুনতে পান না কিংবা কথা বলতে পারেন না। বিশেষ ইশারা ভাষা ব্যবহার করেন। এসব মানুষ প্রযুক্তিগত বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হন। তাঁদের কথা বিবেচনা করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ফিরোজা মেহজাবিন বাংলা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেটর প্রকল্প তৈরি করেন।
মেহজাবিন বলেন, ‘অনেকেই ইশারা ভাষা ব্যবহার করেন। তাঁদের কথা বিবেচনা করে আমি এই ভাবনা নিয়ে কাজ করছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকেই ভাষা–জড়তার কারণে যোগাযোগ করতে পারেন না। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান—যেমন হাসপাতাল বা করপোরেট—থেকে তাদের গ্রাহকসেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। আমার এই উদ্ভাবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে ইশারা ভাষাকে লেখা ও বাক্যে পরিণত করা যাবে, যেন তাঁদের সঙ্গে আমরা সাধারণ মানুষ যোগাযোগ করতে পারি। একইভাবে এআই ব্যবহার করে আমাদের ভাষাকে বাক্য ও ইশারা ভাষায় পরিণত করার মাধ্যমে তাঁরা আমাদের কথা সহজেই বুঝতে পারবেন।’
ফিরোজা মেহজাবিনের টিম ওয়াটারমেলন গ্রামীণফোনের এআইভিত্তিক ফিউচারমেকার্স প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নারী হিসেবে এআই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান হওয়াকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন মেহজাবিন। প্রযুক্তি খাতে নারীদের উপস্থিতি এমনিতেই কম, সেখানে এমন আয়োজন নারীদের আরও উৎসাহ দেবে।
গ্রামীণফোনের আয়োজনে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ফিউচারমেকার্স নামের প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে আয়োজন করা হয়। দেশের প্রথম জাতীয় পর্যায়ের এআইভিত্তিক আইডিয়া প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী ৭৮২টি আইডিয়ার মাধ্যমে তাঁদের সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা প্রদর্শন করেন।
প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার্সআপ হয়েছে টিম ওপিয়ন। তাদের প্রকল্প এআই-ড্রিভেন নিউজ ক্রেডিবিলিটি প্ল্যাটফর্ম। টিম সিন্যাপজ তাদের এআই ইনক্লুশন ফর ডিফারেন্টলি-এবলড লার্নারস প্রকল্প এবং টিম লাস্তা তাদের দিশা: ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন থ্রো এআই প্রকল্পের জন্য যৌথভাবে দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গত সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয়েছিল ফিউচারমেকার্স প্রতিযোগিতা। প্রাথমিক বাছাইপর্ব শেষে নির্বাচিত দল বিচারক প্যানেলের সামনে তাদের এআইভিত্তিক ধারণাগুলো উপস্থাপন করে।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির (সিইও) আজমান বলেন, ‘আমরা যখন এআইনির্ভর ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, তখন তরুণ প্রজন্মকে সেই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও মানসিকতা অর্জনে সহায়তা করাটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামীণফোনে আমরা এআইকে দেখি উদ্ভাবন, উৎপাদনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির নিয়ামক হিসেবে। ফিউচারমেকার্সের মাধ্যমে আমরা এমন তরুণ উদ্ভাবকদের গড়ে তুলতে চাই, যারা ভবিষ্যতের কর্মশক্তিকে নেতৃত্ব দেবে এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা পুরস্কারের পাশাপাশি গ্রামীণফোনের শীর্ষ প্রতিভা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে দ্রুত অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। প্রাইজ মানির পাশাপাশি বাস্তব উদ্ভাবনী পরিবেশে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন ও নিজেদের ধারণা আরও পরিমার্জন করার সুযোগ পাবেন, যা তাঁদের প্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যত নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তুলবে।
বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিচারকের দায়িত্বে থাকা গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান, চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার সৈয়দা তাহিয়া হোসেন, চিফ বিজনেস অফিসার আসিফ নাইমুর রশীদ ও চিফ ইনফরমেশন অফিসার ড. নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন।