গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা সেলিম মাহমুদ ও রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তার ও অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। 

গ্রেপ্তার আল কাদেরী জয়, মিরাজ উদ্দিন, রোকন উদ্দিন, মিম আক্তার, শেফালি, সাদ্দামসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার শ্রমিক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তিরও দাবি জানান।

শুক্রবার (৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন এবং সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “টিএনজেড’র শ্রমিকরা ঈদের আগে শ্রম ভবনের সামনে টানা অবস্থান করলেও সরকার শ্রমিকদের প্রাপ্য পাওনা আদায় করে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ঈদের একদিন আগে সামান্য কিছু টাকা হাতে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরেছে শ্রমিকরা। সরকার শ্রমিকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঈদের পরে শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

‘সেই অনুসারে ৭ মে শ্রমিকদের প্রাপ্য বকেয়াসমূহ পরিশোধ করার কথা ছিল। শ্রমিকরা বকেয়া বেতন পাওয়ার আশায় দূর-দূরান্ত থেকে কারখানার গেটে এসে অবস্থান করে। সারাদিন অবস্থান করেও বকেয়া না পাওয়ায় শ্রমিকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ করে, বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। কারখানা মালিক কর্তৃপক্ষ বা সরকারের পক্ষ থেকে বিকল্প কোনো তারিখ ঘোষণা না করায় স্বাভাবিকভাবেই শ্রমিকরা পরের দিন সকালেও কারখানার সামনে উপস্থিত হয়। 

‘সরকার বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী দায়িত্বহীন মালিক বা তার প্রতিনিধিদের শ্রমিকদের সামনে উপস্থিত করার উদ্যোগ না নিয়ে, মালিকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে দ্রুততম সময়ে শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ গ্রহণের পরিবর্তে ক্ষুধার্ত শ্রমিকদের উপর নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করে অসংখ্য শ্রমিক এবং শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানাতে যাওয়া শ্রমিক নেতাদের আহত করে যা শ্রমিক অধিকার প্রশ্নে সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তার সাথে অসংগতিপূর্ণ।”

সরকারের দ্বীচারিতাপূর্ণ আচরণের নিন্দা জানিয়ে তারা বলেন, “শ্রমিককে কাজ করিয়ে বেতন পরিশোধে ব্যর্থ মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ক্ষুধার্ত শ্রমিককে লাঠিপিটা করা, শ্রমিকের প্রতিবাদের কণ্ঠকে রোধ করতে কারখানা মালিক বা ধনিদের সাথে জোট বেঁধে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মতো কালো আইনে মামলা দিয়ে হয়রানি করা নিশ্চয় আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ।”

নেতৃবৃন্দ, টিএনজেড’র শ্রমিকদের ওপর হামলার নির্দেশ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে মালিক-কর্তৃপক্ষের নতুন ঘোষিত তারিখ ২০মে দিনে শ্রমিকদের প্রাপ্য সকল পাওনা পরিশোধ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। 

গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা সেলিম মাহমুদ ও রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তার ও অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা প্রত্যাহার, আল কাদেরী জয়, মিরাজ উদ্দিন, রোকন উদ্দিন, মিম আক্তার, শেফালি, সাদ্দামসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার শ্রমিক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জোর দাবি জানান। 

তারা বলেন, “বাংলাদেশে শিল্প সম্পর্কের ভারসাম্যপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিত করতে হলে গাজীপুরের টিএনজেড বা নারায়ণগঞ্জের রবিনটেক্সের মালিকদের মতো শ্রমিক নিপীড়কদের যথাসময়ে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থসরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও জাবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।”

ঢাকা/এম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ষ ক ষমত পর শ ধ সরক র গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

স্থগিত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ভারতের বাংলাদেশ সফর ও এশিয়া কাপ

আগস্টে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের। যে সফরে তিন ম্যাচ ওয়ানডে ও তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতির কারণে সফরটি এখন বড়সড় অনিশ্চয়তার মুখে। শুধু তাই নয়, সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত এশিয়া কাপ-২০২৫ নিয়েও দেখা দিয়েছে একই ধরনের শঙ্কা।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিসিসিআই বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ এবং আসন্ন এশিয়া কাপ— দুটোই আপাতত তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলতে চাইছে। কারণ, তাদের মূল লক্ষ্য এখন স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলো পুনরায় আয়োজন করা। এই লক্ষ্য পূরণে সময় বের করতে গেলে, বাংলাদেশ সফর এবং এশিয়া কাপই বিসর্জনের তালিকায় আগে আসবে বলে জানা গেছে।

ধর্মশালায় সম্প্রতি পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ চলাকালীন আকস্মিকভাবে খেলা থামিয়ে দেওয়া, ফ্লাডলাইট নিভিয়ে দেওয়া এবং নিরাপত্তা সতর্কতায় ম্যাচ বন্ধ ঘোষণা—এসব ঘটনাই বোর্ডকে ভাবিয়ে তুলেছে। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, আইপিএলের বর্তমান মৌসুমের বাকি ১৬টি ম্যাচ কবে এবং কোথায় হবে, তা নিয়েও কোনো নিশ্চয়তা নেই।

আরো পড়ুন:

দিল্লি স্টেডিয়াম উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিতে তোলপাড়

আমিরাতে আইপিএল আয়োজনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান, পিএসএল পেল অগ্রাধিকার

জুনের শুরুর দিকেই ইংল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা ভারতের। তার আগে আইপিএলের স্থগিত অংশ শেষ করতে হলে, বিসিসিআইকে কারও কারও বিপক্ষের সফর ও সিরিজ বলি দিতেই হবে। এক্ষেত্রে তা হতে পারে বাংলাদেশ সফর। এমনকি আইপিএল সম্পন্ন করেও সফর আয়োজনের চেষ্টা হলেও, বিসিসিআই চাইছে নিজেদের খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে—ধর্মশালার ঘটনার পর থেকে তাদের অবস্থান আরও কঠোর হয়েছে।

সার্বিক পরিস্থিতি বলছে, আপাতত বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের খেলা দেখা ও এশিয়া কাপে রোহিত-কোহলিদের অংশগ্রহণ ভালো রকমের অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ