ভারত-পাকিস্তান সংঘাত, কয়েকটি এয়ারলাইন্সের রুট পরিবর্তন
Published: 7th, May 2025 GMT
কাশ্মীরে হামলা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানের কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এসব হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত এবং ৪৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। এ হামলার পাল্টা জবাবে ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।
দেশ দুটির আকাশপথে এমন হামলা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের রুট পরিবর্তন করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত পাকিস্তানের মাঝে সংঘাতের কারণে ইউরোপগামী অনেক ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন বা বাতিল করেছে এশিয়ার একাধিক এয়ারলাইন্স।
ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালানোর পর ইসলামাবাদ জানায়, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক আকাশপথেও।
তাইওয়ানের ইভা এয়ার জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল এড়িয়ে চলার জন্য নতুন করে রুট নির্ধারণ করছে ইউরোপগামী ও ইউরোপ ফেরত ফ্লাইটগুলো।
বিমান সংস্থাটি আরও জানায়, ভিয়েনা থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি ফ্লাইটকে আবার সেখানেই ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাইপেই থেকে মিলানগামী একটি ফ্লাইট ভিয়েনায় গিয়ে জ্বালানি নিয়ে গন্তব্যে রওনা দেবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ান এয়ার জানিয়েছে, তারা সিওল থেকে দুবাইগামী ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করেছে। তারা এখন পাকিস্তানের আকাশের পরিবর্তে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও ভারতের ওপর দিয়ে চলবে।
থাই এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, ইউরোপ ও দক্ষিণ এশিয়াগামী ফ্লাইটগুলো আজ বুধবার ভোর থেকে নতুন রুটে যাচ্ছে। এতে কিছু ফ্লাইটে দেরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা।
ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে তাদের ফ্লাইট পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং রিরাউটিং সংক্রান্ত বিস্তারিত সময়সূচি পরে জানানো হবে।
তাইওয়ানের চায়না এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, চলমান প্রেক্ষাপটে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা জরুরি পরিকল্পনা করছে। তবে তারা এখনও বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
এছাড়া, কাতার এয়ারওয়েজও পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য পাকিস্তানে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করেছে।
কাশ্মীরে হামলার পর কিছুদিন ধরেই পারমাণবিক ক্ষমতাধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছিল, এখন তা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মতো অবস্থায় গড়িয়েছে। ভারত সরকারের এক বিবৃতির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করেছে। এ হামলার পর পাকিস্তান দাবি করে ভারত বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে এ হামলা চালিয়েছে। তবে ভারত সরকারের দাবি, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে এ অভিযানে নিশানা করা হয়নি। গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর থেকে ভারত–পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার মধ্যে এবার সংঘর্ষে জড়াল দেশ দুটি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত ফ ল ইট র বর ত ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান ৫১ নাগরিকের
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জুলাই অভ্যুত্থানের সফলতায় বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস উল্লেখ করে এ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন ৫১ জন নাগরিক।
সোমবার তাঁদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগীতবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে একটি পক্ষের লাগাতার বক্তব্য, বিবৃতি, কর্মসূচি গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। আমরা মনে করি, সংগীতের শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে তাদের বিরোধিতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিপরীত।’
জুলাই আন্দোলনে সব শ্রেণি–পেশা এবং ধর্ম ও মতের মানুষ অংশ নিয়েছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তবে সফল অভ্যুত্থানের পরপরই নানা ধরনের বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস চলছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক বাতিলের দাবি এ বিভাজনকে আরও জটিল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।’
বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, শিশুর নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি মেধা ও মননের বিকাশে সংগীত ও নৃত্যকলার প্রয়োজনও রয়েছে। সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে শিশুরা আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যকে নিজের ভেতরে ধারণ করতে সক্ষম হবে। বিশ্ব সংস্কৃতির পরিসরে বাংলাদেশের হয়ে তারা অংশ নিতে পারবে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গেছে, ইসলামি সভ্যতায় গানের চর্চা ও সাধনার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। গান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলাম তার সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটিয়েছে, যা মানুষকে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করেছে।’
বাংলাদেশ গান, নাচ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখানকার শিশুদের অধিকার রয়েছে তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার পরিণতি সুখকর হবে না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষকের যে দাবি উঠেছে, তা মেনে নিয়েও সংগীত শিক্ষক বহাল রাখা ন্যায়সংগত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে স্থাপন শিশুর বিকাশের পরিবেশ সংকীর্ণ করবে।’
বিবৃতি দেওয়া ৫১ নাগরিকের মধ্যে আছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান রাইন, মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, কথাসাহিত্যিক জিয়া হাশান, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, গাজী তানজিয়া, এহসান মাহমুদ প্রমুখ।