দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল এবার ততটা উষ্ণ ছিল না। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহেও তাপমাত্রা মোটামুটি সহনীয় ছিল। কিন্তু গতকাল বুধবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। আজ দেশের বড় অংশজুড়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আজ দেশের যত অংশজুড়ে তাপের বিস্তার, তা চলতি বছরে দেখা যায়নি। আজ রাজধানীতেও প্রচণ্ড গরম পড়েছে। রাজধানীর আজকের তাপমাত্রা চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস, এমন তাপপ্রবাহ আরও অন্তত তিন দিন চলতে পারে যদি বায়ুপ্রবাহের বর্তমান গতিপ্রকৃতি একই রকম থাকে।

তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৪২-এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।

চলতি বছর দেশের তীব্র তাপপ্রবাহের রেকর্ড কম। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহ দেখা দেয়। তবে এপ্রিল মাসে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হয়েছে। তাতে কমেছে তাপ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, এ বছরের এপ্রিল মাসে গড় তাপমাত্রা গত বছরের (২০২৪) চেয়ে অন্তত ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল।

আজ ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ বিভাগের প্রায় সর্বত্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগেরও অনেক স্থানে তাপপ্রবাহ বইছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.

বজলুর রশীদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, এপ্রিল মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ ছিল। কিন্তু আজ যেভাবে বিভিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়েছে, তা আগে হয়নি। তাপপ্রবাহ আগে এত বিস্তৃত ছিল না।

আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আজ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছরে এটি রাজধানীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ২৮ মার্চ রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গরমের তীব্রতা বেড়েছে। হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছে প্রাণিকুলের। ঢাকা চিড়িয়াখানায় গরমে স্বস্তি পেতে বানরছানাগুলো পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি করতে থাকে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স লস য় স রব হ ব প রব হ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমার সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন জার্মানির সংসদ সদস্য

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছেন জার্মানির গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ। চার দিনের এই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

বুধবার ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগের গ্রিন পার্টির সদস্য বরিস মিজাতোভিচ ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জ্বালানি প্রকল্প, বিশেষ করে এই অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বরিস মিজাতোভিচ মিয়ানমারের সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল এই বিষয়গুলোকে আন্তর্জাতিক আলোচনার সূচিতে ফিরিয়ে আনা। এই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ সফর শেষে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ভ্রমণ করেন।

বাংলাদেশ সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা, পরিবেশজনিত উদ্বেগ, কর্মপরিবেশ এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে বরিস মিজাতোভিচ আলোচনা করেন।

বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সফরকালে মিজাতোভিচ শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সরবরাহ শৃঙ্খল সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রম অভিবাসন এবং কর্মপরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন তাঁরা। এ ছাড়া বৈঠকে জাহাজভাঙার চ্যালেঞ্জ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।

এ ছাড়া বরিস মিজাতোভিচ বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে জিআইজেড আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে অবগত হন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মপরিবেশ উন্নত করার সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরের সময় বরিস মিজাতোভিচ কক্সবাজারে যান।

সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করেন এবং এ অঞ্চলে মানবিক চ্যালেঞ্জ এবং চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফর মানবাধিকার, কর্মপরিবেশ এবং মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সংলাপ, বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ