দেশে অব্যাহত সাংবাদিক নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানি বন্ধে ২০ মে দিনব্যাপী প্রতীকী কলম বিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করে আইডি নম্বর প্রদান, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়নসহ ১৪ দফা দাবিতে আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সমাবেশে এ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর এ ঘোষণা দেন। তিনি পেশার দাবি, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় কলম বিরতি পালনের জন্য সারাদেশের সাংবাদিক সহযোদ্ধা বন্ধুদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন না থাকায় প্রতিনিয়ত টোকাইয়ের হাতেও সাংবাদিকরা হামলা মামলার শিকার হচ্ছেন। সাংবাদিকদের তালিকা না থাকায় ভুয়া সাংবাদিক, হলুদ ও অপ-সাংবাদিকতার মত কালো অধ্যায় পেশাটিকে কুরে কুরে খাচ্ছে। সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা না থাকার ফলে রাজনৈতিক নেতা কিংবা টোকাইদের ফোনেও সাংবাদিকদের চাকরি চলে যায়। এভাবে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভখ্যাত গণমাধ্যম চলতে পারে না। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ঘোষিত চৌদ্দ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে সাংবাদিকদের পেটের ক্ষুধা, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা এবং নিশ্চয়তা রক্ষা পাবে বলে বক্তারা মনে করেন।

নেতৃবৃন্দ উদাহরণস্বরূপ বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে রাষ্ট্র সব সময় বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। গণমাধ্যম সপ্তাহের নামে সাংবাদিকরা নয় বছর ধরে একটি সপ্তাহ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চেয়েও পায়নি। তারা বলেন, দেশে শিক্ষা সপ্তাহ, স্বাস্থ্য সপ্তাহ, কৃষি সপ্তাহ, মৎস্য সপ্তাহ, পুলিশ সপ্তাহ, পুষ্টি সপ্তাহসহ অগণিত দিবস রয়েছে। সে সকল সপ্তাহ এবং দিবস আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত হয়। অথচ সাংবাদিকদের একটি মাত্র দিবস ৩ মে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত হলেও বাংলাদেশে হয় না, এটি গণমাধ্যমের জন্য অমর্যাদার দুঃখজনক।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, সহ- সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি মনজুর হোসেন ঈসা, সহ-সম্পাদক নুরুল হুদা বাবু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাতেন বাচ্চু, জি কে রাসেল, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ মাহমুদ, আইটি উপ-কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম রোহিত, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি জাকির হোসেন, ঢাকা জেলার নেত্রী মরিয়াম আক্তার মারিয়া, বরিশাল সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি ওয়াসেফ উদ্দিন আহমেদ, বরগুনা জেলা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, সাধারণ সম্পাদক তাপস মাহমুদ, সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাজা, সাকিব জামাল, যশোরের সেলিম রানা, চাঁদপুরের শাহারুখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক মো.

রুহুল আমিন, ছাতক শাখার সভাপতি মোশাহিদ আলী, পত্নীতলার সাংবাদিক মাহমুদুন্নবী, মানিকগঞ্জের মাসুদ চৌধুরী প্রমুখ।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষিত শিশুর স্বজনের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা চিকিৎসক বরখাস্ত

চিকিৎসাধীন ধর্ষণের শিকার এক শিশুর স্বজনের সঙ্গে অশালীন আচরণের ভিডিও ভাইরালের পর পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবুল কাশেমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পার-৩ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বরখাস্তের তথ্য জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালী হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, ৭ দালালের কারাদণ্ড

জলবায়ু পরিবর্তনে বদলাচ্ছে রোগের চিত্র, বাড়ছে বিরল সংক্রমণ 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘‘তার আচরণ ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য করে তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি প্রচলিত নিয়মে খোরপোশ ভাতা পাবেন।’’

পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “বরখাস্তের আদেশ আমরা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত তার পরিবর্তে স্থায়ীভাবে কাউকে দেওয়া হয়নি। যেহেতু তিনি আবাসিক মেডিকেল অফিসার ছিলেন, তাই গত শুক্রবার থেকে তাকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. রাহিমুল।”

গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর স্বজনদের সঙ্গে ডা. আবুল কাশেমের অশালীন আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়ভাবে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকেও তাকে শোকজ করা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ কপি শেয়ার করে লিখেছেন, “পঞ্চগড় জেলার একমাত্র সদর হাসপাতালকে আমরা জনগণের আস্থার জায়গা হিসেবে দেখতে চাই, যেখানে সেবা হবে মুখ্য। আমরা ডাক্তারদের পাশে থাকতে চাই, তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সেগুলো সমাধান করতে চাই। রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করতে চাই। কিন্তু কোনো পদবী বা পেশাকে অপব্যবহার করে কেউ যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, সাধারণ মানুষের ন্যূনতম আত্মসম্মানকে মূল্য না দেয়, তাহলে আমরা নির্দ্বিধায় সাধারণ মানুষের কণ্ঠ হয়ে কাজ করব। অন্যায় করে আর কেউ পার পেয়ে যাবে না ইনশাআল্লাহ।”

ঢাকা/নাঈম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ