আশির দশকে লিভারপুলের লকাররুমের দেয়ালে একটি অনুপ্রেরণামূলক কথা লেখা থাকত– ‘ফার্স্ট ইজ ফার্স্ট, অ্যান্ড সেকেন্ড ইজ নোহয়ার’। প্রথমকে সবাই মনে রাখে, দ্বিতীয়ের জায়গা কোথাও নেই...। ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল প্রিমিয়ার লিগের গেল দুই আসরে দ্বিতীয় হয়েছে। এবারও সেদিকে যাচ্ছে তারা। সেখানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম হওয়ার সুযোগ আছে গানারদের সামনে। উনিশ বছর পর ফের ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এই ইংলিশ ক্লাবের। এজন্য আজ রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে তাদের প্যারিস জয় করতে হবে, তাও আবার ২ গোলের ব্যাবধানে। পার্ক দ্য প্রিন্সেসে গিয়ে পিএসজিকে কি হারাতে পারবে আর্সেনাল? যেভাবে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়েছিল তারা বার্নব্যুতে গিয়ে? 

ইএসপিএসকার এমনটাই জানতে চাওয়া চেয়েছিল আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতার কাছে। উত্তরে আর্তেতা, ‘কাঙ্ক্ষিত সেই দিনটির জন্য পুরো দল উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষা করে আছে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রস্তুত হয়ে আছে সবাই। ম্যাচটি যখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার নির্ধারক তখন আপনাকে জীবন দিয়ে লড়তে হবে।’ 

জীবন দেওয়াটাকে আক্ষরিক অর্থে বললেও আর্সেনাল কোচ বোঝাতে চেয়েছেন প্যারিসে আজ রাতে তাঁর দল সর্বস্ব দিতে প্রস্তুত। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ৪ মিনিটের মাথায় উসমান দেম্বেলের গোলে পিএসজির কাছে ১-০ গোলে হারার পর বাকি সময়টাতে বহু চেষ্টা করেও গোল শোধ করতে পারেনি আর্সেনাল।

এমনিতে দুই দলের সাম্প্রতিক রেকর্ড ইঙ্গিত দিচ্ছে আজ রাতে ঘরের উঠোনে নিশ্চিতভাবে ফেভারিট পিএসজি। ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বশেষ তিনটি ম্যাচের দুটিতে জয় পেয়েছিল ক্লাবটি। যেখানে তারা প্রতিপক্ষের জালে ১৪টি গোল করেছিল। এই মুহূর্তে দলের ফরাসি স্ট্রাইকার দেম্বেলে তুখোড় ফর্মে রয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন লিগে এখন পর্যন্ত ৮টি গোল করেছেন। তবে আর্সেনালের যখন আজ জিততেই হবে, সেখানে পিএসজিকে ড্র করলেও হবে। তাই ডিফেন্সে বাড়তি জোর দিতে পারেন পিএসজির স্প্যানিশ কোচ লুই এনরিকে। এই মৌসুমে তারা প্রতিপক্ষের ১৫০টি লাইন ব্রেকিং পাসেস ভেঙে দিয়েছে। ৪-৩-৩ ফরমেশনে রক্ষণে নুনো মেন্ডিস, পাচো, মার্ককুইনহোস আর হাকিমি থাকবেন দেন্নারুমাকে সাপোর্ট দিতে। 

প্যারিসের এই দুর্গ ভেদ করে আর্সেনালের দুটি গোল করা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। তবে আর্তেতার আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। কেননা এবারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারটি অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতেছে তাঁর দল। তাই প্রতিপক্ষের গ্যালারির সামনে স্নায়ুচাপ সামলে নেওয়ার অভ্যাসটা রপ্ত করেছেন বুকাও সাকারা। তবে ইতিহাস তাদের হয়ে কথা বলছে না। এ পর্যন্ত মাত্র দুটি দল সেমিফাইনালে প্রথম লেগ হেরে শেষ পর্যন্ত ফাইনালে যেতে পেরেছিল। অন্যদিকে পিএসজি মাত্র একবার প্রথম লেগ জেতার পরও দ্বিতীয় লেগ হেরে গিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে। পাঁচ বছর পর ফের পিএসজির সামনে ফাইনালে খেলার হাতছানি। অন্যদিকে ডেকালান রাইসের জাদুকরী ফ্রিকিক কিংবা মার্তেনেল্লির শট পিএসজির দেয়ালে ফাটল ধরাতে পারে। এজন্যই বোধহয় ‘গিভ ইউর লাইফ ফর ইট’ বলে দলকে তাতানোর চেষ্টা করছেন আর্তেতা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর স ন ল প এসজ আর স ন ল প এসজ র আর ত ত ফ ইন ল প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমার সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন জার্মানির সংসদ সদস্য

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছেন জার্মানির গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ। চার দিনের এই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

বুধবার ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগের গ্রিন পার্টির সদস্য বরিস মিজাতোভিচ ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জ্বালানি প্রকল্প, বিশেষ করে এই অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বরিস মিজাতোভিচ মিয়ানমারের সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল এই বিষয়গুলোকে আন্তর্জাতিক আলোচনার সূচিতে ফিরিয়ে আনা। এই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ সফর শেষে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ভ্রমণ করেন।

বাংলাদেশ সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা, পরিবেশজনিত উদ্বেগ, কর্মপরিবেশ এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে বরিস মিজাতোভিচ আলোচনা করেন।

বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সফরকালে মিজাতোভিচ শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সরবরাহ শৃঙ্খল সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রম অভিবাসন এবং কর্মপরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন তাঁরা। এ ছাড়া বৈঠকে জাহাজভাঙার চ্যালেঞ্জ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।

এ ছাড়া বরিস মিজাতোভিচ বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে জিআইজেড আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে অবগত হন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মপরিবেশ উন্নত করার সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরের সময় বরিস মিজাতোভিচ কক্সবাজারে যান।

সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করেন এবং এ অঞ্চলে মানবিক চ্যালেঞ্জ এবং চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফর মানবাধিকার, কর্মপরিবেশ এবং মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সংলাপ, বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ